স্বাস্থ্য

দরিদ্রদেশ ভ্যাকসিন না পেলে তার দায় ধনী দেশগুলোর

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : দরিদ্র দেশসমূহকে করোনার ভ্যাকসিন সরবরাহে ব্যর্থতার দায়ে অর্থনৈতিক বিপর্যয় তীব্রতর হবে। এর মূল্য বহন করতে হবে ধনী দেশগুলোকে। নতুন এক গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে।খবর নিউইয়র্ক টাইমস।

মঙ্গলবার (২৬ জানুয়ারি) প্রকাশিত গবেষণায় দেখা গেছে, সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও চলতি বছরের মাঝামাঝিতে ধনী দেশগুলো তাদের শতভাগ নাগরিককে টিকাদান কর্মসূচির আওতায় আনতে পারবে। অথচ তখনো ভ্যাকসিনেশন থেকে অনেক দূরে থাকবে দরিদ্র দেশগুলো।

ধনী দেশগুলো একচেটিয়া ভ্যাকসিনের মজুদ শুরু করেছে। এটি দরিদ্র দেশসমূহতে মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখবে। এতে অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের ধাক্কা উন্নয়শীল দেশগুলোর মতো উন্নত দেশগুলোতেও লাগবে।

গবেষণায় বলছে, এর ফলে বৈশ্বিক অর্থনীতি ৯ ট্রিলিয়ন ডলারের বেশি ক্ষতির মুখোমুখি হবে। এ অংকটি জাপান ও জার্মানির সম্মিলিত বার্ষিক জিডিপির চেয়েও বড়। তবে এ ক্ষতিতে এখানে অর্ধেকের বেশি মূল্য চুকাতে হবে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও ব্রিটেনের মতো ধনী দেশগুলোকে।

গবেষকরা যেটিকে বলেছেন ‘খুব সম্ভাব্য’ সেই চিত্রটি বলছে, বছর শেষে উন্নয়নশীল দেশগুলো হয়তো তাদের অর্ধেক জনগোষ্ঠীকে ভ্যাকসিন দিতে পারবে। তখন বিশ্ব অর্থনীতিকে ১ দশমিক ৮ ট্রিলিয়ন থেকে ৩ দশমিক ৮ ট্রিলিয়নের ধাক্কা সামলাতে হবে। এক্ষেত্রেও ধনী দেশগুলোকে অর্ধেকের বেশি ক্ষতি বহন করতে হবে।

ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্সের সহায়তায় পরিচালিত গবেষণাটি এ সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে যে, ভ্যাকসিনের ন্যায়সঙ্গত বণ্টন সব দেশের অর্থনৈতিক স্বার্থের জন্য জরুরি, বিশেষ করে সেসব দেশ, যারা বাণিজ্যের ওপর অধিক নির্ভর করে। পাশাপাশি এটি সেই ধারণাটির সমালোচনা করে যেখানে বলা হয়, ভ্যাকসিন ভাগাভাগি করা মানে দরিদ্র দেশকে সহায়তা করা।

এ গবেষণা দলের একজন গবেষক সেলভা ডেমিরালপ বলেন, স্পষ্টত সব অর্থনীতি একটি আরেকটির সঙ্গে যুক্ত। অন্য অর্থনীতিগুলোর পুনরুদ্ধার করা ছাড়া কোনও অর্থনীতিই পুরোপুরি ঘুরে দাঁড়াতে পারবে না। ডেমিরালপ এ্যাক্ট এ্যাক্সিলারেটর নামের বৈশ্বিক উদ্যোগটির কথাও বলেন, যে উদ্যোগটি নেয়া হয়েছে উন্নয়নশীল বিশ্বের দেশগুলোতে মহামারী সংক্রান্ত সংস্থান সরবরাহের জন্য।

এ উদ্যোগের অধীনে ৩ হাজার ৮০০ কোটি ডলার সংগ্রহের লক্ষ্য থাকলেও, সব মিলিয়ে সংগ্রহ করতে পেরেছে ১ হাজার ১০০ কোটি ডলার। গবেষণাটি বৈষম্য দূর করার লক্ষ্যে অর্থনৈতিক যৌক্তিকতাও তুলে ধরে। এখানে প্রয়োজনীয় ২ হাজার ৭০০ কোটি ডলার হয়তো অনেক বিশাল পরিমাণ অর্থ মনে হতে পারে। কিন্তু মহামারীকে চলতে দেয়ার ফলে যে ক্ষতি হবে, এটি সে তুলনায় সামান্যই।

একটি খুব সাধারণ ধারণা হচ্ছে, মহামারী কাউকে বিশেষ সুবিধা দেয় না। এটি কোনও সীমানা, বর্ণ, শ্রেণি কাউকেই ছাড় দেয় না। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন কথাও বলে। এটি স্বল্প আয়ের শ্রমিকদের মৃত্যু এবং বিপর্যস্ত জীবিকার সঙ্গে বসবাসে ঠেলে দিয়েছে। বিশেষ করে জাতিগত সংখ্যালঘুদের। এর বিপরীতে হোয়াইট-কলার কর্মীরা বেশ নিরাপদেই বাসায় বসে কাজ করতে পেরেছে।

আবার কোনও কোনও ধনী ব্যক্তি ব্যক্তিগত ইয়টে গিয়ে কিংবা নিজের কেনা দ্বীপে গিয়ে মহামারী থেকে নিজেকে রক্ষা করেছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক অর্থনীতির জগতে নভেল করোনাভাইরাস থেকে লুকানোর কোনো সুযোগ নেই। কারণ সরবরাহ চেইনের বিভিন্ন দেশে পণ্য সরবরাহের যে প্রক্রিয়া, ভাইরাসের টিকে থাকার মাধ্যমে তা মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হবে।

কক ইউনিভার্সিটি, হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি এবং ইউনিভার্সিটি অব মেরিল্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত অর্থনীতিবিদদের একটি দল ৬৫টি দেশের ৩৫টি শিল্পের বাণিজ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে অসম ভ্যাকসিন বিতরণের অর্থনৈতিক প্রভাবগুলো খতিয়ে দেখেছেন।

উন্নয়নশীল দেশগুলো ভাইরাসের বিস্তার থামানোর লক্ষ্যে লকডাউনের কারণে যদি অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের বাইরে থেকে যায়, তখন তাদের হাতে খরচ করার জন্য খুব সামান্য অর্থই থাকবে। যে কারণে উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ ও এশিয়ার রফতানিকারকদের বিক্রি হ্রাস পাবে। পাশাপাশি উন্নত বিশ্বের বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকেও ব্যাপকভাবে সংকটে পড়তে হবে।

সান নিউজ/এসএ

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

দাবি আদায়ের লক্ষে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি

বাড়িভাড়া ভাতা বাড়ানোর দাবি এবং শিক্ষক আন্দোলনে পুল...

এনসিপির দাবিকৃত ‘শাপলা’ প্রতীক নিতে চায় বাংলাদেশ কংগ্রেস

দলীয় প্রতীক হিসেবে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ‘শাপলা’র দাবি করে...

গাজায় যুদ্ধবিরতি, শান্তির বার্তা ট্রাম্পের

প্রায় দুই বছর ধরে চলা গাজায় যুদ্ধ শেষ হয়েছে বলে মন...

কুমিল্লা সীমান্তে ভারতীয় শাড়ি জব্দ

কুমিল্লার সীমান্ত এলাকায় পিকআপে থাকা প্রায় ৩ কোটি টাকা মূল্যের ভারতীয় শাড়ি ও...

রিজভী-মির্জা আব্বাসসহ নাশকতা মামলায় অব্যাহতি পেলেন ১৬৭ জন

রাজধানীর পল্টন মডেল থানায় দায়ের করা নাশকতা মামলায় আদালত দায়মুক্তি দিয়েছে বিএন...

জাতীয় নির্বাচন হবে জনগণের ক্ষমতায়নের প্রাতিষ্ঠানিক রূপ

আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচন হবে ন্যায়বিচার ও জনগণের ক্ষমতায়...

হতাশা হয়ে এনসিপি নেতার পদত্যাগ

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) জয়পুরহাট জেলার প্রধান সমন্বয়ক মো. ফিরোজ আলমগীর দ...

ভোজ্যতেলের দাম লিটারে সর্বোচ্চ ১৩ টাকা বাড়লো

দেশের বাজারে ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। ব্যবসায়ীরা বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম...

এনসিপির দাবিকৃত ‘শাপলা’ প্রতীক নিতে চায় বাংলাদেশ কংগ্রেস

দলীয় প্রতীক হিসেবে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ‘শাপলা’র দাবি করে...

বরিশাল বিপিএল খেললে তামিমও খেলবে

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ১২তম আসর আগামী ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে মাঠে গড়া...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা