জাফর ওয়াজেদ : বিস্ময় জাগে পেছনে তাকালে। বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রীসভার সদস্য ড.কামালকে বামরা সি আইএর চর বলতো স্বাধীনতার পর। নব্বই দশকে সেই বামদের একাংশকে দেখলাম ড.কামালের গণফোরামে। ড.কামালের রাজনৈতিক নেতৃত্বের গুণে আকৃষ্ট হয়ে নয়, তার আওয়ামীলীগ বিরোধিতার কারণেই তারা সেখানে যোগ দেয়। সব বামরা মিলে সেদিন বামফ্রন্ট গঠন করে তার আহ্বায়ক করেছিলেন সমাজতন্ত্র বিরোধী ড.কামালকে।
ড.কামাল আওয়ামী লীগ ত্যাগ করার কারণ দেখিয়ে দলনেত্রীকে যে চিঠি দেন তাতে বলেছিলেন- “এখন আমি জীবনের এমন সন্ধিক্ষণে এসে পৌঁছেছি, যখন প্রচলিত রাজনৈতিক ধারার পরিবর্তে আমি একটি ভিন্নধর্মী রাজনীতিতে আত্মনিয়োগ করতে চাই। এই উদ্দেশ্যে আমি সমমনা ব্যক্তিদের সঙ্গে মত বিনিময় করে ১৯৯২ সালের জুন মাসে গণতান্ত্রিক ফোরাম গঠনের উদ্যোগ নেই।”
তার এই স্বীকারোক্তি প্রমাণ করে যে,লীগে থেকেও অপর একটি দল গঠনের ছদ্মবেশী উদ্যোগ ৷ যাকে সঙ্গত কারণেই আওয়ামী লীগ বিরোধিতা করেছিলো। জাতীয় মূলধারা সৃষ্টির জন্য ড.কামাল লীগ ছেড়ে নয়া দল করেন! আওয়ামী লীগ সমর্থক বুদ্ধিজীবিরা গণতান্ত্রিক ফোরামে গিয়ে শুভেচ্ছা বাণী দেয়ার সঙ্গে আবেগপূর্ণ বক্তৃতা দিয়েছিলেন।
তারপর গণফোরাম গঠিত হলে উদ্বোধনী দিনে ডায়াসে উঠে সর্বজনধন্য ও সর্বজনপ্রিয় হবার চেষ্টা করেছিলেন যারা, তারা আজও তার কৈফিয়ত দেন নি। ইতিহাস তাদের রক্ষা করতে পারবে না।
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তাদের তৎপরতা আজও থেমে নেই। তাদের অনেকে লীগের গুরুত্বপূর্ণ পদে-মন্ত্রীও হয়েছেন৷ ১৯৯১ ও ১৯৯৬সালে শেখ হাসিনা নির্বাচনী জোটভুক্ত কমিউনিস্ট ও বামদের নৌকা প্রতীকসহ আসন দিয়েছিলেন।
তারা প্রায় সবাই বিএনপি বা গণফোরামে যোগ দেয়। লীগ তার উদারতার খেসারত দিয়েছিলো!
লেখক : জাফর ওয়াজেদ
মহাপরিচালক, প্রেস ইন্সটিটিউট, বাংলাদেশ