আউট অব স্কুল চিলড্রেন কর্মসূচীর আওতায় বাগেরহাটে সুখী মানুষ নামক একটি এনজিওর বাস্তবায়নাধীন শিক্ষা কর্মসূচীর ৫৪ জন শিক্ষকের বেতন ভাতা উত্তোলন নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়। বুধবার (৪ জুন) কোরবানির ঈদের শেষ কর্মদিবসে ফকিরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার হস্তক্ষেপে ওই নারী শিক্ষকেরা তাদের বেতন ভাতা তুলতে সক্ষম হন।
এনজিও সুখী মানুষ পরিচালিত ওই শিক্ষা কার্যক্রমের কয়েকজন শিক্ষিকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেন, প্রতিষ্ঠানটির সুপারভাইজার বশির কয়েকজন শিক্ষিকার চেকবই ও ডেবিট কার্ড, ডেবিট কার্ডের পাচওয়ার্ড নিয়ে গেছেন এবং তাদের তিন মাসের বেতন, বোনাস ও ঘরভাড়াসহ মোট ২৬ হাজার ছয়শত টাকার একটা অংশ তিনি রেখে দিবেন। বিষয়টি আমলে নিয়ে তিনি বাগেরহাট উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো এর সহকারী পরিচালক শুভেন্দু ঘোষকে জানালে তিনি ডাচ বাংলা ব্যাংকে এসে প্রত্যেক শিক্ষিকার বেতন তাদের স্ব স্ব হিসাব নম্বরে প্রদানের ব্যবস্থা করেন। এ সময় টাকা বুঝে পেয়ে শিক্ষিকারা সন্তোষ প্রকাশ করেন।
অভিযুক্ত সুপারভাইজার বশির দাবি করেন তিনি শিক্ষিকাদের সহযোগিতা করার জন্য ডেবিট কার্ড ও পিনকোড নিয়েছিলেন। কিন্তু সার্ভার ডাউনের কারণে বেতন তোলা যাচ্ছিল না। ফলে কয়েকজন শিক্ষিকা তাকে ভুল বুঝে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে অভিযোগ করেন। এ সময় কয়েকজন শিক্ষিকা তার এ বক্তব্যকে সমর্থন করেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি সুত্র জানায়, চিতলমারী , মোল্লাহাট ও বাগেরহাট সদর উপজেলায় শিক্ষকদের বেতন ও ভাতা নিয়ে এধরনের পায়তারা চলছে। বিষয়টি কর্তিপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করছেন শিক্ষিকারা।
বাগেরহাট জেলা উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো এর সহকারী পরিচালক শুভেন্দু ঘোষ জানান, খবর পেয়ে তিনি ফকিরহাট এসে শিক্ষিকাদের সাথে কথা বলেছেন। তিনি উপস্থিত থেকে প্রত্যেক শিক্ষিকার একাউন্টে টাকা পোস্টিং এর ব্যবস্থা করেছেন। তবে সার্ভার জ্যাম থাকায় একটু দেরি হচ্ছে।
ফকিরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুমনা আইরিন বলেন, “কয়েকজন শিক্ষিকার অভিযোগ পেয়ে বিষয়টি সমাধানের দায়িত্ব দিয়েছি। আশা করি দ্রুত সমাধান হয়ে যাবে।”
উল্লেখ্য বেসরকারী সংস্থা সুখীমানুষ বাগেরহাটের ৮টি উপজেলায় আউট অব স্কুল চিলড্রেন কর্মসূচি পরিচালনা করে আসছে। রামপাল, কচুয়া, মোড়েলগঞ্জ ও মংলা উপজেলায় সহযোগী সংস্থার মাধ্যমে কর্মসূচি পরিচালনা করেছে। এদিকে বাগেরহাট সদর, চিতলমারী, ফকিরহাট ও মোল্লাহাট উপজেলায় সুখী মানুষ নিজে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। প্রকল্পের শুরু থেকে সুখী মানুষ কোটি কোটি টাকার অনিয়ম করেছে বলে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হওয়ার পর দুদক এবিষয়টি আমলে নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে বলে জানা গেছে।
সাননিউজ/ইউকে