আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে প্রথমবারের মতো সাক্ষাৎ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
আরও পড়ুন : মক্কায় হোটেলে আগুন, নিহত ৮
শনিবার (২০ মে) জাপানের হিরোশায় জি৭ সম্মেলনের ফাঁকে তারা দুজন সাক্ষাত করেন। এই দুই নেতার মাঝে এর আগে কেবল ভার্চ্যুয়াল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
নরেন্দ্র মোদি তার টুইটার অ্যাকাউন্টে জেলেনস্কির সঙ্গে তার দুটি ছবি পোস্ট করেছেন। তাতে দুই নেতাকে করমর্দন ও আলাপচারিতা করতে দেখা গেছে। ওই বৈঠকে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালও উপস্থিত ছিলেন।
এতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইউক্রেনের যুদ্ধ সমগ্র বিশ্বের জন্য বড় ধরনের সমস্যা তৈরি করেছে। এই যুদ্ধ বিভিন্নভাবে বিশ্বকে প্রভাবিত করেছে। তবে আমি এই যুদ্ধকে রাজনৈতিক বা অর্থনৈতিক সংকট বলে মনে করি না।’
জেলেনস্কিকে উদ্দেশ্য করে নরেন্দ্র মোদি বলেন, আমার মতে এটি মানবতারও বিষয় এবং মানবিক মূল্যবোধের সংকট। যুদ্ধের কষ্ট আমাদের সবার চেয়ে আপনি ভালো জানেন। গত বছর যখন আমাদের সন্তানরা ইউক্রেন থেকে ফিরে আসে এবং সেখানকার পরিস্থিতি সম্পর্কে জানায়, তখন আমি আপনার নাগরিকদের দুর্দশা ভালোভাবে অনুধাবন করেছি।
আরও পড়ুন : ইউক্রেনকে যুদ্ধবিমান দিতে সম্মতি
ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি আপনাকে আশ্বস্ত করছি, ভারত এবং আমি ব্যক্তিগতভাবে এই সংকটের সমাধানের জন্য সামর্থ্য অনুযায়ী যা কিছু করা উচিত তা অবশ্যই করব।
এর আগে জি-৭ সম্মেলনে যোগ দিতে শনিবার সকালে জাপানের উদ্দেশ্যে রওনা দেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। জাপান সফর শেষে তিনি পাপুয়া নিউ গিনি এবং অস্ট্রেলিয়ায় সফর করবেন।
চলতি বছর জি-৭ সম্মেলনের নেতৃত্ব দিচ্ছে জাপান। এই সম্মেলনে যোগ দিতে টোকিংওর আমন্ত্রণে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা বর্তমানে জাপানে অবস্থান করছেন। গত মাসে ইউক্রেনের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী এমিন দাপারোভা ভারত সফর করেন।
দেশটিতে সংঘাত শুরু হওয়ার পর প্রথমবারের মতো ইউক্রেনের কোনো শীর্ষ কর্মকর্তার এটাই প্রথমবারের মতো ভারত সফর ছিল। সে সময় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির একটি চিঠি মোদীর কাছে পৌঁছে দেন দাপারোভা।
আরও পড়ুন : পাকিস্তানে বোমা বিস্ফোরণ, নিহত ১
জেলেনস্কির সঙ্গে সাক্ষাতে প্রধানমন্ত্রী মোদী জানান, ইউক্রেন এবং রাশিয়ার মধ্যকার সংঘাত একমাত্র আলোচনা এবং কূটনৈতিক উপায়েই সমাধান করা সম্ভব। এক্ষেত্রে শান্তি প্রতিষ্ঠায় যে কোনো প্রচেষ্টার জন্য প্রস্তুত রয়েছে ভারত।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, জাপান, ফ্রান্স, ইতালি ও জার্মানিকে নিয়ে গঠিত জি-৭ জোটের অন্যান্য নেতাদের সঙ্গেও বৈঠক করবেন জেলেনস্কি। ‘দখলদার’ রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে সম্ভাব্য পাল্টা আক্রমণ চালানোর জন্য এসব দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের কাছে আরও অস্ত্র সহায়তা চাইবেন তিনি।
আরও পড়ুন : ৮ম বার বাবা হচ্ছেন বরিস জনসন
এদিকে ইউক্রেনকে অত্যাধুনিক এফ-১৬ যুদ্ধবিমান দেওয়ার ক্ষেত্রে পশ্চিমা মিত্রদের অনুমোদনের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা পরামর্শক জ্যাক সুলিভান বলেছেন, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন শুক্রবার (১৯ মে) জি-৭ নেতাদের বিষয়টি জানিয়েছেন। সুলিভান বলেন, এ যুদ্ধবিমান পরিচালনার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র কিয়েভের পাইলটদের প্রশিক্ষণ দেবে। এ পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি।
এর আগে জি-৭ জোটের দেশগুলো রাশিয়ার বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। রাশিয়ার ‘ওয়ার মেশিন’, লাভজনক হীরা বাণিজ্য ও ইউক্রেনে পরিচালিত সামরিক অভিযানের সঙ্গে যুক্ত বেশ কয়েকটি সংস্থা এ সংস্থার নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে। শুক্রবার (১৯ মে) জাপানে জোটের সম্মেলনে এসব নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করা হয়।
সান নিউজ/জেএইচ