ইসরায়েলের সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইয়া’য়াল (এয়াল) জামির বলেছেন গাজায় যুদ্ধ এখনও শেষ হয়নি এবং নিহত ইসরায়েলি জিম্মিদের মরদেহ ফেরত না দিলে টানা মিলিটারি অপারেশন থামবে না।
সেনাপ্রধান জামির, ২৭ অক্টোবর, ২০২৫ সোমবার জেরুজালেমে আইডিএফের সিনিয়র ইউনিট কমান্ডারদের সম্মেলনে বলেন, “আমাদের যুদ্ধ শেষ নয়, আমাদের লক্ষ্য দুইটি: গাজায় নিহত ইসরায়েলি জিম্মিদের মরদেহ উদ্ধার এবং হামাসের সশস্ত্র সক্ষমতা নিশ্চিহ্ণ করা।” তিনি আইডিএফকে সতর্ক ও প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।
জামিরের মন্তব্যকে দুই বছরের সংঘাতের পরিপ্রেক্ষিতে দেখা হচ্ছে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর ইসরায়েল গাজায় আক্রমণ শুরু করে। দুই বছরের সংঘাতে গাজার হাসপাতালে ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী যে মানবিক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা ভয়াবহ: অনুমান অনুযায়ী প্রায় ৬৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজারের কাছাকাছি আহত হয়েছেন; পাশাপাশি ব্যাপক বসতবাড়ি ধ্বংস ও বিস্তর বাস্তুচ্যুতি দেখা দিয়েছে। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো এই পরিস্থিতিকে গভীর মানবিক সংকট হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
আইডিএফের উচ্চস্তরের বক্তব্য থেকে স্পষ্ট যে ইসরায়েল গতিসূচক ও কৌশলগতভাবে হামাসকে দুর্বল করে সীমাহীন বা আংশিকভাবে চলমান অপারেশন চালিয়ে যেতে বিবেচনা করছে , বিশেষ করে যেখানে জিম্মিদের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট দাবি থেকে কোনো সমাধান আসেনি। সামরিক ও রাজনৈতিক নেতারা বারবার জানিয়েছেন, জিম্মিদের মুক্তি ও মরদেহ ফেরত না হলে যুদ্ধজট দীর্ঘায়িত হবে এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তা বিবেচনাও জটিল হবে।
আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো এই সময় গাজার অবরুদ্ধতা শিথিল করে জরুরি মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর আহ্বান জানিয়ে আসছে। জাতিসংঘ ও রেড ক্রসসহ নানা সংস্থার রিপোর্টে বলা হয়েছে, গাজায় ত্রাণ, খাদ্য, ওষুধ ও বিদ্যুৎসংকট তীব্র; হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যব্যবস্থা বিকল্প সক্ষমতায় চলছে এবং লক্ষ লক্ষ মানুষ বাস্তুচ্যুত ও আশ্রয়কেন্দ্রে বসবাস করছে।
রাজনৈতিকভাবে, কয়েকটি মধ্যস্থতাকারী দেশ ও আন্তর্জাতিক অংশীদার সীমিত যুদ্ধবিরতি ও হোস্টেজ মুক্তির জন্য মধ্যস্থতা চালিয়ে এসেছে; গত কয়েক মাসে কিছু বন্দী মুক্তি ও ইমার্জেন্সি ত্রাণ চলাকালীন সীমিত প্রয়াস দেখা গেলেও পূর্ণাঙ্গ স্থায়ী সমাধান আসেনি এবং আইডিএফের নেতৃত্ব বলছে যে পুরো ডিমিলিটারাইজেশন ও হামাসের সামরিক সক্ষমতার অবসান না হওয়া পর্যন্ত পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাবে না।
সেনাপ্রধান জামিরের কড়া ভাষ্য দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা প্রেক্ষাপটকে আরও একটি সতর্ক বার্তা দিয়েছে; একই সঙ্গে এর ফলে এলাকার রাজনৈতিক কূটনীতিক প্রচেষ্টা ও ত্রাণ কার্যক্রমের ওপর নতুন চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি হতে পারে, বিশেষত যেখানে জিম্মিদের বিষয়টি জাতীয় অনুভূতি ও রাজনৈতিক অগ্রাধিকার হিসেবে দেখা হচ্ছে।
সাননিউজ/এও