নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রতারণার মাধ্যমে গ্রাহকের টাকা আত্মসাতের মামলায় গ্রেফতার ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি ডটকম লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. রাসেল ও তাঁর স্ত্রী শামীমা নাসরিনকে আদালতে হাজির করেছে পুলিশ। শামীমা নাসরিন ইভ্যালির চেয়ারম্যান।
শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টার দিকে রাসেল ও শামীমাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। গুলশান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আমিনুল ইসলাম এই তথ্য জানান।
আমিনুল ইসলাম বলেন, প্রতারণার মাধ্যমে গ্রাহকের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে হওয়া মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রাসেল ও শামীমাকে ১০ দিন করে রিমান্ডে নেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন করেছে পুলিশ।
আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, রাজধানীর গুলশান থানার এই মামলায় বিকেল ৩টার দিকে শুনানি হবে।
রাসেল ও তাঁর স্ত্রী শামীমাকে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের স্যার সৈয়দ রোডের বাসা থেকে গ্রেফতার করে র্যাব। র্যাব সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলন শেষে আজ রাসেল ও শামীমাকে গুলশান থানায় হস্তান্তর করা হয়। এর আগে গত বুধবার গভীর রাতে আরিফ বাকের নামের এক গ্রাহক প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে রাসেল ও শামীমার বিরুদ্ধে গুলশান থানায় মামলা করেন।
গ্রেফতারের বিষয়ে আজ র্যাব সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানায়, ইভ্যালির কারসাজির মূল হোতা রাসেল। স্ত্রী শামীমা তাঁর অন্যতম সহযোগী। গ্রেফতারের পর কোম্পানির দায় ও দেনা সম্পর্কে তাঁদের প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
র্যাব জানায়, একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ইভ্যালির মোট দেনা ৪০৩ কোটি টাকা। ইভ্যালির চলতি সম্পদ ৬৫ কোটি টাকা। বিভিন্ন পণ্য বাবদ গ্রাহকদের কাছ থেকে তারা অগ্রিম নিয়েছে ২১৪ কোটি টাকা। বিভিন্ন গ্রাহক ও কোম্পানির কাছে ইভ্যালির বকেয়া প্রায় ১৯০ কোটি টাকা।
র্যাব জানায় রাসেল ও শামীমাকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, ইভ্যালির আরও দায় দেনা রয়েছে। ইভ্যালির মোট দেনার পরিমাণ ১ হাজার কোটি টাকার বেশি বলে তাঁরা জানিয়েছেন। কোম্পানিটি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই লোকসানি কোম্পানি। তারা কোনো ব্যবসায়িক লাভ করতে পারেনি।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) ইভ্যালির সিইও মো. রাসেল ও তার স্ত্রী শামীমা নাসরিনের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে গুলশান থানায় মামলা হয়। পরে বিকেল সাড়ে ৪টায় মোহাম্মদপুরের বাসা থেকে তাদের গ্রেফতার করে র্যাব সদরদফতরে নেওয়া হয়। ওই মামলায় রাসেল দম্পতিকে গ্রেফতার দেখায় র্যাব।
আরিফ বাকের নামে ইভ্যালির এক গ্রাহক মামলাটি দায়ের করেন। মামলার নম্বর- ১৯।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আরিফ বাকের গত ২৯ মে ও জুন মাসের বিভিন্ন সময়ে ইভ্যালিতে মোটরসাইকেলসহ বেশ কয়েকটি পণ্য অর্ডার করেন। এগুলো ৭ থেকে ৪৫ কার্যদিবসের মধ্যে দেওয়ার কথা থাকলেও তারা (ইভ্যালি) দেয়নি। ইভ্যালির কাস্টমার কেয়ারে ফোন দিয়ে সমাধান পাওয়া যায়নি। অফিসে গিয়ে তাদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বললে খারাপ ব্যবহার করেছে। প্রতিষ্ঠানটির সিইও রাসেলের সঙ্গেও দেখা করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন বাকের। তার সঙ্গে ইভ্যালি চরম দুর্ব্যবহার করেছে।
সান নিউজ/এফএআর