জাতীয়

তারুণ্যের শক্তিকে কাজে লাগাতে চাই

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা নির্বাচনী ইশতেহারে ঘোষণা দিয়েছিলাম তারুণ্যের শক্তি বাংলাদেশের সমৃদ্ধি। তরুণ প্রজন্মকে উপযুক্ত করে গড়ে তোলা, যাতে তারা এই অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে পারে। কেননা তারুণ্যের শক্তিকে আমরা দেশের উন্নয়নে কাজে লাগাতে চাই।

রোববার (২ জানুয়ারি) সকালে ‘জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ কর্তৃক বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের স্বীকৃতি প্রদান’র আনুষ্ঠানিকভাবে উদযাপন অনুষ্ঠানে (ভার্চুয়াল) এ কথা বলেন তিনি। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমার যে লক্ষ্য, জাতির পিতার বঙ্গবন্ধুর যে লক্ষ্য সে লক্ষ্যটা আমাদের অর্জন করতেই হবে। সে লক্ষ্য অর্জনের জন্য নতুন প্রজন্ম এই বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। সেটাই আমাদের আশা। সেভাবেই তাদের তৈরি করতে চাই।

শেখ হাসিনা বলেন, অন্তত আমি তাদেরকে এটুকু আহ্বান করব যে- দেশকে ভালোবাসবে, মানুষকে ভালোবাসবে, দেশের মানুষের জন্য কাজ করবে।… সেখানেই শান্তি, সেখানেই অগ্রগতি, সেখানেই উন্নতি, সেখানেই স্বস্তি। চিরদিন কেউ বাঁচে না। কিন্তু যেই কাজ আমরা করে গেলাম, সেই গতি যেন হারিয়ে না যায়, চলার গতি যেন অব্যাহত থাকে, বাংলাদেশ যেন এগিয়ে যায়- সেটাই আমরা চাই।

তিনি আরও বলেন, দেশ ও দেশের মানুষকে ভালোবাসলে, শুধু দেশের মানুষের কথা চিন্তা করে যারা পথ চলে—তাদের পথচলা কখনো সহজ হয় না। অনেক বাধা অতিক্রম করতে হয়। স্বাধীনচেতা হলে অনেক বাধা আসে। আমি জানি অনেক বুলেট-বোমা-গ্রেনেড আমার জন্য অপেক্ষা করে থাকে। আমি সেগুলো নিয়ে কখনো পরোয়া করি না।

স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার চলার পথ এত সহজ ছিল না। যে দেশের মাটিতে আমার বাবা-মা-ভাইয়ের হত্যাকারীরা ক্ষমতাসীন, যুদ্ধাপরাধীরা ক্ষমতাসীন। সে দেশে যে কোনো সময় আমি হারিয়ে যেতে পারি। কিন্তু আমি ভয় পাইনি। পিছনে ফিরে তাকাইনি।

তিনি আরও বলেন, আমি এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছি দেশের মানুষকে নিয়ে। বাবার কাছ থেকে শেখা দেশকে ভালোবাসা, মানুষকে ভালোবাসা। তার স্বপ্ন চোখে নিয়ে, বুকে নিয়ে, আদর্শ বুকে নিয়ে পথ চলার চেষ্টা করেছি। নিজের জীবনে কোনো চাওয়া-পাওয়া রাখিনি। দেশের মানুষের জন্য কতটুকু করতে পারলাম সেটাই ছিল বিবেচ্য বিষয়। যে আদর্শ আমার বাবা বুকে ধারণ করতেন, সে আদর্শ নিয়ে চলেছি।

শেখ হাসিনা বলেন, চলার পথ যত অন্ধকারাচ্ছন্ন, বন্ধুর বা কণ্টকাকীর্ণই হোক না কেন—আমরা থেমে থাকবো না। যত রক্তক্ষরণ হোক সব পদদলিত করে বাংলাদেশের জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনে এগিয়ে যাবো। এটাই হচ্ছে আমার প্রতিজ্ঞা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এমন একটি সময় যখন আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী এবং আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন করছি। দেশে-বিদেশে আমাদের যত বাঙালি, সবাইকে আমি অভিনন্দন জানাই। বাংলাদেশে প্রত্যন্ত অঞ্চলের তৃণমূলের মানুষকে আমি অভিনন্দন জানাই।

শেক হাসিনা বলেন, আমি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। যার নেতৃত্বে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। শুধু স্বাধীনতা নয়, বাঙালি জাতিকে একটি উন্নত মর্যাদাশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার স্বপ্ন তিনি দেখেছিলেন। আমি শ্রদ্ধা জানাই জাতীয় ৪ নেতার প্রতি, ৩০ লাখ শহীদের প্রতি, ২ লাখ মা-বোনের প্রতি এবং মুক্তিযোদ্ধাদের জানাই সালাম।

তিনি আরও বলেন, ছোটবেলা থেকে রাজনীতি করেছি কিন্তু কখনো ভাবিনি বড় একটা দায়িত্ব নিতে হয়। আমার বাবা রাজনীতি করেছেন আমরা পাশে থেকেছি, কাজ করেছি। স্কুল জীবন থেকে বেরিয়ে কলেজ, কলেজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়। একজন কর্মী হিসেবেই সক্রিয় ছিলাম। দুর্ভাগ্য আমাদের ৭৫’র ১৫ আগস্ট আমরা সব হারিয়েছি। জানি না কী অপরাধ ছিল আমার বাবা-মা-ভাইদের। আমার বাবা এ দেশের মানুষের ভাগ্য গড়তে চেয়েছিলেন। তিনি তার জীবন উৎসর্গ করেছেন এ দেশের মানুষের জন্য। তারই নেতৃত্বে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি।

শেখ হাসিনা বলেন, একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে মাত্র সাড়ে ৩ বছরে তিনি স্বল্পোন্নত দেশে উন্নীত করেন। তিনি চেয়েছিলেন ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণ করা এবং এ দেশের মানুষকে ক্ষমতাশীল করে দিয়ে দেশের উন্নয়নকে তরান্বিত করা। কিন্তু সে সুযোগটা তিনি আর পাননি। স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে আমরা স্বীকৃতি পেয়েছিলাম। এরপর ক্ষমতায় আসে সামরিক জান্তা। অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল, একের পর এক ক্যু, সেগুলো চলতে থাকে। বাংলাদেশের মানুষ অন্ধকারেই থেকে যায়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। ২০১৮ সালে বাংলাদেশ প্রথম স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জন করেছিল। ২০১৫ সালে বিশ্বব্যাংক আমাদের নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশের স্বীকৃতি দিয়েছিল। কিন্তু সেখানে আমরা থেমে থাকিনি। আমরা এগিয়ে চলেছি। সব শর্ত পূরণ করে আমরা চূড়ান্ত স্বীকৃতি পেয়েছি। ২০২১-এর ২৪ নভেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে।

সান নিউজ/এমকেএইচ

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

৪৮৪ রানে ২য় দিন শেষ করলো বাংলাদেশ

মুশফিকুর রহিম আউটের পরপরই একের পর এক উইকেট হারাতে থাকলো টাইগাররা। শেষ বিকেলে...

জিআই পণ্য হাড়িভাঙ্গা আম সংগ্রহ উৎসব ২০২৫- এর উদ্বোধন

জিআই পণ্য হাড়িভাঙ্গা আম সংগ্রহ উৎসব ২০২৫ এর উদ্বোধন ও আম চাষীদের সাথে মতবিনিম...

গিলক্রিস্টকে টপকে মুশফিকের বিশ্বরেকর্ড

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি অ্যাডাম গিলক্রিস্টকে টপকে বিশ্বরে...

এনসিপির কর্মসূচি ঘোষণা; দেশব্যাপী পালনের নির্দেশ

দেশব্যাপী পালনের জন্য এনসিপির কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। জুলাই গণহত্যার বিচার,...

৪৯৫ রানে থামলো বাংলাদেশ

শ্রীলংকার বিপক্ষে দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টের তৃতীয় দিন মাঠে নেমে দিনের...

সংসদ নির্বাচনে থাকছে না পোস্টার: ইসি সানাউল্লাহ

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রচারণার অন্যতম মাধ্যম ‌‘পোস্টার&rsquo...

৫ আগস্ট সরকারি ছুটি: উপদেষ্টা ফারুকী

৫ আগস্ট সরকারি ছুটি পালন করা হবে বলে জানিয়েছেন সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা...

এখনই ক্যাবরেরার ছাঁটাই নয়- বাফুফে

বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর ম্যাচে হারের পর ক্যাবরেরাকে নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে সামাজিক...

দেশসেরা ঢাবি

যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা ও গবেষণা সংস্থা কোয়াককোয়ারেলি সায়মন্ডস (কিউএস) জরিপে...

ট্রুথ কমিশন গঠনের বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি: আইন মন্ত্রণালয়

আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় জানিয়েছে ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন কমিশ...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা