আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পৃথিবীর অন্যতম দ্বীপরাষ্ট্র ও ইউরোপের স্ক্যান্ডিনেভীয় অঞ্চলের দেশ আইসল্যান্ডে ৩৪ ঘণ্টার ব্যবধানে ২২০০ বারের বেশি ভূমিকম্প হয়েছে। এতে অগ্ন্যুৎপাতের সম্ভাবনা থাকায় জরুরি অবস্থা জারি করেছে দেশটির সরকার।
আরও পড়ুন: গাজায় হত্যা বন্ধের আহ্বান ম্যাক্রোঁর
শনিবার (১১ নভেম্বর) মার্কিন সংবাদ মাধ্যম সিএনএন এ তথ্য জানিয়েছে।
আইসল্যান্ডের আবহাওয়া অফিস বলছে, বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) দুপুর পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ১৪০০ বার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। এর মধ্যে ৭ টি ভূমিকম্প ৪ বা তার বেশি মাত্রার ছিল।
গতকাল প্রথম ১৪ ঘণ্টায় ৮০০ বার ভূমিকম্প হয়েছে। এ দিন দেশটির গ্রিন্ডাভিকের উত্তরে সবচেয়ে বড় কম্পনের মাত্রা ছিল ৫.২। ঐ এলাকার সুন্ধনজুকাগিগারে তীব্র ভূমিকম্পের কারণে নাগরিক প্রতিরক্ষার জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন জাতীয় পুলিশ প্রধান।
নাগরিক সুরক্ষা ও জরুরি ব্যবস্থাপনা বিভাগের বিবৃতিতে বলা হয়, ছোট ভূমিকম্পগুলো বড় হতে পারে। এ সিরিজ ভূমিকম্পগুলো বিস্ফোরণের দিকে নিয়ে যেতে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: গাজায় ১০ মিনিটে ১ শিশু নিহত
ভূমিকম্পের ফলে কয়েক দিনের মধ্যে অগ্ন্যুৎপাত ঘটতে পারে বলে সতর্ক করেছে আইসল্যান্ডিক মেট অফিস (আইএমও)। এ কারণে গ্রিন্ডাভিক গ্রামের ৪ হাজার মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার (১০ নভেম্বর) আইসল্যান্ডের রাজধানী রিকজাভিক থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে ২ টি শক্তিশালী ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এতে দেশটির দক্ষিণ উপকূলের বেশির ভাগ অংশে বড় ধরনের ঝাঁকুনি হয়েছিল।
আইএমওর প্রাথমিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গ্রিন্ডাভিকের উত্তরে সবচেয়ে বড় কম্পনের মাত্রা ছিল ৫.২। এ ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর গ্রিন্ডাভিকের উত্তর-দক্ষিণে চলমান একটি রাস্তা বন্ধ করে দেয় পুলিশ।
গতকাল মধ্য রাত থেকে দুপুর ২ টা পর্যন্ত প্রায় ৮০০ টি ভূমিকম্প নিবন্ধন করা হয়। অক্টোবরের শেষ থেকে এ সময় পর্যন্ত মোট প্রায় ২৪০০০ কম্পন নিবন্ধন করা হয়েছে বলে জানায় সংস্থাটি।
আরও পড়ুন: ১১ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত
এছাড়া প্রায় ৫ কিলোমিটার গভীরতায় ভূগর্ভস্থ ম্যাগমা জমার কথা উল্লেখ করা হয়েছে, যা পৃষ্ঠের দিকে অগ্রসর হতে শুরু করলে আরও অগ্ন্যুৎপাত হবে বলে জানায় সংস্থাটি।
আইএমও বলছে, ম্যাগমাকে ভূপৃষ্ঠে পৌঁছাতে কয়েক দিন সময় লাগতে পারে।
এদিকে নাগরিক সুরক্ষা বিভাগ জানিয়েছে, নিরাপত্তার জন্য টহল জাহাজ থরকে গ্রিন্ডাভিকে পাঠানো হচ্ছে। এছাড়া দক্ষিণ আইসল্যান্ডের ৩ টি স্থানে তথ্য ও চলাচলে সহায়তার জন্য জরুরি আশ্রয় ও সহায়তা কেন্দ্র খোলা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ফের বেড়েছে করোনা
সতর্কতা হিসেবে গ্রিন্ডাভিকের কাছের ব্লু লেগুন পর্যটন স্পট ও জিওথার্মাল স্পা গত বৃহস্পতিবার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি কাছের রেকজেনেস উপদ্বীপের ৩০ হাজার বাসিন্দাদের বিদ্যুৎ ও জলের প্রধান সরবরাহকারী জিওথার্মাল প্ল্যান্টও বন্ধ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, আইসল্যান্ডে রয়েছে ৩৩ টি সক্রিয় আগ্নেয়গিরি, যা ইউরোপে সর্বোচ্চ। ২০২১ সালের শুরু থেকে জুলাই ২০২৩ পর্যন্ত রেকজেনেস উপদ্বীপে ৩ টি অগ্ন্যুৎপাত হয়।
আগ্নেয়গিরিবিদদের মতে, আগ্নেয়গিরি বাড়ার নতুন চক্র কয়েক দশক বা শতাব্দী ধরে চলতে পারে।
এর আগে ২০১০ সালের এপ্রিলে আইসল্যান্ডের আরেকটি আগ্নেয়গিরিতে ব্যাপক অগ্ন্যুৎপাতের ফলে দ্বীপের দক্ষিণে আইজাফজাল্লাজোকুল এলাকায় ১০ মিলিয়নেরও মানুষ আটকা পড়ে। সূত্র: সিএনএন
সান নিউজ/এনজে