রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়নের সাত্তার মেম্বার পাড়ায় বালুর চাতালের কারণে জমে থাকা পানিতে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। এতে প্রায় ১৮ থেকে ২০টি পরিবারের শতাধিক মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। বসতবাড়ির আঙিনা থেকে শুরু করে চলাচলের রাস্তাঘাট, এমনকি টয়লেট ও রান্নাঘর পর্যন্ত পানিতে ডুবে আছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, গোয়ালন্দ উপজেলা শ্রমিক দলের সভাপতি সরোয়ার হোসেন মোল্লা এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক উপজেলা সভাপতি জগোদিশ সরকার মালিকানাধীন বালুর চাতাল থেকে পানি আশপাশে ছড়িয়ে পড়ছে। ফলে বর্ষার শুরুতেই এলাকায় স্থায়ী জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় এক ভুক্তভোগী বলেন, “প্রতি বছর বর্ষা এলেই একই সমস্যা। পানিতে হাঁটুপানিতে ডুবে থাকে উঠান। মশা আর গন্ধে থাকা দায়। এখন তো শিশুদের ডায়রিয়া পর্যন্ত শুরু হয়েছে।”
তারা আরও জানান, রাজনৈতিক পরিচয়সম্পন্ন ব্যক্তিদের চাতাল হওয়ায় সরাসরি প্রতিবাদ করার সাহস পান না অনেকেই। দিনের পর দিন পানিবন্দি অবস্থায় থেকে স্বাস্থ্যঝুঁকি ও দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় নেমে এসেছে নাভিশ্বাস।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি জগোদিশ সরকার বলেন, “আমার চাতাল থেকে কোনো সমস্যা হয়নি। বরং সরোয়ার মোল্লা আমাদের জমি দখল করে চাতাল করেছেন, যেখানে পানি নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থাই নেই।”
অন্যদিকে, শ্রমিক দলের সভাপতি সরোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, “আমার চাতালে মাঝে মাঝে বালু রাখা হয়। সেখান থেকে পানি জমে না। বরং জগোদিশ সরকার প্রতিদিন ৫-৭টি বলগেট বালু নামায়। তার চাতালের পানিতেই এই জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে।”
বিষয়টি নিয়ে কথা বললে গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাহিদুর রহমান বলেন, “ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সত্যতা পেয়েছি। দুই পক্ষের বালুর চাতালের কারণে স্থানীয়দের দুর্ভোগ হচ্ছে। আমি তাদের স্পষ্ট বলে দিয়েছি—অন্যদের দুর্ভোগ সৃষ্টি করে কোনো ব্যবসা চলবে না। চাতাল মালিকদের পানি দ্রুত নিষ্কাশনের নির্দেশ দিয়েছি।”
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বৃষ্টির পরিমাণ আরও বাড়লে পুরো পাড়া পানিতে তলিয়ে যাবে। শিশু ও বৃদ্ধরা সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়বেন। তারা দ্রুত স্থায়ী পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছেন।
সাননিউজ/ইউকে