ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার অরুয়াইল ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামসংলগ্ন মেঘনা নদীর তীরবর্তী প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ঘটনায় প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরকে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
রাজাপুর ও রাণীদিয়া গ্রামের দুই বাসিন্দা—মো. দেলোয়ার হোসেন ও মো. জজ আহমেদের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার ইফতেখার আহমেদ মঙ্গলবার (২৭ মে) এই নোটিশ পাঠান।
নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে, এই এলাকায় বালু দস্যুরা দীর্ঘদিন ধরে মেঘনা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে, যার ফলে নদীর তীরবর্তী জনপদ নদীভাঙনসহ পরিবেশগত ঝুঁকির মুখে পড়েছে। এতে করে রাজাপুরসহ পাকশিমুল, চুন্টা ও পানিশ্বর ইউনিয়নের অন্তত ১৬টি গ্রামের প্রায় এক লাখ মানুষের জীবন-জীবিকা হুমকির মুখে পড়ছে।
নোটিশটি পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়, পরিবেশ মন্ত্রণালয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক, সরাইল উপজেলার ইউএনও এবং অরুয়াইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবর পাঠানো হয়।
নোটিশ প্রদানকারি সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার ইফতেখার আহমেদ বলেন, “বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন লঙ্ঘন করে যেভাবে নদী থেকে বালু তোলা হচ্ছে, তা বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে আমরা কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানিয়েছি। অন্যথায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোশারফ হোসাইন বলেন, নদী যথাযথ ড্রেজিং না করা হলে পলি জমতে জমতে নদীর বুকে চর পড়ে গেলে ঢেউয়ের তোড়ে দুই পাড়ে ভাঙন শুরু হয়। এ কারণে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) মাধ্যমে জরিপ করিয়ে এই এলাকায় নদী খননের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখন বালু উত্তোলনে জড়িত পক্ষের সঙ্গে অপর পক্ষের ঝামেলার কারণে বালু উত্তোলনের ব্যাপারে আপত্তি তোলা হচ্ছে।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক মো. দিদারুল আলম বলেন, বালু উত্তোলনে জড়িত পক্ষের সঙ্গে অন্য একটি পক্ষের বনিবনা না হওয়ায় তারা প্রোপাগাণ্ডা ছড়াচ্ছে যে, ড্রেজিংয়ের কারণে বিভিন্ন গ্রাম ভাঙনের হুমকিতে পড়েছে। মূলত গ্রামগুলো থেকে অন্তত পাঁচ কিলোমিটার দূরবর্তী এলাকা থেকে ড্রেজারের মাধ্যমে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। তবে বালু উত্তোলনে আদৌ কোনো অনিয়ম করা হচ্ছে কীনা সেটি আমরা তদন্ত করে দেখবো।
সাননিউজ/ইউকে