নিজস্ব প্রতিবেদক: ‘টেলিভিশন শুধু বিনোদন বা সংবাদের জন্যই নয়, টেলিভিশন জীবন, সমাজ ও দেশ গঠনে কাজ করবে, সেটিই হোক বিশ্ব টেলিভিশন দিবসে আমাদের লক্ষ্য’ বলেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
রোববার (২০ নভেম্বর) বিশ্ব টেলিভিশন দিবস উপলক্ষে এদিন দুপুরে রাজধানীর বনানীতে একটি অভিজাত হোটেলে এসোসিয়েশন অভ টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্স-এটকো আয়োজিত ‘বাংলাদেশে টেলিভিশন চ্যানেলের বিকাশ’ গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন।
এটকো’র সভাপতি অঞ্জন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সহসভাপতি ডিবিসি২৪ চ্যানেলের চেয়ারম্যান ইকবাল সোবহান চৌধুরীর সঞ্চালনায় বৈঠকে প্রধান তথ্য কমিশনার মরতুজা আহমদ, প্রেস কাউন্সিল চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. নিজামুল হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যা. ড. মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান, মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান নাছিমা বেগম, বাসস চেয়ারম্যান অধ্যা. আআমস আরেফিন সিদ্দিক, বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক সোহরাব হোসেন, বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ, এটিএন বাংলার চেয়ারম্যান ড. মাহফুজুর রহমান, আরটিভি’র ভাইস চেয়ারম্যান ও এফবিসিসিআই প্রেসিডেন্ট মো. জসিম উদ্দিন, দেশ টিভি'র ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফ হাসান, একুশে টিভি’র প্রধান নির্বাহী পীযুষ বন্দোপাধ্যায় ও মাছরাঙা টিভি’র বার্তাপ্রধান রেজওয়ানুল হক রাজা বক্তব্য রাখেন। এটকোর পরিচালকবৃন্দ ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মঞ্জুরুল আহসান বুলবুলসহ জ্যেষ্ঠ টিভি সাংবাদিকরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
বিশ্ব টেলিভিশন দিবসে বৈঠক আয়োজনের জন্য এটকোকে ধন্যবাদ জানিয়ে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে আগে একটি টেলিভিশন ছিলো, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে বেসরকারি টেলিভিশনের যাত্রা শুরু করেছিলেন। আজকে একে একে ৩৪ টেলিভিশন সম্প্রচারে আছে, আরো কয়েকটি প্রস্তুতি নিচ্ছে, ৪৫টির লাইসেন্স দেয়া আছে। সাংবাদিক, কলাকুশলী ছাড়াও টেলিভিশন শিল্পে সবমিলিয়ে প্রায় লাখখানেক মানুষ যুক্ত। আরো অনেকেই কন্টেন্ট ও বিজ্ঞাপন বানায় ও বিক্রি করে। প্রায় পাঁচ কোটি বাড়িতে টেলিভিশন আছে।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী যাদেরকে উপযুক্ত মনে করেছেন তাদেরকে দিয়েছেন, যাতে দেশ, সমাজ, সাংবাদিকরা উপকৃত হবে এবং একইসাথে দেশ ও সমাজ গঠনে অবদান রাখতে সক্ষম হবে। তাই এদিবসে আমার বিনীত অনুরোধ, আমরা যেন দেশাত্মবোধ, মমত্ববোধ, মূলবোধ এবং মেধায় সমৃদ্ধ একটি নতুন প্রজন্ম গঠনে এই টেলিভিশন শিল্পকে কাজে লাগাতে পারি, সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করবো।’
টেলিভিশন শিল্পের উন্নয়নে সরকারের দৃঢ় পদক্ষেপগুলো নিয়ে মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘অনেক সমস্যা সমাধান হয়েছে এবং অনেক সমস্যা আছে। বাংলাদেশে সম্প্রচারের জন্য বিদেশি চ্যানেলকেই আইন অনুযায়ী ক্লিনফিড পাঠাতে হবে। ক্যাবল নেটওয়ার্কে টিভির ক্রম ঠিক ছিলো না, এখন হয়েছে। ক্যাবল অপারেটররা নিজেরাই বিজ্ঞাপন দেখাতো, সেগুলো বন্ধ হয়েছে। বিদেশি শিল্পীদের দিয়ে বিজ্ঞাপন বানালে শিল্পীপ্রতি দুই লাখ টাকা সরকারের কোষাগারে জমা দিতে হবে। এতে দেশি শিল্পীদের উপকার হবে। অন্যান্য দেশে কিভাবে টেলিভিশনগুলোর রেটিং করা হয় সেগুলো পরীক্ষা করে আমরা একটা সিদ্ধান্ত এসেছি এবং খুব সহসা আমরা এতে শৃঙ্খলা আনবো। বিভিন্ন টেলিফোন কোম্পানি ইউটিউব চ্যানেল চালাচ্ছে। তাদেরকে সেই লাইসেন্স দেয়া হয়নি। লাইসেন্সের শর্তভঙ্গ করে কেউ কিছু করবে সেটি হতে পারে না।’
ধাপে ধাপে ক্যাবল অপারেটিং সিস্টেম ডিজিটাল করা প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, এজন্য সবার সহযোগিতা ও প্রচার প্রয়োজন, কারণ অযাচিতভাবে বেশি টাকায় সেট টপ বক্স বিক্রি করা না হয় সেটা আমরা মনিটর করবো।
অপর বক্তাবৃন্দ দেশে টেলিভিশনকে বেসরকারি খাতে উন্মুক্ত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান এবং টেলিভিশনকে শিল্প হিসেবে ঘোষণা দেবার জন্য সরকারের প্রতি আবেদন রাখেন তারা।
সান নিউজ/এনএএম