মো. নাজির হোসেন, মুন্সীগঞ্জ: মুন্সীগঞ্জ শহরের উপকন্ঠে ধলেশ্বরী নদীর তীরে ভোর হতেই শুরু হয় কেনা-বেঁচার হাঁকডাক। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে পাইকারদের আনাগোনা। সন্ধ্যা পর্যন্ত আনাগোনার যবনিকাপাত শেষে বাড়ি ফেরেন পাইকাররা। চাহিদার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রয়েছে পর্যাপ্ত মজুদ।
আরও পড়ুন: ৩ বিভাগে বজ্রবৃষ্টির আভাস
তরমুজ বেচাকেনার এমনই এক পাইকারী হাট বসে থাকে শহরের উপকন্ঠ মুক্তারপুর এলাকার ধলেশ্বরীর তীরে। এ হাটে কোটি টাকার তরমুজ বিক্রি হচ্ছে প্রতিদিন।
শনিবার (২৩ মার্চ) সরেজমিনে পাইকারী হাটের ১৩টি আড়ত ঘুরে জমাজমাট বেচাকেনার চিত্র দেখা গেছে। ভোরের আলো ফুটতেই পাইকারদের পদচারণা চোখে পড়ে। বেলা ১১ টার দিকে পাইকারদের ভীড়ে মুখর হয়ে ওঠে পুরো হাট।
আরও পড়ুন: জাহাজে বিমান বিধ্বংসী অস্ত্র বসানো হয়েছে
ধলেশ্বরী তীরের এ হাটে ট্রলারে ছাড়াও সড়ক পথে ট্রাকে করে তরমুজ আসে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে। হাটের একেকটি আড়তের সামনে থরে থরে সাঁজানো হয়ে থাকে হাজারো পিস তরমুজ। এরপর ৫০-১০০ পিস তরমুজের স্তুপ করে বিক্রির জন্য ডাক দেয়া হয়। সেখানে অংশ নেন আগত পাইকাররা।
এ হাট থেকে পাইকারদের কেনা একেকটি বড় সাইজের তরমুজের দাম পড়ে ৪০০-৫০০ টাকা। মাঝারি সাইজের দাম পড়ে ২৫০-৩৫০ টাকা ও ছোট সাইজের একেকটি তরমুজের দাম পড়ে ৮০-১০০ টাকা।
আরও পড়ুন: বগুড়ায় আগুনে ১২ দোকান পুড়ে ছাই
আড়তদাররা জানিয়েছেন, বরিশাল, ফরিদপুর, পটুয়াখালী, বরগুনা ও ভোলাসহ দেশের বিভিন্ন উৎপাদনকারী অঞ্চল থেকে এ হাটে তরমুজ আসে। তবে এ হাটে পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীর জনপ্রিয় তরমুজের সমারোহ বেশি থাকে। প্রতিদিন প্রায় এক লাখ পিস তরমুজ আসে এ হাটে।
তাছাড়া মুন্সীগঞ্জ ছাড়াও দেশের ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, দোহার ও গাজীপুর থেকে পাইকাররা এ হাটে তরমজু কিনতে আসেন।
আরও পড়ুন: ঢাকার বাতাস অস্বাস্থ্যকর
মুক্তারপুর পাইকারী হাটের মায়ের দোয়া আড়তের স্বত্বাধিকারী মো. জনি গাজী জানান, তার নিজের আড়তে প্রতিদিন ১০-১২ লাখ টাকার তরমুজ বিক্রি হয়। তার মতোই প্রতিটি আড়তে ১০-১৫ লাখ টাকার তরমুজ বিক্রি হয়ে থাকে। কাজেই সব আড়ত মিলিয়ে এ হাটে কোটি টাকার তরমুজ বিক্রি হয়।
পটুয়াখালী রাঙ্গাবালীর কৃষক গোবিন্দ চন্দ্র দাস জানান, সবে মাত্র জমি থেকে তরমুজ উত্তোলন শুরু হয়েছে। তাই মৌসুমের শুরুতে বিশেষ করে রোজায় চাহিদা বেশি থাকায় দাম একটু বেশি।
আরও পড়ুন: ট্রলারডুবিতে ১ জনের মৃত্যু, নিখোঁজ ৮
এ বছর চারা আবাদের পরপরই ভারি বৃষ্টি হওয়ায় ২৫ ভাগের মতো চারা গাছ নষ্ট হয়ে গেছে। তাছাড়া তরমুজ আনতে পরিবহন খরচ অনেক বেড়েছে। এছাড়া শ্রমিক ও সারসহ সবকিছুর দাম বেশি থাকায় এ বছর প্রতিটি তরমুজ উৎপাদনে খরচ বেশি পড়েছে। তবে এখন দাম বেশি হলেও সামনে দাম কমে যাবে।
মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ি উপজেলার বালিগাঁও বাজারের পাইকার বিল্লাল হোসেন বলেন, আমি সপ্তাহে দু’বার এ হাটে তরমুজ কিনতে আসি। এখানে প্রচুর পরিমাণে তরমুজ ওঠে এবং সারাদিনই তরমুজ পাওয়া যায়।
এখানে সব সাইজের তরমুজ পাওয়া যায়। তাই দূর-দূরান্তের পাইকাররা এখানে ছুটে আসেন। পছন্দ অনুযায়ী তরমুজ কেনার উপযুক্ত এ হাট।
সান নিউজ/এনজে