বাণিজ্য

সম্ভাবনাময় আসবাবশিল্প; প্রয়োজন সুদৃষ্টির

ফাহিম মোরশেদ শোভন:

শুধু দেশেই নয় দেশের বাইরে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পাচ্ছে বাংলাদেশে তৈরি ফার্নিচার। গত ১০ বছরে দেশে ফার্নিচারের রপ্তানি বেড়েছে প্রায় ১০ গুণ। বিশ্বমানের এসব আসবাবপত্র রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করলেও যথাযথ উদ্যোগের অভাবে বিশ্বের প্রতিযোগিতামূলক বাজারে এখাতে বাংলাদেশ নিজের অবস্থানকে সুসংহত করতে পারছে না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য মতে, গত অর্থবছর আসবাবপত্র রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬ কোটি ১০ লাখ ডলার। এর বিপরীতে আয় হয় ৬ কোটি ৩১ লাখ ডলার। সুতরাং লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ২১ লাখ ডলারের বেশি আয় এসেছে।

এদিকে চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) ৩ কোটি ৩৭ লাখ ইউএস ডলারের আসবাবপত্র রপ্তানি হয়েছে, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৪০ দশমিক ৫৬ শতাংশ বেশি। চলতি অর্থবছরের ছয় মাসে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ কোটি ৩৭ লাখ ডলার। সেই হিসাবে লক্ষ্যমাত্রার পুরোটাই অর্জিত হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারের যথাযথ সমর্থন পেলে ২০২২ সালে দেশের ফার্নিচার রপ্তানি ১০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে। ফার্নিচার খাত নিয়ে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ফাউন্ডেশনের (এসএমই) সহায়তায় পরিচালিত এক গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে। তাদের মতে, কর কাঠামো পুনর্বিবেচনা, উদ্যোক্তাদের ঋণ সহায়তা, আলাদা ফার্নিচার শিল্প পার্ক প্রতিষ্ঠা, ভ্যাট কাঠামো সহজ করা এবং এই খাতের উদ্যোক্তা ও কর্মীদের দক্ষতা বাড়ানো গেলে চীনের দখলে থাকা ফার্নিচার বাজারের একটা বড় অংশ দখলে নিতে পারবে বাংলাদেশ।

গবেষণা বলছে, বিশ্বে ৪৮ হাজার ৭০ কোটি ডলারের ফার্নিচারের বাজারের ৩১ দশমিক ৭ ভাগই চীনের দখলে। ২০২৫ সালে বিশ্বে ফার্নিচার খাতের বাজার হতে পারে ৬৫ হাজার ৪৬০ কোটি ডলারের। এই বিশাল বাজারে গত অর্থবছরে মাত্র ৭ কোটি ৪৭ লাখ ডলারের ফার্নিচার রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ, যা বাংলাদেশের মোট রপ্তানির শূন্য দশমিক এক আট ভাগ। তবে ইতিবাচক দিক হলো- গত অর্থবছরে দেশের মোট রপ্তানি ১০ দশমিক ৫৫ ভাগ বাড়লেও ফার্নিচার রপ্তানি বেড়েছে ১৮ দশমিক ৫২ ভাগ।

এখাতে চীন একাই বিশ্ববাজারের প্রায় ৩২ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করলেও অভ্যন্তরীণ নানাবিধ কারণে গুটিয়ে নিচ্ছে তাদের ব্যবসা। সেই সুযোগে শ্রমঘন এই শিল্পে পোশাক খাতের মতোই সম্ভাবনা দেখছেন ব্যবসায়ী ও বিশেষজ্ঞরা।

আসবাবপত্র শিল্পকে আরো এগিয়ে নিতে কিছু প্রয়োজনীয় কাঁচামাল আমদানিতে শুল্কহার কমানোর দাবি ব্যবসায়ীদের। যদিও আসবাবপত্র রপ্তানিতে ১৫ শতাংশ নগদ সহায়তা দিচ্ছে সরকার। তারপরও রপ্তানি বাড়াতে বন্ড সুবিধা চান উদ্যোক্তারা। তারা বলছেন, আসবাব রপ্তানিতে সরকার ১৫ শতাংশ নগদ সহায়তা দিচ্ছে ঠিকই। কিন্তু তাতে খুব একটা লাভ হচ্ছে না। কারণ, আসবাবের সরঞ্জাম আমদানিতে ৫৫ থেকে ৬০ শতাংশ শুল্ক দিতে হয়। তাতে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা অর্জন করা যায় না।

দীর্ঘস্থায়িত্ব বিবেচনায় অবশ্য দেশিয় ভোক্তাদের এখনও পছন্দ কাঠের তৈরি আসবাবের। দেশের বনভূমিতে চাপ পড়তে থাকায় বর্তমানে সেগুন, টিকমেহগনি, ওক, চেরি প্রভৃতি কাঠ মিয়ানমার, নাইজেরিয়া, আইভরি কোস্ট ও দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আমদানি করা হয়। তবে কাঠের তৈরি আসবাবের নির্মাণ খরচ ও বিক্রয় মূল্য বেড়ে যাওয়ায় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিকল্প উপাদান (বিভিন্ন ধরনের বোর্ড) দিয়ে আসবাব তৈরি করছেন নির্মাতারা। সেগুন বা মেহগনি কাঠের চেয়ে বিকল্প উপাদান দিয়ে তৈরি এসব আসবাব সাশ্রয়ী হওয়ায় ভোক্তাদের কাছেও দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বড় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ছোট ও মাঝারি প্রতিষ্ঠানগুলো পারটেক্স, এমডি, লেমিনেটেড, পলিসহ বিভিন্ন ধরনের বোর্ড দিয়ে আসবাব তৈরি করছে। বর্তমানে অফিস, ঘরবাড়ি কিংবা হাসপাতালে এসব বোর্ডের আসবাব ব্যাপকহারে ব্যবহৃত হচ্ছে। তবে এসব বোর্ড বাংলাদেশে তৈরি হয় না। সাধারণত মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড ও চীন থেকে আমদানি করতে হয়। তাই দাম বেড়ে যায়।

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

আজ বিশ্ব বই ও কপিরাইট দিবস

সান নিউজ ডেস্ক: আজ ২৩ এপ্রিল, বিশ...

খাগড়াছড়িতে গৃহকর্মীকে জিম্মির অভিযোগ 

আবু রাসেল সুমন, খাগড়াছড়ি প্রতিনিধিঃ

কাতারের সঙ্গে ১০ চুক্তি-সমঝোতা সই 

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ ও কাতা...

আড়িয়ল ইউপিতে উপ-নির্বাচন

মো. নাজির হোসেন, মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি:

রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি দিবস

সান নিউজ ডেস্ক: আজকের ঘটনা কাল অতীত। প্রত্যেকটি অতীত সময়ের স...

কার্বণ মিল ও সীসা কারখানা বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন

কামরুল সিকদার, বোয়ালমারী প্রতিনিধি:

কক্সবাজারে দুই জেলের লাশ উদ্ধার 

জেলা প্রতিনিধি: কক্সবাজার জেলার চ...

আড়িয়ল ইউপিতে উপ-নির্বাচন

মো. নাজির হোসেন, মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি:

খাগড়াছড়িতে গৃহকর্মীকে জিম্মির অভিযোগ 

আবু রাসেল সুমন, খাগড়াছড়ি প্রতিনিধিঃ

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা