সরকারি সাত কলেজ নিয়ে গঠিত ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি বাস্তবায়ন ও প্রশাসনিক কাঠামো পরিবর্তন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ইডেন মহিলা কলেজের সাবেক ছাত্রীরা।
শনিবার (১৮ অক্টোবর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন তারা।
এ সময় তারা বলেন, এটি বাস্তবায়ন হলে নারীদের উচ্চশিক্ষা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে, সংবিধানে থাকা সমান সুযোগের নিশ্চয়তা লঙ্ঘিত হবে এবং শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ বাড়বে।
তাছাড়া বিসিএসসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি পেশায় ইডেন মহিলা কলেজ ও বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষার্থীরা সফলতার সঙ্গে কর্মরত রয়েছেন। উল্লেখযোগ্য যে, ইডেন মহিলা কলেজের ৫১ জন প্রাক্তন শিক্ষার্থী বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে বর্তমানে নিজ কলেজেই কর্মরত আছেন, আর সারাদেশে এ সংখ্যা আরও বেশি।
আলাদা বিশ্ববিদ্যালয় হলে স্বাভাবিকভাবেই তাদের পদ সেখানে সংকুচিত হয়ে যাবে। ইতোপূর্বে জগন্নাথ কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের ফলে সেখানকার ৪০০-এর বেশি পদ বিলুপ্ত হয়েছিল। উল্লেখযোগ্য যে, গত ১০ বছরে এই ক্যাডারে কোনো নতুন পদ সৃষ্টি হয়নি। বর্তমানে নতুন বিশ্ববিদ্যালয় হলে সাত কলেজের ১,৪০০-এর বেশি পদ বিলুপ্ত হবে তা ভবিষ্যৎ বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার পদপ্রার্থীদের বিশাল সুযোগ থেকে বঞ্চিত করবে।
সংবাদ সম্মেলনে সাত কলেজকে কলেজিয়েট বা অধিভুক্তমূলক কাঠামোর আওতায় রাখা এবং প্রস্তাবিত সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটিকে পৃথক ক্যাম্পাসে স্থাপন করে সাত কলেজসহ অন্য আরও শতবর্ষী কলেজকে অন্তর্ভুক্ত করাসহ সাতটি সুপারিশ করেন ইডেন কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা।
সুপারিশসমূহ :
১। জাতীয় ইতিহাস ও সামাজিক বাস্তবতায় ইডেন মহিলা কলেজকে বিলুপ্ত বা একীভূত করার উদ্যোগ অযৌক্তিক ও অবিবেচনাপ্রসূত হবে।
২। কলেজগুলোর বিদ্যমান অবকাঠামো, সক্ষমতা ও ভৌগোলিক অবস্থান বিবেচনা করে সাত কলেজকে কলেজিয়েট বা অধিভুক্তমূলক কাঠামোর আওতায় রাখা।
৩। শিক্ষকদের পদসংখ্যা বৃদ্ধি, গবেষণা বাজেট, আধুনিক ল্যাব, সমৃদ্ধ লাইব্রেরি, আবাসন ও বৃত্তি সুবিধা সম্প্রসারণের মাধ্যমে মানসম্মত উচ্চশিক্ষা নিশ্চিত করা।
৪। শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাত যৌক্তিকীকরণ করা। পাশাপাশি পাঠদানকৃত বিষয়সমূহ ও সিলেবাস পুনর্বিবেচনা করে যুগোপযোগী করে তোলা।
৫। শিক্ষার্থী ও শিক্ষকের স্বার্থ সুরক্ষা করে শিক্ষা পরিবেশের স্থিতিশীলতা বজায় রাখা।
৬। সকল অংশীজনের জানার অধিকার ও তথ্যের স্বচ্ছতা বজায় রেখে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা।
৭। প্রস্তাবিত ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটিকে অন্য কোনো পৃথক ক্যাম্পাসে স্থাপন করে ঢাকার সাতটি কলেজসহ বিভাগীয় অন্য আরও শতবর্ষী কলেজকে অন্তর্ভুক্ত করা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, ইডেন মহিলা কলেজের সাবেক ভিপি হেলেন জেরিন খান, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক নিশরাত বেগম, সাবেক ছাত্রী খন্দকার ফারহানা ইয়াসমীন, অধ্যাপক সৈয়দা সুলতানা সালমা, রোকন সিদ্দিকী, ইসরাত জাহান পান্না, ফাহিমা আক্তার মুকুল, রাজিয়া সুলতানা এবং উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক নাহিদ মনসুর।
সাননিউজ/আরপি