প্রবাস

১০ লাখ টাকা দিতে বলেছিল লিবিয়ার জিম্মিকারীরা

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ

ছেলে জিম্মি আছে শুনেই ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিতে সাথে সাথে রাজি হয়ে যান মা। তবুও শেষ রক্ষা হল না ছেলের। লিবিয়ায় মানব পাচারকারীদের গুলিতে প্রাণ হারায় যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার খাটবাড়িয়া গ্রামের রাকিবুল ইসলাম রকি। তার নির্মম মৃত্যুর খবরে শোকাবহ হয়ে গেছে পুরো গ্রাম। মা মাহিরুন নেছার কান্নায় ভারী হয়ে আছে পরিবেশ।

রকিদের বাড়িতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, একটি টিন শেডের ঘরের সামনে উঠোনে হাউমাউ করে কাঁদছেন তার মা মাহিরুন নেছা। তিনি বলেন, 'ভিটেবাড়ি বেঁচে ১০ লাখ মুক্তিপণ দিয়ে রাস্তাতেই থাকতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ওরা আমার সোনারে বাঁচতে দিলো না।' পাশেই একটি চেয়ারে রকির বাবা ঈসরাইল হোসেন দফাদারকে বসিয়ে রেখেছেন কয়েকজন। প্রিয় সন্তান হারানোর শোকে পাথর তিনি। কাঁদতেও যেন ভুলে গেছেন। ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে আছেন।

পরিবারের ছোটছেলে রাকিবুল ইসলাম রকি। সংসারে সচ্ছলতা ফেরাতে মাত্র ২০ বছর বয়সে পাড়ি জমান লিবিয়ায়। ভিটেবাড়ির একাংশ বিক্রি ও এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে দালালের মাধ্যমে এই বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি বাড়ি ছাড়েন তিনি। বেনগাজি থেকে ত্রিপোলিতে চাচাতো ভাইয়ের কাছে যাওয়ার কথা ছিল তার।

রকির বড় ভাই সোহেল রানা জানান, তারা চার ভাই বোন। রকি সবার ছোট। সে যশোর সরকারি সিটি কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিল।

১৫ মে রকি দালালের সঙ্গে বেনগাজি থেকে রওনা হয় ত্রিপোলির উদ্দেশ্যে। পথে কাছাকাছি মিজদাহ নামক স্থানে ১৭ মে তারা অপহরণকারীদের হাতে জিম্মি হয়।

সোহেল রানা আরও জানান, পরের দিন সন্ধ্যায় তার কাছে বাংলাভাষী একজন ফোন করে। সেই ব্যক্তি নিজের পরিচয় না দিয়ে রকির মুক্তির জন্য ১২ হাজার ইউএস ডলার অথবা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১০ লাখ টাকা দাবি করে। এসময় অপহরণকারীরা তার সঙ্গে রকির কথা বলিয়ে দেয়। রকি সোহেলকে জানায় তাকেসহ অন্য জিম্মিদের অপহরণকারীরা খুব নির্যাতন করছে এবং টাকা না দিলে হত্যা করবে। এরপর প্রতিদিনই অপহরণকারীরা রকিকে নির্যাতন করে টাকার দাবিতে ফোন করাতো এবং দুবাইয়ের একটি অ্যাকাউন্টে টাকা জমা করতে বলতো। একপর্যায়ে ১০ লাখ টাকা দিতেও রাজি হয়েছিল পরিবার এবং ১ জুন টাকা দেওয়ার সময় নির্ধারিত হয়েছিল।

সোহেল রানা জানান, গত বৃহস্পতিবার (২৮ মে) রাতে রকি তাকে ফোন দেয়। একইসঙ্গে ঘটনাস্থলের গুগল ম্যাপের ছবিও পাঠায়। ফোনে রকি অপরহণকারীদের সঙ্গে জিম্মিদের মারামারির ঘটনা জানিয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠাতে বলে। এরপর শুক্রবার বেলা ১২টার দিকে অপহরণকারীদের হাতে জিম্মি হওয়া আহত মাগুরার তরিকুলের মাধ্যমে রকির মৃত্যু সংবাদ পান বলেও জানান সোহেল।

রকির মরদেহ ফিরিয়ে আনতে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন নিহত রকির বড় ভাই সোহেল।

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে লঞ্চের পর ফেরি চলাচলও বন্ধ

বৈরী আবহাওয়ার কারণে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সকাল থেকে শু...

নীলফামারীতে আবির নামে ভুয়া সেনাসদস্য গ্রেফতার

নীলফামারীতে লাবিব ইসলাম আবির (২৭) নামে ভুয়া এক সেনা সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছ...

ভালুকায় জিয়াউর রহমানের শাহাদাত দিবস পালনে অনুদান নয়: মোর্শেদ আলম

মহান স্বাধীনতার ঘোষক, বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বি...

লাউয়াছড়ায় গাছের সঙ্গে ট্রেনের ধাক্কা; অল্পের জন্য রক্ষা

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের ভেতর দিয়ে চলে যাওয়া ঢাকা-...

কোভিট-১৯ রেসপন্স এন্ড রিকভারি প্রজেক্ট

কোভিট-১৯ রেসপন্স এন্ড রিকভারি প্রজেক্টের আওতায় ফেনী পৌরসভার ১৮টি ওয়ার্ডের উন্...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা