ঘুষের টাকা চুরির অভিযোগে জা-কে (স্বামীর ভাবি) পেটানোর অভিযোগ উঠেছে পরিবেশ অধিদপ্তর রাজশাহী জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক (ডিডি) মোছা. তাছমিনা খাতুনের বিরুদ্ধে। এমন অভিযোগ তুলে ওই নারীকে ভাসুরের দুই ছেলে, ডিডি তাছনিমা ও তার স্বামী আব্দুল আলীম প্রচণ্ড মারধরও করেছেন বলে দাবি ভুক্তভোগীর।
ভুক্তভোগী শাহানাজ খাতুন অভিযোগ করে গণমাধ্যমকে বলেন, রাজশাহী পরিবেশ অধিদপ্তরের ডিডি তাছমিনা খাতুন শিমুর স্বামীর বাড়ি জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার বেলতা বানদিঘী (মাটিহাস) গ্রামে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ৭ আগস্ট ডিডি তাছমিনা তার আরেক ভাসুর মো. দেলোয়ার খাঁর ছেলে মো. মাসুদ রানার মাধ্যমে ঘুষের ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা আমার বাড়ির একটি ঘরের বাক্সে জোরপূর্বক লুকিয়ে রেখে চাবি নিয়ে চলে যায়। প্রায় তিন মাস আগে আমার ঘরের মধ্যে রাখা ঘুষের ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা তারা বের করে নিয়ে যায়। তখন আমার বিরুদ্ধে ঘুষের সেই টাকা থেকে ২৫ লাখ টাকা চুরির অভিযোগ তুলে অকথ্য ভাষা গালাগালসহ নানাভাবে হুমকি দিতে থাকে।
এই ঘটনার জেরে গত শুক্রবার (১ আগস্ট) সন্ধ্যা আনুমানিক সোয়া ৭টার দিকে দেবর আব্দুল আলীম (ডিডি তাছমিনার স্বামী), তাছনিমা, ভাসুরের ছেলে মাসুদ রানা ও মারুফ খাঁ লাঠিসোঁটা নিয়ে আমার বাড়িতে অবস্থান নেন। এক পর্যায়ে দেবর আব্দুল আলীম আমার বিবাহিত মেয়েকে ভাসুরের ছেলে মাসুদ রানার সঙ্গে বিয়ে দিতে বলেন। বিয়ে দিলেই কেবল চুরি করা ২৫ লাখ টাকা দিতে হবে না বলে জানান। আমি দেবরের কথায় রাজি না হওয়ায় তারা সবাই মিলে আমাকে এলোপাথাড়ি মারধর করতে থাকেন।
এসময় আমার ভাসুর দেলোয়ারের নির্দেশে দেবর আব্দুল আলীম, দেলোয়ারের ছেলে মাসুদ রানা ও মারুফ লাঠি দিয়ে আমাকে এলোপাথাড়ি মারধর করে মারাত্মক জখম করে। তখন মাসুদ তার হাতের লাঠি দিয়ে আমার বাম পায়ে আঘাত করলে হাড় ভেঙে যায়। এক পর্যায়ে দেবর আব্দুল আলীম আমার চুলের মুঠি ধরে টেনে-হিঁচড়ে আমার শ্লীলতাহানি ঘটান।
এমন পরিস্থিতিতে আমার বোনের মেয়ে মোছা. রুপালী বেগম এগিয়ে এলে তাকেও এলোপাথাড়ি মারধর করে। পরে আমরা হাসপাতালে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা নিই।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঘটনার দিন (১ আগস্ট) রাজশাহী পরিবেশ অধিদপ্তরের ডিবি তাছনিমা খাতুন স্বামীর বাড়ি ক্ষেতলালে সরকারি একটি গাড়ি (গাড়ি নম্বর ১৩-৩২৯৬) নিয়ে যান। মূলত রাজশাহী থেকে সেই গাড়িতে গিয়েই জা শাহানাজ খাতুনের বিরুদ্ধে ঘুষের টাকা চুরির অপবাদ দিয়ে স্বামী, ভাসুর, ভাসুরের ছেলেদের মাধ্যমে দ্বন্দ্ব-সংঘাতে জড়ান।
টাকা চুরির অপবাদ দিয়ে মারধরের ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে ক্ষেতলাল থানার ওসি কামাল হোসেন বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি, তারা এই ঘটনায় থানাতেও এসেছিলেন। কিন্তু কোনো অভিযোগ দেয়নি, মীমাংসার বিষয় নিয়ে থানায় এসেছিলেন। এর বেশি কিছু আমি বলতে পারবো না।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোছা. তাছনিমা খাতুন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি মুঠোফোনে কথা বলবো না। অফিসের কাজে বাইরে আছি। অফিসে গিয়ে আমি আপনাকে ডেকে নিবো, তখন কথা বলবো।’কিন্তু পরে তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে সফল হওয়া যায়নি।