ঠাকুরগাঁও সংবাদদাতা : ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে অ্যান্টি ভেনম ভেকসিন না থাকায় অহরহ মরছে সাপে কাটা রোগী। শুক্রবার সকালে চিকিৎসা না পেয়ে সাপের কামড়ে ধনবালা (৭০) নামে একজন বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। মৃত ধনবালার বাড়ি ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রাজাগাঁও ইউনিয়নের রাজারামপুর বানিয়াপাড়া গ্রামে।
আরও পড়ুন : একদিনে আরও ১২ মৃত্যু, শনাক্ত ২১২৯
মৃত ধনবালার ছেলে জগদীশ চন্দ্র রায় বলেন, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আনুমানিক ৩টা ৩০ মিনিটে বৃদ্ধা ধনবালাকে (৭০) তার শয়ন ঘরে সাপে কাটে। তিনি ঘুমন্ত অবস্থায় মশারির ভেতর সাপ ঢুকে তাকে দংশন করলে তিনি সাপটিকে ধরে ফেলেন এবং লাইট জ্বলিয়ে সাপটি দেখতে পেয়ে চিৎকার দিলে পরিবারের লোকজন সাপটিকে আটকে রাখে।
চাল গোখরা সাপ কামড় দেওয়ায় ওই বৃদ্ধার স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় ওঁঝার কাছে নিয়ে ঝাড়ফুঁক করে। কিন্তু অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় তাকে ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু সেখানে ‘অ্যান্টি ভেনম’ ভ্যাকসিন না থাকায় চিকিৎসকরা রোগীকে দিনাজপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। সেখান থেকে দিনাজপুর মেডিক্যাল হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যায় বৃদ্ধা ধনবালা।
আরও পড়ুন : গণতন্ত্র হুমকির মুখে
উল্লেখ্য, ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল জেলার মানুষের চিকিৎসার একমাত্র ভরসাস্থল। গত ২ জুলাই কুরবানীর ঈদের ছুটিতে বাড়িতে এসে সাপের কাপড়ে মৃত্যু হয় দিনাজপুর হাজি দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ব বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী দিলিপ কুমারের। তার বাড়ি রানীশংকৈল উপজেলার ভেদাইল গ্রামে। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে বিধবা মা এখন অসহায় হয়ে পড়েছে। ৮ জুলাই ঘুমন্ত অবস্থায় হরিপুর উপজেলার গেদুরা ইউনিয়নের রাজাদীঘি গ্রামের খেলদার চন্দ্রের স্ত্রী প্রমিলা রানী (৪৭) সাপের কামড়ে মারা যায়। একই দিন রানীশংকৈল উপজেলার ধুমপুকুর গ্রামের চাপোয়া রামকে (৪০) সাপে দংশন করলে তাকে সদর হাসপাতালে আনা হয়। কিন্তু ভেকসিন না থাকায় তার মৃত্যু হয়। ২৩ জুন টেকিয়া মহেশপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমকে (৪৫) ঘুমন্ত অবস্থায় সাপে কামড় দেয়। স্থানীয় ওঁঝা চিকিৎসা না দেওয়ায় মারা যায় ওই রোগী।
আরও পড়ুন : রোমানিয়ায় বাংলাদেশিসহ আটক ৩২
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ফিরোজ জামান বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে সাপে কাটা রোগীর চিকিৎসার জন্য চাহিদা অনুযায়ী ভ্যাকসিনের সরবরাহ নেই। একাধিক বার উর্ধতন কর্মকর্তাকে ভেকসিনের চাহিদা দিয়ে আবেদন করেছি। কিন্তু পাচ্ছি না। আমাদের এখানে ভেকসিন সরবরাহ না থাকায় সাপে কাটা রোগীকে না রেখে দ্রুত দিনাজপুর কিংবা রংপুর যেতে বলা হয়।
এ ব্যাপারে সিভিল সার্জন ডা. নুর নেওয়াজ আহমেদ বলেন, এন্টি ভেনামের চাহিদা জানিয়ে মন্ত্রনালয়ে একাধিকবার তাগিদপত্র দেওয়া হয়েছে।
সান নিউজ/এমআর