নিজস্ব প্রতিবেদক : নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এখনো অনেক শ্রমিক নিখোঁজ রয়েছেন। তাদের সন্ধানে স্বজনরা সকাল থেকেই কারখানার সামনে আসতে শুরু করেছেন। স্বজনদের আহাজারিতে কারখানার পরিবেশ ভারী হয়ে উঠেছে।
এদিকে ১৬ ঘণ্টা পার হলেও কারখানার আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি। বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে আগুন নিয়ন্ত্রণে পর্যায়ক্রমে কাজ করেছে ডেমরা, কাঞ্চন, সিদ্ধিরগঞ্জ, আড়াইহাজার, নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকাসহ ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিট। আগুনের ব্যাপকতা কিছু কমায় শুক্রবার সকাল থেকে ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট কাজ করছে বলে জানা গেছে।
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত স্বপ্না আক্তার (৪৫), মীনা আক্তার (৪১) ও মোরসালিনসহ (২৮) তিনজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে নিহতের সংখ্যা আরও বেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে। এখনো ৭০-৮০ জন শ্রমিক ওই ভবনের ভেতরে রয়েছে বলে জানান কারখানার শ্রমিক ও নিখোঁজের স্বজনরা।
নিখোঁজ শ্রমিকদের স্বজন ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অগ্নিকাণ্ডের সময় ছয়তলা ভবনের চারতলার শ্রমিকরা কেউ বের হতে পারেননি। সিকিউরিটি ইনচার্জ চারতলার কেচি গেটটি বন্ধ করে রাখায় কোনো শ্রমিকই বের হতে পারেনি। প্রতিদিন ৪ তলায় ৭০-৮০ জন শ্রমিক কাজ করতেন। চতুর্থ তলার শ্রমিকদের ইনচার্জ মাহবুব, সুফিয়া, তাকিয়া, আমেনা, রহিমা, রিপন, কম্পা রানী, নাজমুল, মাহমুদ, ওমরিতা, তাছলিমাসহ প্রায় ৭০-৮০ জন শ্রমিকের খবর পাওয়া যাচ্ছে না।
এদিকে নিখোঁজ শ্রমিকদের স্বজনরা ফ্যাক্টরির সামনে এসে ভিড় করেছেন আপনজনের সন্ধানে। কারখানার সামনে নিখোঁজ স্বজনদের আহাজারিতে চারপাশ ভারী হয়ে উঠেছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কারখানার চারতলার ভবনের আগুন জ্বলতে দেখা গেছে। তাছাড়া ধীরে ধীরে আগুনের লেলিহান শিখা চারদিকে ছড়িয়েও পড়ছে। কারণ ভবনের পঞ্চমতলায় ছিল কেমিকেলের গোডাউন।
এ বিষয়ে কাঞ্চন ফায়ার সার্ভিসের ইনচার্জ শাহ আলম বলেন, মধ্যরাতে আগুন কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলেও সকাল ৬টার দিকে আবার কারখানার চার তলায় আগুন বাড়তে থাকে। আগুন নিয়ন্ত্রণের আগ পর্যন্ত কিছু বলা যাচ্ছে না। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট।
স্বজনরা অভিযোগ করে জানান, কারখানা কর্তৃপক্ষের অবহেলায় কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। তাছাড়া কারখানায় আগুন লাগার পরও কারখানা কর্তৃপক্ষ কেচি গেটের তালা না খোলায় শ্রমিকরা বের হতে পারেনি।
এ বিষয়ে ঢাকা ফায়ার সার্ভির সহকারী পরিচালক দিনোমনি শর্মাকে জিজ্ঞাসা করা হলে আপাতত তিনি এ ব্যাপারে কথা বলতে রাজী হয়নি।
ডেমরা ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো. ওসমান গনি বলেন, ডেমরা ফায়ার সার্ভিস অগ্নিকাণ্ডের শুরু থেকেই নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। সঙ্গে আরও ১৭টি ইউনিট কাজ করছে পর্যায়ক্রমে। কিন্তু কারখানার ছয়তলা এ ভবনটিতে পরিস্থিতি একটু জটিল মনে হচ্ছে। চেষ্টা চলছে আগুন নিয়ন্ত্রণ ও নির্বাপন করার।
সান নিউজ/এসএম