সংগৃহীত
ফিচার
মাসে আয় লাখ টাকা

ফুলের চারায় ইমরানের বাজিমাৎ!

নিজস্ব প্রতিনিধি: সাত বছর আগে মাত্র একটি বেলি ফুলের চারা দিয়ে যাত্রা শুরু হয়েছিল। তার ফুল গাছের সংগ্রহশালা দিনে দিনে বড় হতে থাকে। সময়ের ব্যবধানে গড়ে ওঠে ফুলের বিশাল ছাদ বাগান। এতেই তার বাজিমাৎ হয়ে যায়। এখন প্রতিমাসে ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা তার আয়।

আরও পড়ুন: জ্বালানি খরচ বৃদ্ধি, হুমকিতে কৃষিক্ষেত্র

শুনতে অবাক লাগলেও ১৬ বছরের কিশোর উদ্যোক্তা শরীয়তপুরের ইমরান আহম্মেদ ছাদ বাগান করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন।

সদ্য মাধ্যমিকের গণ্ডি পার করা ইমরানের সংগ্রহে রয়েছে ৩০০ প্রজাতির জবাসহ প্রায় ১ হাজার প্রজাতির ফুলের গাছ। এর মধ্যে আছে ‘ফরমোসা ব্ল্যাক পায়েল’ নামের একটি কালো প্রজাতির জবা। যা বাংলাদেশের অন্য কোনো নার্সারিতে নেই বলেও দাবি করেন এই কিশোর।

জানা যায়, কিশোর উদ্যোক্তা ইমরান আহম্মেদ শরীয়তপুর পৌর এলাকার ১ নং ওয়ার্ডের দুবাই প্রবাসী আবুল বাসার ও কাজী শিউলী আক্তারের একমাত্র ছেলে । মজিদ জরিনা ফাউন্ডেশন স্কুল অ্যান্ড কলেজে পড়াশোনা করছেন। লেখাপড়া পাশাপাশি বাড়ির ছাদে গড়ে তুলেছে ফুলের বাগান।

ছোটবেলা থেকেই তার ফুলের প্রতি ভালোবাসা। তবে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ার সময় আত্মীয়ের বাসা থেকে একটি বেলি ফুলের চারা এনে রোপণ করে। চারাটি বড় হয়ে ফুল দেওয়া শুরু করলে ফুলের গাছ লাগাতে আরও আগ্রহী হন।

আরও পড়ুন: বাগেরহাটে নান্দনিক পানির ফোয়ারা উদ্বোধন

এরপর বাড়ির উঠানসহ খালি জায়গায় বিভিন্ন ফুলের চারা সংগ্রহ করে লাগানো শুরু করেন। নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় একটি ফেসবুক পেজে ফুলের চারা বিক্রি করতে দেখে আরও উৎসাহিত হন। চিন্তা করেন নিজেই হবেন উদ্যোক্তা। এমন চিন্তা থেকে ‘আল ইমরান নার্সারি শরীয়তপুর’ নামে একটি ফেসবুক পেজ তৈরি করে চারা বিক্রি শুরু। এরপর থেকেই শুরু হয় তার আয়।

ক্রেতাদের মধ্যে বিভিন্ন জাতের জবা ফুলের প্রতি আগ্রহ থাকায় এক বড় ভাইয়ের মাধ্যমে ভারতের কলকাতা থেকে সংগ্রহ করেন জবার অস্ট্রেলিয়ান, আমেরিকান, ব্যাঙ্গালুর, ট্রপিক্যাল প্রজাতির কালো, খয়েরি, হলুদ, লাল, গোলাপিসহ প্রায় ৩ শতাধিক রঙের চারা।

ইমরান পড়াশোনার পাশাপাশি এসব জাতের বিভিন্ন চারা উৎপাদন করে ৬৪ জেলায় বিক্রি করছে। একেকটি চারা প্রজাতিভেদে বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ১৫০০ টাকা। এতে প্রতি মাসে গড়ে আয় করছে ৬০ হাজার টাকা।

আরও পড়ুন: দুর্গাপূজাকে ঘিরে হাকিমপুরে ব্যস্ত কারিগররা

ইমরান আহম্মেদের বাড়ির ছাদের পুরো অংশে শোভা ছড়াচ্ছে হলুদ, লাল, গোলাপি, সাদা জবাসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফুল। রোদ থেকে গাছগুলোকে সুরক্ষিত রাখতে তৈরি করা হয়েছে প্ল্যাস্টিকের ছাউনি। দক্ষ হাতে গাছগুলোকে পরিচর্যা করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন ইমরান।

কিশোর উদ্যোক্তা ইমরান জানান, ‘ফুলের প্রতি ভালোবাসা থেকে বিভিন্ন জায়গা ও বৃক্ষমেলা থেকে ফুল গাছ এনে বাড়ির ফাঁকা জায়গায় আর ছাদে লাগানো শুরু করি। এতে আমার সংগ্রহে বিভিন্ন রকমের ফুল গাছ চলে আসে।

একদিন অনলাইনে ফুল গাছ বিক্রির বিষয়টি নজরে আসে। নিজের হাতখরচ জোগাতে আমিও ফুল গাছ বিক্রি শুরু করি। ক্রেতাদের মধ্যে জবার ফুল গাছের চাহিদা দেখতে পেয়ে ভারত থেকে বিভিন্ন রকমের জবা আনাই। বর্তমানে অনলাইন ও অফলাইনে চারা বিক্রি করে প্রতি মাসে ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা আয় হয়।

আরও পড়ুন: দাম না পেয়ে পুঁজি হারানোর শঙ্কায় পাটচাষিরা

আমার একটাই ইচ্ছা, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জবা ফুলের প্রজেক্ট করা। এছাড়া আমার জবা ফুলের পাশাপাশি বাগান বিলাস আর এডোনিয়ামের সংগ্রহশালা গড়ার ইচ্ছা আছে।’

ইমরানের খালা সেতারা বেগম জানান, ইমরানের ছোটবেলা থেকেই ফুল গাছ লাগানোর প্রতি একটা আলাদা টান ছিল। পড়াশোনার পাশাপাশি ও ছাদে বাগান করা শুরু করে। বর্তমানে নিজেই আয় করে পড়াশোনা চালাচ্ছে। পাশাপাশি বাগানটিও বড় করেছে। বর্তমানে ওর বয়সী ছেলেমেয়েরা মোবাইল ফোনে গেমস খেলে সময় কাটায়। ও ব্যতিক্রম কিছু করছে। এটি আমাদের জন্য সত্যিই গর্বের।

আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দিতে ব্যতিক্রমী চেয়ার তৈরি

শরীয়তপুর পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর বেপারি জানান, আমি ইমরানের বিষয়ে এরই মধ্যে জানতে পেরেছি। ছাদ বাগানে বিভিন্ন প্রজাতির ফুলের চারা লাগিয়ে পাশাপাশি বিক্রি করে সাড়া ফেলে দিয়েছে ছেলেটি। ওর উদ্যোগটি বেশ ভালো। ইমরানের উদ্যোগটি নতুন প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণা হতে পারে বলে আমি মনে করি।

সান নিউজ/এইচএন

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

কোচিং সেন্টারে মিলল বিপুল অস্ত্র-বিস্ফোরক

রাজশাহী নগরীর কাদিরগঞ্জ এলাকায় একটি বাড়ি থেকে অস্ত্র ও বিস্ফোরক তৈরি সরঞ্জাম...

সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের জামিন ও মামলা বাতিলের আবেদনের শুনানি পেছাল

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে যুবদলকর্মী আবদুল কাইয়ুম হত্য...

কোনো চাঁদাবাজকে বাংলাদেশে থাকতে দেওয়া হবে না : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

কোনো চাঁদাবাজকে বাংলাদেশে থাকতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র...

‘গোপন রাজনীতি’, ছাত্রশিবির ও ডাকসু নির্বাচন নিয়ে উত্তপ্ত ঢাবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গেস্টরুম সংস্কৃতি এবং এই কেন্দ্রিক নির্যাতন গত ১৫ বছরে ছি...

আলাস্কায় ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক শেষ, যুদ্ধ স্থগিতের ঘোষণা নেই

যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট...

চিকিৎসক নেতা নারায়ণ হত্যায় ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড

জাতীয় বক্ষব্যাধি হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ও স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বা...

ভরাডুবির ভয়ে কিছু খুচরা পার্টি নির্বাচন চাচ্ছে না: দুদু

নির্বাচন হলে যাদের ভরাডুবি হবে তারাই নির্বাচন চাচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন বি...

রিকশাচালককে কীসের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার, ধানমন্ডি থানার ওসির ব্যাখ্যা তলব

রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ থেকে রিকশাচালক আজিজুর রহমানকে কীসের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার ক...

প্রধান উপদেষ্টা নিজে ক্লিয়ার করেছেন, নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতেই হবে: রিজওয়ানা

নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতেই হবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ ও বন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা...

জুলাই সনদে ‘ধর্মনিরপেক্ষতার’ অবস্থান অস্পষ্ট: ডেভিড বার্গম্যান

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে জুলাই জাতীয় সনদের সমন্বিত খসড়া পাঠিয়...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা