মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অকুন্ঠ সমর্থন করেছিলেন ইলন মাস্ক। মাত্র কয়েকদিন আগেও তাদের ‘বন্ধুত্ব’ ছিল আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। অথচ বিশ্বের অন্যতম ক্ষমতাধর সেই দুই ব্যক্তি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি ইলন মাস্কের বিরোধ এখন তুঙ্গে।
তাদের মধ্যে বাড়তে থাকা দূরত্বের গুঞ্জন মুহূর্তেই ‘বাকযুদ্ধ’ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে সবার সামনে। এরইমধ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ইলন মাস্কের সঙ্গে তার সম্পর্ক শেষ। রোববার দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
গার্ডিয়ানের উদ্ধৃতি দিয়ে ওয়াশিংটন থেকে এএফপি জানায়, এক সময়ের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ধনকুবের ইলন মাস্কের সঙ্গে সম্পর্ক শেষ হয়েছে কি-না- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে শনিবার এনবিসি নিউজকে ট্রাম্প বলেন, হ্যাঁ, আমি তাই মনে করছি।
সেইসঙ্গে মাস্কের সঙ্গে সম্পর্ক পুনরুদ্ধার করতে চান কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প স্পষ্টভাবে ‘না না, কখনো না’ বলে দেন।
এছাড়া ২০২৬ সালে মধ্যবর্তী নির্বাচনে ইলন মাস্ক যদি ডেমোক্র্যাটদের অর্থায়ন করেন, তার জন্য কড়া সতর্কবার্তা দিয়েছেন ট্রাম্প।
তিনি বলেছেন, যদি ইলন তা করে, তাহলে তাকে অত্যন্ত করুণ পরিণতি ভোগ করতে হবে। অবশ্য কী ধরনের পরিণতি ভোগ করতে পারেন মাস্ক- সে সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করেননি ডোনাল্ড ট্রাম্প।
মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সও ইলন মাস্ককে সতর্কবার্তা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, টেসলা ও স্পেসএক্সের সিইও ইলন মাস্ক প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে মারাত্মক ভুল করেছেন।
বিশ্বের ক্ষমতাধর দুই ব্যক্তির মধ্যে বিরোধের বিষয়টি সামনে আসতে শুরু করে গত সপ্তাহে। গত মঙ্গলবার মার্কিন সরকারের কর ও ব্যয় নীতির সমালোচনা করে এটাকে ‘জঘন্য’ অভিহিত করেন মাস্ক।
বুধবার এ নিয়ে গুঞ্জন বাড়ে এবং বৃহস্পতিবার বিকালে এটি ওভাল অফিসে চরম উত্তেজনার বিষয়ে পরিণত হয়।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নতুন জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রেডারিক মার্জ সেদিনের অতিথি হিসেবে ওভাল অফিসে অস্বস্তিকর নীরবতায় বসে ছিলেন। আর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আচরণ ছিল প্রত্যাখ্যাত প্রেমিকের মতো!
তার প্রশাসন প্রণীত আইন নিয়ে মাস্কের সমালোচনায় বিস্ময় প্রকাশ করেন ট্রাম্প। মাস্কের শত শত মিলিয়ন ডলারের সমর্থন না থাকলে তিনি গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হেরে যেতেন- এ ধারণারও বিরোধিতা করেন ট্রাম্প।
ট্রাম্প এটাও বলেছেন, মাস্ক এখন তার সুর পরিবর্তন করছেন। কারণ, তার গাড়ি কোম্পানি টেসলা, বৈদ্যুতিক যানবাহনের পেছনে করছাড় বন্ধের বিষয়ে রিপাবলিকানদের চাপে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
এরপর মাস্ক তার মালিকানাধীন সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেল এক্স-এ দ্রুত লিখেছেন, হোয়াটএভার। মানে- যাই হোক না কেন, গাড়ির ভর্তুকি নিয়ে তিনি চিন্তিত নন।
তিনি জাতীয় ঋণ সঙ্কুচিত করতে চান, যেটিকে তিনি জাতির জন্য একটি অস্তিত্বগত হুমকি বলে মনে করছেন। সঙ্গে তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, তার সাহায্য ছাড়া গত বছরের নির্বাচনে রিপাবলিকানরা হয়তো জয় পেতো না।
তিনি ট্রাম্পকে ইঙ্গিত করে বলেছেন, ‘এত অকৃতজ্ঞতা’। এরপর একের পর এক আক্রমণাত্মক বক্তব্য দেওয়া শুরু করেন এই বিলিয়নেয়ার এবং বিবাদ তীব্রভাবে চলতে থাকে। শেষমেশ ট্রাম্প জানিয়ে দিলেন, মাস্কের সঙ্গে তার সম্পর্ক শেষ।
সাননিউজ/ইউকে