নিজস্ব প্রতিবেদক: শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক (ডিজি) লিয়াকত আলী লাকীর বিরুদ্ধে অনিয়ম করে সরকারের ২৬ কোটি টাকা উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে। একাডেমির সচিবের পদ শূন্য হলে চুক্তিভিত্তিক একজন কর্মকর্তাকে সচিবের দায়িত্ব দিয়ে এ অর্থ উত্তোলন করেন তিনি।
সংসদীয় কমিটির সুপারিশে ডিজির আর্থিক অনিয়মসহ নানা স্বেচ্ছাচারিতার ঘটনায় ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
রবিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) অনুষ্ঠিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকেও শিল্পকলা একাডেমির ডিজির নানা অনিয়মের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বিষয়টি তদন্তের জন্য মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বৈঠকে ডিজির অর্থ তছরুপ ও অনিয়ম নিয়ে সংসদীয় কমিটির কাছে আসা একটি অভিযোগপত্রও উপস্থাপন করা হয়।
সূত্র জানায়, মন্ত্রণালয়ের তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর সংসদীয় কমিটি সিদ্ধান্ত জানাবে। এদিন বৈঠকে লিয়াকত আলী লাকীও উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে শিল্পকলার আগের সচিব মো. নওসাদ হোসেন গত ৩০ জুন বদলি হন। ওই দিনই শিল্পকলা একাডেমির ডিজি লিয়াকত আলী লাকী নতুন আদেশ জারি করে একাডেমির চুক্তিভিত্তিক পরিচালক (চারুকলা) সৈয়দা মাহবুবা করিম (মিনি)-কে সচিবের দায়িত্ব দেন।
ওই আদেশে বিদায়ী ২০২০-২১ অর্থবছরে একাডেমির অসমাপ্ত কাজগুলো সম্পন্ন করার প্রয়োজনে নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত সচিব যোগদানের পূর্ব পর্যন্ত নিজ দায়িত্বের পাশাপাশি সচিবের অতিরিক্ত দায়িত্ব তাকে প্রদান করার কথা বলা হয়।
সূত্র জানিয়েছে, মন্ত্রণালয় থেকে আদেশপ্রাপ্ত কোনও সচিব ছাড়া একাডেমির ডিজির আদেশে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির চেকে স্বাক্ষর করার সুযোগ নেই। শিল্পকলা একাডেমির নিয়ম অনুযায়ী মহাপরিচালকও সেটি পারেন না। বিধি অনুযায়ী সচিব বা একাডেমির অর্থ বিভাগের কর্মকর্তাই কেবল চেকে স্বাক্ষর করতে পারেন।
শিল্পকলা একাডেমিতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ৩০ জুন থেকে ১৯ জুলাই পর্যন্ত প্রথম দফায় সচিবের দায়িত্ব পালন করেন মাহবুবা। ওই সময় পেছনের তারিখে প্রায় ২৬ কোটি টাকার চেকে স্বাক্ষর করেন তিনি। পেছনের তারিখে স্বাক্ষর করে কেবল ১৬ আগস্টই ৮ কোটি টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সৈয়দা মাহবুবা করিম বলেন, আমি সচিবের দায়িত্ব নিতে চাইনি। আমাকে ডিজি মহোদয় বারবার বলার কারণেই দায়িত্ব নিয়েছি। আমাকে মৌখিকভাবে দায়িত্ব নেওয়ার জন্য বারবার বলেছেন। আমার আগেও অনেকে এরকম দায়িত্ব নিয়েছেন বলেও তিনি জানিয়েছেন। ডিজি আমার বস। তার আদেশ তো অমান্য করতে পারি না। তিনি হুকুম দিয়েছেন। তাই আমি এটা করেছি।
চেকে স্বাক্ষর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি হুকুমের তালিম করেছি। তবে আমি যেসব ফাইলে সই করেছি তার সবই ডিজি অনুমোদিত। ওনার অনুমোদন ছাড়া কোনও ফাইল বা চেকে সই করিনি। জানা মতে অন্যায় কিছু করিনি। আর যদি কোনও প্রশ্ন থাকে সেটা ওনাকেই করতে হবে।
এসব বিষয়ে জানতে লিয়াকত আলী লাকীকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
সান নিউজ/এফএইচপি