দোহা, কাতার: ১৮ সেপ্টেম্বার, ২০২৫ ইং বৃহস্পতিবার বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে ‘বাংলাদেশ মাশহুর-উল হক স্মৃতি উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল ও কলেজে অনুষ্ঠিত হলো ‘বার্ষিক চারু ও কারুকলা এবং বিজ্ঞান মেলা-২০২৫’। ফিতা কেটে এ মেলার উদ্বোধন ঘােষণা করেন অত্র প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি এবং কাতারস্থ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত জনাব মোহাম্মদ হযরত আলী খান।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যদরে মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠানের পরিচালক লে. কমান্ডার (অব.) জনাব আনোয়ার খুরশীদ, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জনাব এটিএম আসাদুজ্জামান, ভারপ্রাপ্ত উপাধ্যক্ষ জনাব মোঃ রাশেদ চৌধুরী, প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদের সদস্যবৃন্দ, প্রতিষ্ঠাতা সদস্যবৃন্দ, শিক্ষক-অভিভাবক সংগঠনের সদস্যবৃন্দ, শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ, অভিভাবকবৃন্দ, ইলেকট্রনিক্স ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকসহ বিপুল সংখ্যক দর্শনার্থী।
কেজি ওয়ান থেকে পঞ্চম শ্রেণি র্পযন্ত ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের নিয়ে চারু ও কারুকলা প্রদর্শনী এবং ষষ্ঠ থেকে একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিজ্ঞান মেলার আয়োজন করা হয়।
শিক্ষার্থীদের সুপ্ত উদ্ভাবনী প্রতিভাকে বাস্তবে রূপ দিতে এবং সৃজনশীল কর্মকাণ্ডকে উৎসাহিত করতে প্রতি বছর এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়। এ মেলায় প্রায় ৪৯০টি প্রজেক্ট নিয়ে ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করে। সারা বছর নিয়মিত পড়ালেখার মধ্যেই এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়। দেশের ইতহিাস-ঐতহ্যিকে সামনে রেখে চারু ও কারুকলা প্রর্দশনীর পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে বৈজ্ঞানিক মনোভাব সৃষ্টি ও নেতৃত্বের গুণাবলী অর্জন করাই এই আয়োজনের মূল লক্ষ্য। শিক্ষার্থীদের অনুসন্ধিৎসু মানসিকতা তথা বিজ্ঞানমনস্ক করে গড়ে তোলার পাশাপাশি নব উদ্যমে লেখাপড়ার সঙ্গে সৃষ্টিশীল কাজে অনুপ্ররেণা জোগাতে বাংলাদেশ স্কুল প্রতি বছর এই মেলার আয়োজন করে থাকে। সকাল ০৯:০০ টা থেকে ১২:০০ পর্যন্ত চলমান এ মেলার পরিবেশ ছিল অত্যন্ত উৎসবমুখর। প্রতষ্ঠিানরে সকল শিক্ষক ও শিক্ষার্থী উপস্থিত থেকে মেলায় অংশগ্রহণকারীদের উৎসাহিত করেছে এবং নিজেরা আনন্দ উপভোগ করেছে।
রাষ্ট্রদূত উদ্বোধনের পর মেলায় প্রদর্শিত শিশুদের চারু ও কারুকলা প্রর্দশনীর জন্য ধন্যবাদ জানান। খুদে বিজ্ঞানীদের বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারগুলো পরিদর্শন করেন এবং শিক্ষার্থীদের উৎসাহ প্রদান করেন। এ সময় তিনি অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনী চিন্তা ও প্রযুক্তিগত দক্ষতার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ‘প্রায় এক কোটি বাংলাদেশী প্রবাসে থাকে এবং তাদের মনে একটা স্বপ্ন কাজ করে। সেই স্বপ্নরে বাস্তবরূপ আজকের এই বিজ্ঞান মেলা। ছোট ছোট শিক্ষার্থীরা খুব সুন্দরভাবে জুলাই আন্দোলন তুলে ধরেছে। যেমন আবু সাঈদের পুলিশের সামনে বুক পেতে দেওয়া, একজন যুদ্ধাহত জুলাই যোদ্ধাকে রিক্সায় করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া, মুগ্ধ পানি খাওয়াচ্ছে। মেয়ে শিক্ষার্থীরা আমাদের দেশের নারীদের কুসংস্কার, বয়ঃসন্ধিকালের সমস্যা এবং নারী অধিকার নিয়ে যে প্রকল্পগুলো তৈরি করেছে তা সত্যিই প্রশংসার যোগ্য। প্রবাসে অবস্থান করে এখানকার মেয়েরা আমাদের দেশের নারীদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করার জন্য যে প্রজেক্টগুলো উপস্থাপন করেছে তা আমাকে মুগ্ধ করেছে।’ তিনি আশা প্রকাশ করেন, এই আয়োজনের অভিনব প্রকল্পগুলোর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের প্রতিভা বিকশিত হবে এবং বিজ্ঞানমনস্ক জাতি গঠনে অসামান্য ভূমিকা রাখবে।’
মেলার পরিবেশ ছিল সুশৃঙ্খল, আনন্দঘন এবং উৎসবমুখর। শিশুদের নতুন নতুন উদ্ভাবন ও পরীক্ষণ প্রদর্শনের চেষ্টাকে উৎসবে আগত দর্শক অভিভাবক সবাই প্রশংসা করেন।
সান নিউজ/আরএ