মাদারীপুরবাসী ঢাকা বিভাগ ছেড়ে প্রস্তাবিত ফরিদপুর বিভাগে না যাওয়ার দাবিতে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করেছেন।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টা থেকে মাদারীপুর সদর উপজেলার মস্তফাপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় মহাসড়কের ওপর ঘণ্টাব্যাপী এই অবরোধ পালন করা হয়। এ সময় মহাসড়কের উভয় পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। তবে যাত্রীদের কথা চিন্তা করে তারা নিজেরাই সড়ক অবরোধ তুলে নেন।
অবরোধকারীরা এদিন ‘মাদারীপুরের সীমানা ফরিদপুরে হবে না’, ‘ঢাকা বিভাগ ছাড়ব না, অন্য বিভাগে যাব না’—এমন স্লোগান দেন।
জানা যায়, মাদারীপুর জেলা যেন প্রস্তাবিত ফরিদপুর বিভাগের অন্তর্ভুক্ত না হয় এবং বর্তমানের মতোই ঢাকা বিভাগের সঙ্গে সংযুক্ত থাকে—এ বিষয়ে মাদারীপুর জেলার সর্বস্তরের জনগণ ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন। বিষয়টি সরকারের নীতিনির্ধারক মহলে কঠোর বার্তা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সড়ক অবরোধ করেন তারা।
বিক্ষোভ মিছিলে বক্তারা বলেন, মাদারীপুর জেলা ঐতিহাসিকভাবে, ভৌগোলিকভাবে এবং অর্থনৈতিকভাবে ঢাকার সঙ্গে গভীরভাবে সংযুক্ত। পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের পর জেলার সঙ্গে ঢাকার যোগাযোগ আরও সহজ ও দ্রুত হয়েছে, যা প্রশাসনিক ও জনসেবামূলক কার্যক্রমে ঢাকাকে কেন্দ্র করে একটি বাস্তব নির্ভরতা সৃষ্টি করেছে।
মাদারীপুরবাসীর মতে, স্থানীয় জনমতকে উপেক্ষা করে প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে তা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের পরিপন্থি হবে। তাই জনগণের ইচ্ছা ও বাস্তবতার আলোকে মাদারীপুর জেলার সর্বস্তরের মানুষ বিনীতভাবে সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই—মাদারীপুর জেলা যেন বর্তমানের মতোই ঢাকা বিভাগের সঙ্গেই সংযুক্ত থাকে। জেলার জীবনযাত্রা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান, ব্যবসা-বাণিজ্য ও প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড সবই ঢাকাকেন্দ্রিক। অপরদিকে, ফরিদপুরের সঙ্গে মাদারীপুরের দূরত্ব, সীমিত যোগাযোগব্যবস্থা ও অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতার কারণে নতুন বিভাগে অন্তর্ভুক্ত হলে জনগণের সময়, অর্থ ও ভোগান্তি বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন মাদারীপুর জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সহ-সংগঠক জহিরুল ইসলাম সানি, সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আশিকুল তামিম আশিক, সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক কিরণ আক্তার, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) মাদারীপুর জেলা শাখার সদস্য রুবেল মাহমুদ, জুলাই যোদ্ধা হাফেজ মোহাম্মদ আব্দুর রহিম ও নেয়ামুল হকসহ জেলার সর্বস্তরের জনগণ।
সাননিউজ/আরপি