ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:
অভিশংসিত হওয়া অন্যান্য মার্কিন প্রেসিডেন্টের মতো এবারও পার পেয়ে যাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দোষী সাব্যস্ত হবেন না-কি অব্যাহতি পাবেন, সিনেটাররা সেই রায় দেবেন আজ বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় বিকেল ৪টায়। এসময় সিনেটে দুটি আর্টিকেল অব ইমপিচমেন্টের ওপর ভোটাভুটি হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে তৃতীয় প্রেসিডেন্ট হিসেবে গত ডিসেম্বরে কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে অভিশংসিত হন ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটের বিচারে শেষ পর্যন্ত তিনি অব্যাহতি পাচ্ছেন বলে মনে করা হচ্ছে!
মার্কিন গণমাধ্যমগুলো বলছে, রিপাবলিকান সংখ্যাগরিষ্ঠ সিনেটে ট্রাম্প সহজেই খালাস পাবেন। কারণ কোনো প্রেসিডেন্টকে সিনেটের বিচারে অভিযুক্ত করে অপসারিত করতে ৬৭ সিনেটরের সমর্থন প্রয়োজন। কিন্তু ১০০ সিনেটরের মধ্যে রিপাবলিকান ৫৩ জন, ডেমোক্র্যাটদের আছে ৪৫ আর দুইজন সিনেটর হলেন স্বতন্ত্র। রিপাবলিকান সিনেটররা এক্ষেত্রে ট্রাম্পের পাশেই রয়েছেন।
প্রসঙ্গত, এর আগে প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন ও অ্যান্ড্রু জনসন অভিশংসিত হয়েছিলেন। তবে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, সিনেটে দোষী সাব্যস্ত না হওয়ায় কেউই ক্ষমতা থেকে অপসারিত হননি।
ট্রাম্প যে অব্যাহতি পাচ্ছেন সেটা ডেমোক্র্যাটরাও জানেন। ডেমোক্র্যাটিক সিনেটর জো মানচিন সিনেট ফ্লোরে দাঁড়িয়ে গতকাল বলেন, প্রেসিডেন্টকে অপসারণে ৬৭ ভোট প্রয়োজন। কিন্তু সেটা সম্ভব নয়। আমি মনে করি, সিনেটের উচিত প্রেসিডেন্টকে তার কাজের জন্য তিরস্কার করা।
সে রকমই ইঙ্গিত দিয়েছেন রিপাবলিকান সিনেটর লিসা মুরকাওস্কি। তিনি জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে অভিযুক্ত করে ভোট দেবেন না। তবে প্রেসিডেন্ট যে কাজ করেছেন সেটা লজ্জাজনক এবং অনৈতিক।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ:
কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ তার বিরুদ্ধে দুটি অভিযোগে সংখ্যাগরিষ্ঠ রায় দিয়েছে । একটি অভিযোগ হল, প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্প ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। আরেকটি হচ্ছে, তিনি কংগ্রেসের কার্যক্রমে বাধ সেধেছেন।
ইমপিচমেন্ট বা অভিশংসন কী:
যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে ইমপিচমেন্ট বা অভিশংসনের ঘটনা বিরল। এর মাধ্যমে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতায় ভারসাম্য রক্ষা করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের আইনসভা কংগ্রেস সদস্যরা দেশটির প্রেসিডেন্টসহ শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদেরকে বিচারের মুখোমুখি করতে পারেন।
দেশটির সংবিধানে বলা আছে, বেশ কিছু অপরাধের জন্যে প্রেসিডেন্টকেও তার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া অর্থাৎ ইমপিচ করা যেতে পারে।
অপরাধগুলো হল, রাষ্ট্রদ্রোহিতা, ঘুষ নেওয়া অথবা অন্য কোন বড় ধরনের কিম্বা লঘু অপরাধ।
কিভাবে করা হয় ইমপিচমেন্ট:
ইমপিচমেন্টের প্রক্রিয়া শুরু হতে হবে যুক্তরাষ্ট্রের হাউজ অব রিপ্রেজেনটেটিভস অর্থাৎ প্রতিনিধি পরিষদ বা নিম্নকক্ষ থেকে।
প্রক্রিয়া শুরু করার জন্যে এটি সেখানে সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় পাস হতে হয়।
আর সেটা পাস হলে পরবর্তীতে চূড়ান্ত বিচার অনুষ্ঠিত হবে কংগ্রেসের উচ্চক্ষ সিনেটে ।
উচ্চকক্ষ অর্থাৎ সিনেট সদস্যরা এখানে বিচারক বা জুরি হিসেবে কাজ করবেন।
প্রেসিডেন্টকে তার পদ থেকে সরিয়ে দিতে হলে ইমপিচমেন্টের পক্ষে ভোট দিতে হবে দুই-তৃতীয়াংশ সিনেটরকে ।
Newsletter
Subscribe to our newsletter and stay updated.