আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস মহামারী করোনার ঝুঁকি এবং নিরাপত্তা জনিত উদ্বেগ মাথায় নিয়েই ইরাকের রাজধানী বাগদাদ পৌঁছেছেন।
শুক্রবার (৫ মার্চ)আল ইটালিয়ান উড়োজাহাজের একটি ফ্লাইটে পোপ ফ্রান্সিস বাগদাদ পৌঁছান বলে জানায় বার্তা সংস্থা রয়টার্স। এটাই প্রথম খ্রীষ্টান কোনও ধর্মগুরু পোপের ইরাক সফর। এছাড়া, করোনা মহামারীর শুরুর পর এটা পোপ ফ্রান্সিসের প্রথম আন্তর্জাতিক সফর।
ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মুস্তাফা আল-কাধিমি বিমানবন্দরে পোপ ফ্রান্সিসকে স্বাগত জানান। পোপ বলেন,‘‘এট একটি প্রতীকী ভ্রমণ এবং এত দীর্ঘ সময় ধরে রক্ত ঝরা ভূমির প্রতি এটি একটি কর্তব্য পালন।”আবারও ভ্রমণ করতে পেরে দারুণ খুশি আমি।
নিজ দায়িত্বের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে ৮৪ বছর বয়সে পোপ ফ্রান্সিস এই সফরে ইরাকে কালক্রমে হারিয়ে যেতে বসা খ্রিস্টান সম্প্রদায়কে উদ্দেলিত করার চেষ্টা করবেন। ইরাকের শীর্ষ শিয়া মুসলমান আলেমের সঙ্গে দেখা করার পাশাপাশি পোপ দেশটির উত্তরের ইরবিলের একটি স্টেডিয়ামে ম্যাসে অংশ নেবেন।
বিবিসি জানায়, পোপ ফ্রান্সিসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইরাকের নিরাপত্তা বাহিনীর প্রায় ১ হাজার সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া, করোনা এর বিস্তার রোধে ২৪ ঘণ্টা কারফিউ জারি করা হয়েছে।
এর আগে এই সফরের বিষয়ে পোপ ফ্রান্সিস বলেন, ইরাকের খ্রিস্টানদের ‘দ্বিতীয়বারের মত হতাশ হতে দেওয়া যাবে না।’ ১৯৯৯ সালে তৎকালীন পোপ জন পল (দ্বিতীয়) এর ইরাক সফরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ওই সময়ে ইরাকের প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেন সরকারের সঙ্গে আলোচনা ভেস্তে যাওয়াও ওই সফর বাতিল হয়ে যায়।
তারপর থেকে গত দুই দশক ধরে বিশ্বের প্রাচীনতম খ্রিস্টান জনগোষ্ঠীকে শুধু নিজেদের সংখ্যা হ্রাস পেতে দেখতে হয়েছে। ওই সময় ইরাকে প্রায় ১৪ লাখ খ্রিস্টান বাসবাস করত। যে সংখ্যা কমে এখন মাত্র আড়াই লাখে দাঁড়িয়েছে। সাদ্দামকে উৎখাত করতে ২০০৩ সালে ইরাকে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন বাহিনীর অভিযান শুরু হলে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের অনেক মানুষ জীবন বাঁচাতে দেশত্যাগ করে।
এছাড়া, ২০১৪ সালে ইরাকের উত্তরাঞ্চলে জঙ্গিদল ইসলামিক স্টেটের (আইএস) উত্থানের পর অনেক খ্রিস্টান গৃহহীন হয়ে এলাকা ছাড়তে বাধ্য হন।
সান নিউজ/এসএ