সংগৃহিত
মতামত

তরুণ সমাজের কাছে অজানা ২১ ফেব্রুয়ারি

অন্তরা আফরোজ: মোদের গরব মোদের আশা আ মরি বাংলা ভাষা। গানটি মূলত গাওয়া হয় ২১ ফেব্রুয়ারি এই দিনে। ২১ ফেব্রুয়ারি, কথাটা শুনলেই কেমন যেন মনে ভেতর আলাদা একটা অনুভূতি কাজ করে। পৃথিবীর একমাত্র জাতি আমরাই যারা কিনা ভাষার জন্য প্রাণ দিয়েছেন। তারই প্রেক্ষাপটে ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর ইউনেস্কো ভাষা শহীদের এই আত্মত্যাগের কারণে দিনটিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে ঘোষণা দেয়ার পর থেকে বাংলাদেশের নাম ও এই ভাষার উপর প্রবল ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটে। বাংলাদেশের জনগণের কাছে গৌরবজ্জল একটি দিন হচ্ছে ২১ ফেব্রুয়ারি। মূলত বাঙালি জাতি তার মাতৃভাষা প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে এই দিনটিকে মর্মান্তিক ও গৌরবজ্জ্বল স্মৃতিবিজড়িত দিন হিসাবে ইতিহাসের পাতায় চিহ্নিত করেছে।

কিন্তু কথা হচ্ছে ভাষা আন্দোলনের অনেক তথ্য আজও তরুণ প্রজন্মের কাছে অজানা। অনেকে জানেও না দিনটি ঠিক কি দিবস হিসাবে পালিত হয়। আমার এই লেখাটির মূল উদ্দেশ্যই হলো ভাষা আন্দোলের ইতিহাস সম্পর্কে জানা একইসাথে বাঙালি জাতি প্রতিষ্ঠিত হবার ইতিহাস এই প্রজন্মের সামনে দিনটিকে তুলে ধরা। তাদেরকে এই ব্যাপারে জানানোই মুলত এই লেখার মূল উদ্দেশ্য।

সেদিন ছিলো বৃহস্পতিবার, বাংলা সনের ৮ ফাল্গুন। ঢাবির শিক্ষার্থীরা সকালে রাজপথে বেরিয়ে পড়ে। তৎকালীন পুলিশ সে সময় তাদের উপর গুলি চালায়। আর সেই গুলিতে আবদুস সালাম,আবদুল জব্বার, আবদুল বরকতসহ আরও বেশ কয়েকজন সে সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। এই ঘটনার পরের দিন ২২ ফেব্রুয়ারী পুনরায় সাধারণ মানুষ রাজপথে বেরিয়ে পড়ে। পরবর্তীতে এসকল প্রাণ দেয়া শহীদের জানাজায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হোস্টেলের সামনে অংশগ্রহণ করে। দেশের জন্য প্রাণ দেয়া এসকল শহীদের স্মৃতিকে অমর করে রাখার উদ্দেশ্যে ২৩ ফেব্রুয়ারি রাতেই ঢাকা মেডিকেল কলেজের হোস্টেল প্রাঙ্গণে একটি স্মৃতি স্তম্ভ গড়ে তোলেন। একইসাথে ২৬ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন সরকার তা ভেঙ্গে দেয়। যা কিনা পরবর্তীতে আরও বেগবান হয়ে ওঠে। ১৯৫৪ সালের ৯ মে প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট জয়লাভ করার পর গণ পরিষদের একটি অধিবেশনে বাংলাকে সে সময় পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসাবে স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায়, ১৯৯৮ সালে কানাডায় ভ্যানকুভার শহরে বসবাসরত রফিকুল ইসলাম এবং আবদুস সালাম নামের দুই বাঙালি উদ্যোক্তা হিসাবে জাতিসংঘের মহাসচিব কফি আনানের কাছে একুশে ফেব্রুয়ারিকে মাতৃভাষা দিবস হিসাবে ঘোষণার আবেদন জানায়। ঠিক এর পরের বছরেই ১৭ নভেম্বর জাতিসংঘ প্যারিসে অনুষ্ঠিত এক অধিবেশনে ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে ঘোষণা দেয়। ওই ঘোষণার পরপরই ২০০০ সালের ২১ তারিখ থেকে জাতিসংঘের সদস্য সমূহে যথাযথভাবে এই দিবস পালিত হয়ে থাকে। তথ্যমতে, ২০১০ সালের ২১ অক্টোবর জাতিসংঘের ৬৫ তম অধিবেশনে জানানো হয়, প্রতিবছরের এই দিন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে পালন করবে জাতিসংঘ। যা কিনা পরে এ প্রস্তাবটি সর্বসম্মতভাবে পাশ করা হয়। যতদিন বাঙালি জাতির ইতিহাস এই পৃথিবীতে সমুন্নত থাকবে ঠিক ততোদিন এই জাতি মহান এই দিনটিকে মনে রাখবে। কিন্তু তরুণ সমাজের কাছে বাঙালি জাতির এই ইতিহাস আজও অজানা। তারা জানেও না এই অজানা ইতিহাসের আসল কারণ কি। আর কেনোই বা এই দিনটি অন্য দিনের থেকে গুরুত্বের সাথে পালন করা হয়। ২১ফেব্রুয়ারি শুধু একটা দিন না। ইতিহাসে ঘটে যাওয়া নানার অজানা সব কাহিনী এই দিনটি বহন করছে। তাই তরুণ সমাজের উচিত ইতিহাস সম্পর্কে যেমন নিজেরা জানা তেমনি অন্যদেরকেও জানানো।

লেখক: শিক্ষার্থী, তেজগাঁও কলেজ, ঢাকা।

সান নিউজ/এইচএন

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

নোয়াখালীতে ভূমি দুস্যুর বিরুদ্ধে মানববন্ধন 

নোয়াখালী প্রতিনিধি: নোয়াখালীর কোম...

কেশবপুরে নির্বাচনী কার্যালয়ের শুভ উদ্বোধন

আব্দুর রাজ্জাক সরদার, কেশবপুরঃ আগামী ০৮ ই মে ২০২৪, রোজ বুধবা...

আজ শেরে বাংলার ৬২তম মৃত্যুবার্ষিকী

নিজস্ব প্রতিবেদক: আজ অবিভক্ত বাংল...

আফ্রিকায় ভারী বৃষ্টি, নিহত ১৫৫

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আফ্রিকায় গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ভারী বৃষ্টি হ...

ফসলের ক্ষতি করে চলছে অবৈধ ব্যাটারি ইন্ডাস্ট্রি

কামরুল সিকদার, বোয়ালমারী (ফরিদপুর):

সেরা সুন্দরী হলেন ৬০ বছরের আলেজান্দ্রা 

বিনোদন ডেস্ক: ৬০ বছর বয়সে সেরা সু...

সোনার দাম ফের কমলো 

নিজস্ব প্রতিবেদক: আবারও সোনার দাম...

গরমে বারবার গোসল করা কি ক্ষতিকর?

লাইফস্টাইল ডেস্ক: বৈশাখের শুরু থে...

রাজধানীতে যাত্রীবাহী বাসে আগুন

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর বনানীত...

থাইল্যান্ডের প্রতি বিনিয়োগের আহ্বান 

নিজস্ব প্রতিবেদক: থাইল্যান্ডের ব্...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা