ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে গরু আনতে গিয়ে খালের স্রোতে ভেসে গিয়ে আপন দুই বোনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার (৩১ মে) সকালে উপজেলার গোকর্ণ ইউনিয়নের আকাশিয়া হাওর দিয়ে প্রবাহিত তিতাস নদী থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এর আগে, শুক্রবার বিকেলে নদীর পানিতে ডুবে গিয়ে তারা নিখোঁজ ছিলেন।
নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খাইরুল আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
নিহত দুই শিশু হলো-- গোকর্ণ গ্রামের মিনার আলীর মেয়ে মারিয়া (১১) ও সামিয়া (৮)। তাদের মৃত্যুতে এলাকায় পরিবারসহ গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
নিহতের পারিবারিক সূত্রের বরাত দিয়ে ওসি জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে মারিয়া ও সামিয়া আকাশিয়া হাওরে গরু আনতে যায়। ফেরার পথে স্রোতস্বিনী একটি খালের পাড় দিয়ে হেঁটে আসার সময় হঠাৎ তীব্র স্রোতে তারা ভেসে যায়। বিষয়টি জানতে পেরে আত্মীয়স্বজন ও স্থানীয়রা নৌকা নিয়ে রাতভর খোঁজাখুঁজি চালান। এরই মধ্যে রাতের বেলা স্থানীয় মসজিদের মাইকে মাইকিং করে তাদের নিখোঁজ সংবাদ জানানো হয়। স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে পরে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা উদ্ধার তৎপরতায় অংশ নেয়। ব্যাপক খোজাখুজির পর শনিবার সকালে গোকর্ণ বেড়িবাঁধ এলাকায় তিতাস নদীতে মারিয়ার মরদেহ ভেসে ওঠে। কিছুক্ষণ পর সামিয়ার মরদেহ একটি মাছ ধরার জালে আটকে থাকতে দেখা যায়।
মেয়েদের চাচা দুলাল আহমেদ বলেন, “সারারাত খুঁজেছি, কেউ ঘুমায়নি। ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ সবাই চেষ্টা করেছে। সকালে নদীতে ভেসে উঠে মারিয়ার লাশ, সামিয়ারটা জালে আটকে ছিল। সব শেষ হয়ে গেল, আমাদের কলিজার টুকরোগুলো আর রইল না।”
স্থানীয় কৃষক জাহিদ মিয়া বলেন, “সন্ধ্যার আগে শুনি তারা খালের পাশে ছিল। হঠাৎ পানির চাপ বাড়ায় হয়তো স্রোতে ভেসে গেছে। হতভাগাদের বাবা মিনার আলী কিছুদিন হলো প্রবাসে গেছেন। তার চার সন্তানের মধ্যে এ দুজনই বড় ছিল।”
গোকর্ণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ শাহীন বলেন, “এটা অত্যন্ত হৃদয়বিদারক ঘটনা। বর্ষাকালে নদী বা খালের আশপাশে চলাচলে সবাইকে আরও সতর্ক হতে হবে। পরিবারটিকে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে।”
সাননিউজ/ইউকে