টেকনাফের ঐতিহ্যবাহী স্কুলের জমি দখল। (ছবি সংগৃহিত)
সারাদেশ
প্রধান শিক্ষকের ভূমিকা রহস্যজনক

টেকনাফের ঐতিহ্যবাহী স্কুলের জমি দখল

টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি : টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দীর্ঘদিন দখলে থাকা জমি এক ব্যক্তিকে অবৈধভাবে দখল বুঝিয়ে দিয়ে ছেড়ে দিয়েছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।

আরও পড়ুন : উলিপুরে করাত কলে শ্রমিকের হাত ও জিহ্বা বি‌চ্ছিন্ন!

ধারণা করা হচ্ছে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কলিম উল্লাহ স্থানীয় বাজার পাড়ার বাসিন্দা মনির উল্লাহকে প্রায় সাড়ে সাত কড়া (তিন শতক) জমি গোপন সুবিধা নিয়ে ছেড়ে দিয়েছেন। এ ঘটনায় এলাকার সচেতন মহলে নিন্দার ঝড় উঠেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শাহপরীর দ্বীপ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উপজেলার একটি স্বনামধন্য ও ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বিদ্যালয়টির জমি দাতা ছিলেন স্থানীয় শাহপরীর দ্বীপ উত্তর পাড়ার বাসিন্দা আব্দুর রশিদ। তিনি বিদ্যালয়ের অনুকুলে শাহপরীর দ্বীপ মৌজার বিএস ৪ নং সীটের ৬৮০৩ দাগের জমিটি দান করেন। তার ঠিক দক্ষিণে শাহপরীর দ্বীপ হাইস্কুল, পশ্চিমে পুকুর এবং উত্তরে প্রধান সড়ক।

স্থানীয় বাসিন্দারাও স্কুলটির জন্মলগ্ন থেকে জেনে আসছেন স্কুলের জমিটুকু আব্দুর রশিদের দানকৃত এবং ওই জমির পূর্ব পাশে ৬৭৪১ দাগে পুকুরের পাড়, যেটিও আব্দুর রশিদের খতিয়ান ভুক্ত জমি।

আরও পড়ুন : মুন্সীগঞ্জে বেস্ট মেডিকেল সার্ভিস সিলগালা

ঘটনা সূত্রে, গত ২২ নভেম্বর ২০২২ তারিখে স্থানীয় শাহপরীর দ্বীপ বাজার পাড়ার বাসিন্দা মৃত এজাহার মিয়ার ছেলে মনির উল্লাহ স্কুলের পশ্চিম পাশে তাদের পৈতৃক সম্পত্তি আছে দাবি করে স্কুলের দীর্ঘদিনের ঘেরাবেড়া খুলে হটাৎ সেখানে পাকা বসত বাড়ি নির্মাণ কাজ শুরু করে দেয়।

তবে এক্ষেত্রে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কলিম উল্লাহ রহস্যজনক ভূমিকা পালন করেন এবং দখলকারীকে কোন ধরনের বাঁধা না দিয়ে তাকে দখলে সহযোগিতা দেন। এতে বিদ্যালয়ের অভিভাবক ও অপর শিক্ষকরাও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

শাহপরীর দ্বীপ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, দীর্ঘদিন স্কুলের ঘেরার ভেতরে থাকা জমি স্থানীয় মনির উল্লাহ নামে এক ব্যক্তি নিজের দাবি করে ঘর নির্মাণ কাজ শুরু করেন।

আরও পড়ুন : উলিপুরে স্বাস্থ্য সুরক্ষা কর্মসূচি সম্প্রসারণে মতবিনিময়

অথচ আমরা জনতাম সেখানে তার পৈতৃক কোন সম্পত্তি নেই। তার দাদি কালা বানুর খতিয়ান ভুক্ত জমি যার বিএস দাগ নং ৬৭৪৩ হচ্ছে হাইস্কুলের সোজা পশ্চিম অংশ থেকে দক্ষিণ দিকে। উক্ত দাগে তার দাদি কালা বানু ছাড়াও, দাদির অপর বোন নবীন সোনা এবং স্কুলের জমি দাতা আব্দুর রশিদের নাম রয়েছে।

ওই দাগের জমি যদিও প্রাইমারি স্কুলের অংশে কিঞ্চিৎ পরিমাণ (আনুমানিক এক শতক) ঢুকেও তাকে তা আব্দুর রশিদের উত্তরাধিকার ওয়ারিশদের না দাবিকৃত হয়ে আছে অনেক আগে থেকে। কিন্তু আমাদের প্রধান শিক্ষক কারো সাথে আলাপ আলোচনা না করে মনির উল্লাহ কে চাহিবা মাত্র জমি ফেরত দেওয়াতে শিক্ষকরা তার প্রতি যথেষ্ট সন্দিহান প্রকাশ করেছে।

বিদ্যালয়ের এসএমসি কমিটির সহসভাপতি সোনা আলী বলেন, প্রধান শিক্ষক জমি ছেড়ে দেয়ার সময় আমাদের সাথে পরামর্শ করেনি। শুরুতে তিনি কমিটিকে অবহিত করলে আমরা স্কুলের জমি স্কুলে রাখার চেষ্টা করতাম। অথচ তিনি গত রবিবার প্রাই একসপ্তাহ অতিবাহিত হওয়ার পর কমিটির মিটিং ডেকে দাবি করেছেন জমিটুকু মনির উল্লাহদের। সেটি স্কুলের প্রয়োজন নেই। তবে এ ব্যাপারে আমরা কেউ কাগজপত্র যাচাই করিনি।

আরও পড়ুন : নোয়াখালীতে ইয়াবাসহ মাদক কারবারি আটক

এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কলিম উল্লাহ বলেন, দীর্ঘদিন স্কুলে দখলে ছিল এটা ঠিক আছে তবে যাদের পৈতৃক সম্পত্তি তারা দখল করে দেওয়াল দিয়ে দিছে।

এ বিষয়ে স্কুল পরিচালনা কমিটি অবগত আছেন। কিন্তু বিদ্যালয়ের এসএমসি কমিটির সহসভাপতির দাবি প্রধান শিক্ষক কলিম উল্লাহ আমাদের কাউকে অবগত করেননি।তার ইচ্ছা মতো করছে বাকিটা আমি জানি না।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এমদাদ হোসেন বলেন, বিষয়টি আমি একটু শুনেছি, তবে ঘটনা স্হলে গিয়ে দেখতে হবে স্কুলের জমি কিনা যাচাই বাছাই করে উভয়পক্ষের সাথে বসে সীদ্ধান্ত নিতে হবে।

আরও পড়ুন : সিট দেয়ার আশ্বাসে হাতিয়ে নিল টাকা

এদিকে মনির উল্লাহর দাবি, আমি শাহপরীর দ্বীপের ঐতিহ্যবাহী প্রাথমিক বিদ্যালয় হওয়া আমি তাদেরকে প্রস্তাব দিয়েছিলাম ক্রয় করার জন্য তারা ক্রয় করেননি।এ জমি দীর্ঘদিন স্কুলের দখলে ছিল কিন্তু আমাদের পৈতৃক সম্পত্তি তাই আমি দেওয়াল দিয়ে সীমানা নির্ধারণ করছি।কেউ আজ ও আমার সাথে বসেনি। আমি বিক্রি করার জন্য প্রস্তুত আছি।

শাহপরীর দ্বীপ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্রদের দাবি, স্কুলের সীমানার ভেতর ঘর তৈরী করা অযৌক্তিক। কারো জমি স্কুলে ঢুকে থাকলে ন্যায্য মূল্য দাবি করতে পারে।

তাছাড়া সমস্যা সমাধান না করে দাবিকৃত ব্যক্তিকে আত্মখুশিতে জমি ছেড়ে দেয়া প্রধান শিক্ষকের উচিত হয়নি। তবে এক্ষেত্রে কারো সাথে কোন অবৈধ লেনদেন হয়েছে কিনা খতিয়ে দেখা দরকার।

সান নিউজ/এইচএন

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

কম খরচে বেশি লাভ, মাদারীপুরে আখ চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে

একসময় মাদারীপুর জেলায় ব্যাপক পরিমাণে আখ চাষ হলেও দীর্ঘমেয়াদি ফসল হওয়ায় কৃষকরা...

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সড়কে দুর্ঘটনা, আহত এক

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) অভ্যন্তরীণ সড়কে শাটলকার ও ভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্...

অ্যাটর্নি জেনারেল পদত্যাগ করে নির্বাচন করার ঘোষণা দিলেন 

অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান তার পদ থেকে পদত্যাগ করে নির্বাচন করার ঘোষণ...

জাকির নায়েককে আপাতত বাংলাদেশে আসার অনুমতি দিচ্ছে না সরকার

ইসলামী বক্তা, ভারতীয় বংশোদ্ভূত জাকির নায়েককে আপাতত বাংলাদেশে আসার অনুমতি না দ...

ঢাকা-১৪ আসনে বিএনপি প্রার্থী সানজিদা ইসলাম তুলির নেতৃত্বে প্রথম পদযাত্রা

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ঢাকা-১৪ আসনের মনোনীত প্রার্থী সানজিদা ইসল...

বিএনপি ভেসে আসা দল নয়, বিএনপিকে খাটো করে দেখবেন না

বিএনপিকে খাটো করে দেখবেন না, উপদেষ্টা পরিষদ পক্ষপা...

গুম প্রতিরোধ আইনে চূড়ান্ত অনুমোদন, সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড

গুম প্রতিরোধ অধ্যাদেশে চূড়ান্ত অনুমোদন, সর্বোচ্চ স...

সৌদি আরবে ১৭ হাজার নারী শিক্ষকে দেয়া হবে সংগীত প্রশিক্ষণ

সৌদি আরব সরকার বিদ্যালয় পর্যায়ে সংগীত শিক্ষা চালুর বড় পদক্ষেপ নিয়েছে। দেশের শ...

‘ঘি আমাদের লাগবেই, সোজা আঙুলে ঘি না উঠলে বাঁকা করব’ — নো হাংকি পাংকি

জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে গণভোটের দাবিতে সরকারকে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছে জামা...

একদিনের চাঁদাবাজি দিয়ে প্রতিদিন গণভোট দেয়া যাবে: ডা. তাহের

দৈনিক যে পরিমাণ চাঁদাবাজি হয় তা দিয়ে প্রতিদিন একটা গণভোট দেওয়া যাবে বলে মন্তব...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা