শসা চাষে খরচ কম কিন্তু লাভ বেশি। শসা একটি সবজি জাতীয় খাবার। এটার চাহিদা পুরো বিশ্বজুড়ে। সবজিটিকে কেউ সালাদে আবার কেউ রূপচর্চায়, কেউ স্বাস্থ্য সচেতনতায় ব্যবহার করে থাকেন।
শসা বিভিন্ন সময় চাষাবাদ হয়ে থাকে তবে গ্রীষ্মের তপ্ত রোদে এই সবজির চাহিদা বেশি হয়ে থাকে। শহরে কিংবা গ্রামের শসার চাহিদা মেটায় প্রান্তিক কৃষক।
বিভিন্ন মানুষের সফলতা দেখে অনেকেই কৃষি পেশাতে আগ্রহী হচ্ছেন, তেমনি ইউটিউব দেখে শখের বসে বগুড়ার কাহালু উপজেলার মহিষমাড়া গ্রামের মানিক রহমান, তিনি মালচিং পদ্ধতিতে ৪০ শতক জায়গায় রাস্তার পাশে শসার আবাদ করেছেন। এখন পর্যন্ত শসা চাষে লাখ টাকা বিক্রির স্বপ্ন দেখছেন মানিক।
বুধবার (২৫ জুন) সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বাঁশের খুঁটি, নাইলন সুতা আর জিআই তার দিয়ে চারদিকে মাচা তৈরি করা হয়েছে। ছোট-বড় অসংখ্য শসা মাচায় ঝুলছে। যেদিকে চোখ যায় শসা আর শসা। শসা চাষে মানিকের এমন সাফল্য দেখে এখন স্থানীয় অনেকেই শসা চাষ করতে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।
কৃষক মানিক রহমান বলেন, প্রথমে আমি বিভিন্ন কৃষিকাজের সাথে জড়িত ছিলাম। একদিন ইউটিউব দেখতে দেখতে শসা চাষের ভিডিও সামনে আসে তারপর আজ থেকে ৩ বছর আগে পরিক্ষামূলকভাবে শসা চাষ করি। ভালো ফলন ও লাভ হওয়ায় ৪০ শতক জায়গায় চারা রোপন করি। সেবার খরচ হয়েছিল ৩০ হাজার আর বিক্রি করেছিলাম লাখ টাকারও বেশি।
তিনি আরো বলেন, এইবার একই জায়গায় চাষ করার সুবাদে খরচ হয়েছে মাত্র ১৫ হাজার, যা আগের তুলনায় অর্ধেক। এখন পর্যন্ত যা ফলন ধরেছে ইনশাআল্লাহ লাখ টাকা অনায়াসে হবে। আজ হারভেস্টিং করে ৪০ মন শসা উঠেছে। এখন একটু দাম কম হওয়ায় ৪০০ টাকা প্রতি মন বিক্রি করছি। প্রথম চালানে আমার খরচ উঠে এসেছে। এরপর যা বিক্রি করবো সব আমার লাভ থাকবে।
মানিকের শসা চাষ দেখে আশেপাশের অনেকেই চারা রোপন শুরু করেছেন। ছোট ছোট পরিসরে তারা শুরু করেছেন যাতে লোকসান দিতে না হয়। এই চাষাবাদে অনেকে পরামর্শ নিতে আসেন মানিকের কাছে। তিনি প্রতিষ্ঠিত শিক্ষায় শিক্ষিত না হলেও অনেককে দেখাচ্ছেন পথ।
শসা চাষ দেখে মহিষমাড়া গ্রামের নাঈম বলেন, আমি বেসরকারি কোম্পানিতে কাজ করি। মাঝে মাঝে মনে হয় চাকরি ছেড়ে কৃষি কাজে জড়িয়ে পড়ি। কৃষি কাজে কষ্ট অনেক তবে স্বাধীনতার দিক থেকে এক নাম্বার। মানিক সাহেব ভালো পরামর্শ দিয়ে থাকেন কৃষি বিষয়ে। তার এই শসা চাষে ভাগ্য বদলেছে।
একই গ্রামের আলফাজ উদ্দিন বলেন, মানিক আমাদের গ্রামের ছেলে। সে অনেক দিন যাবত কৃষি কাজের সাথে জড়িত। তার সুবাদে শসা চাষ করেছে। এখন যা দেখি এই চাষ করে অনেক টাকা রোজগার করতেছে। এটার পাশাপাশি আরো ফলের বাগান করতেছে মানিক।
কাহালু কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এই উপজেলায় রবি মৌসুমে ২৩ হেক্টর জমিতে শসা চাষ করা হয়েছিল,বর্তমান চলতি মৌসুমে ১০ হেক্টর জমিতে শসা চাষ করা হয়েছে।
কাহালু উপজেলা কৃষি অফিসার মোসাঃ জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, কৃষক যদি আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার করে, শসা চাষ করে লাভবান হওয়ার সংখ্যাটা বেশি, যেমন মালচিং পদ্ধতিতে শসা চাষ করে অনেক কৃষক লাভমান হচ্ছে ,শসা সহ সকল কৃষি পণ্যের ওপর পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি কৃষকদের।
সাননিউজ/ইউকে