আন্তর্জাতিক ডেস্ক: কানাডায় শিখ ধর্মাবলম্বীদের নেতা হরদীপ সিং নিজ্জর হত্যার বিষয়ে ভারতকে বেশ কয়েক সপ্তাহ আগেই গোয়েন্দা তথ্য দেওয়া হয়েছিল জানিয়ে দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেছেন, এ ঘটনার তদন্তে ভারতের সহযোগিতা চায় তার দেশ।
আরও পড়ুন: কানাডার নাগরিকদের ভিসা দেয়া স্থগিত
শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) দেশটির রাজধানী অটোয়ায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, গত সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) আমি যা বলেছি, সে বিষয়ক গোয়েন্দা তথ্য অনেক আগেই আমরা ভারতকে দিয়েছিলাম, বেশ কয়েক সপ্তাহ আগে।
ট্রুডো আরও বলেন, ব্যাপারটি খুবই গুরুতর এবং আমরা এ ইস্যুতে ভারতের সাথে গঠনমূলকভাবে কাজ করতে ইচ্ছুক। আশা করছি, ভারত এ হত্যাকাণ্ডের তদন্তে আমাদের সহযোগিতা করবে।
আরও পড়ুন: কানাডা-ভারত পাল্টা পাল্টি কূটনীতিক বহিষ্কার
উল্লেখ্য, ভারত থেকে কানাডায় গিয়ে সেখানে নাগরিকত্ব অর্জনকারী হরদীপ সিং নিজ্জর ভারতের খালিস্তানপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী খালিস্তান টাইগার ফোর্স ও শিখস ফর জাস্টিস কানাডা শাখার শীর্ষ নেতা ছিলেন।
গত ১৮ জুন ৪৫ বছর বয়সী নিজ্জর কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়া প্রদেশের রাজধানী ভ্যানকুভারের একটি গুরুদুয়ারার সামনে নিহত হন। গত ১৮ সেপ্টেম্বর এ হত্যাকাণ্ডের জন্য ভারতকে সরাসরি দায়ী করে দেশটির পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সে ভাষণ দেন ট্রুডো।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনকে ক্ষেপণাস্ত্র দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র
এ সময় তিনি বলেন, এ অভিযোগের পক্ষে প্রয়োজনীয় তথ্য প্রমাণ তার কাছে রয়েছে। তার এ বক্তব্যের পর থেকে ২ দেশের মধ্যে টানাপোড়েন শুরু হয়। গত কয়েক দিনে উভয় দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে।
ভারতের অভিযোগ, কানাডা সুনির্দিষ্টভাবে এ সম্পর্কিত কোনো তথ্য প্রদান করেনি। ট্রুডোর অভিযোগকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলেও উল্লেখ করে দেশটি।
আরও পড়ুন: ইউক্রেন বিজয়ে রুশ আগ্রাসন শেষ হবে
এদিকে বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) কানাডার প্রথম সারির সম্প্রচার ও সংবাদ মাধ্যম সিবিএস নিউজ সূত্রের বরাত দিয়ে আক জানিয়েছে, সিং নিজ্জর নিহত হওয়ার পর এক মাসেরও বেশি সময় ধরে এ হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে বেশ কিছু গোয়েন্দা তথ্য জোগাড় করছে কানাডার সরকার।
সেসব তথ্য অনুযায়ী, এ হত্যাকাণ্ডের সাথে কানাডায় অবস্থানরত ভারতের কিছু সরকারি কর্মকর্তার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে বলে প্রতিবেদনে দাবি করা হয়।
আরও পড়ুন: চীন সফরে গেলেন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট
সিবিএস নিউজ বলছে, প্রাপ্ত গোয়েন্দা তথ্যের কিছু অংশ পঞ্চনেত্র জোটের (ফাইভ আইস অ্যালায়েন্স) সাথে শেয়ার করেছে কানাডার সরকার। পঞ্চনেত্র জোট হলো: যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড- এই ৫ দেশের মধ্যকার গোয়েন্দা তথ্য আদানপ্রদান সংক্রান্ত নেটওয়ার্ক।
এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানতে কানাডার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে যোগাযোগ করেছিল সিবিএস নিউজ। কিন্তু কোনো কর্মকর্তা এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে রাজি হননি।
শুক্রবার ওয়াশিংটনে এক সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন জানান, তার দেশের সরকার এ হত্যাকান্ডের জবাবদিহিতা চায়। প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো যে অভিযোগ উত্থাপন করেছেন, তাতে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।
সান নিউজ/এনজে