ধর্মকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে বিভাজন সৃষ্টি করছে জামায়াতে ইসলামী এমন মন্তব্য করে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পক্ষ থেকে বলা হয় ঘৃণা ও সহিংসতার রাজনীতি উসকে দিচ্ছে তারা।
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) এনসিপির এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ৭ ডিসেম্বর এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেনকে উদ্দেশ করে জামায়াতের দেওয়া বক্তব্য ‘অসত্য, মনগড়া ও বিভ্রান্তিকর’। এনসিপি তা প্রত্যাখ্যান করছে এবং এর বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও কঠোর প্রতিবাদ জানাচ্ছে। এনসিপি মনে করে, জামায়াতের এই বিবৃতি বাস্তবতাবিবর্জিত, রাজনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত এবং জনমত বিভ্রান্ত করার স্পষ্ট অপচেষ্টা।
রাজধানীর বাংলামোটরে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে গত শনিবার এক অনুষ্ঠানে এনসিপি নেতা আখতার হোসেন বলেন, “নির্বাচনের এখনো তফসিল ঘোষণা করা হয়নি। এর মধ্যে বিএনপি–জামায়াতের মতো দলগুলো অস্ত্রের মহড়ায় কে কার থেকে এগিয়ে যাবে, সেই প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়েছে।”
আখতার হোসেনের এই মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করে গতকাল রোববার জামায়াত একটি বিবৃতি দেয়। বিবৃতিতে এই বক্তব্যকে অসত্য, মনগড়া ও উদ্দেশ্যমূলক বলে আখ্যা দেওয়া হয়। জামায়াতের পক্ষ থেকে বলা হয়, “আখতার হোসেনের মতো একজন দায়িত্বশীল রাজনৈতিক নেতার মুখে এমন বিভ্রান্তিকর বক্তব্য অত্যন্ত দুঃখজনক, অযৌক্তিক ও সস্তা রাজনীতির বহিঃপ্রকাশ। আমরা আশা করি, তিনি তাঁর ভিত্তিহীন বক্তব্য প্রত্যাহার করবেন এবং দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেবেন। অসত্য বক্তব্য দিয়ে দেশবাসীকে বিভ্রান্ত করা যাবে না।”
আজ সোমবার জামায়াতের বিবৃতি প্রত্যাখ্যান করে এনসিপি জানায়, জামায়াতের প্রতিক্রিয়া বাস্তবতাবিবর্জিত, রাজনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত এবং জনমত বিভ্রান্ত করার স্পষ্ট অপচেষ্টা।
এনসিপির দাবি, দলের সদস্য সচিব আখতার হোসেন সাম্প্রতিক সহিংস ঘটনার প্রমাণনির্ভর যে মন্তব্য করেন, তা সম্পূর্ণ তথ্যসম্মত ও দায়িত্বশীল। কারণ ২৭ নভেম্বর পাবনার ঈশ্বরদীতে নির্বাচনি প্রচারণাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে গুলি চালানো তুষার মণ্ডল যে জামায়াতে ইসলামীর কর্মী, তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশ আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করেছে এবং অস্ত্র-গুলিসহ তাকে গ্রেফতার করেছে। এমন স্পষ্ট প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও বাস্তবতা অস্বীকার করা সত্য গোপন ও দায় এড়ানোর নিন্দনীয় অপচেষ্টা ছাড়া অন্য কিছু নয়।
এনসিপি বলেছে, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানপরবর্তী নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতিকে গ্রহণ করার পরিবর্তে জামায়াত পুরোনো সহিংস ও আধিপত্যবাদী রাজনীতির পথে ‘নতুন খেলোয়াড়’ হিসেবে আবির্ভূত হতে চাইছে। এটি দেশের জন্য অশুভ সংকেত।
আগামী জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার স্বার্থে সব রাজনৈতিক দলের দায়িত্বশীল আচরণ অপরিহার্য। জামায়াতকে সত্য, শান্তি ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের পক্ষে সুস্পষ্ট অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে এনসিপি।
সাননিউজ/আরপি