পরিবেশ

প্লাস্টিকের বিকল্প পরিবেশবান্ধব জৈবপ্লাস্টিক

সান নিউজ ডেস্ক:
আমরা প্রতি দিন, প্রতি নিয়ত প্লাস্টিকের উপর যে কতটা নির্ভরশীল তা চার পাশটা ভাল ভাবে দেখলেই বুঝতে পারা যায়। গত তিন দশকের বেশি সময় ধরেই প্লাস্টিক আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিক ভাবে জুড়ে গিয়েছে। যার ফল স্বরূপ, বর্তমান পরিবেশে প্লাস্টিক দূষণ একটি বড়সড় সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এই মুহূর্তে বেশ কয়েক ধরনের প্লাস্টিক বেশ জনপ্রিয়তা হয়েছে। যেমন বায়োপ্লাস্টিক বা জৈবপ্লাস্টিক, বায়োডিগ্রেডেবল প্লাস্টিক বা জীবানুবিয়োজ্য প্লাস্টিক, কম্পোস্টেবল প্লাস্টিক ইত্যাদি। মনে করা হচ্ছে, বাজারে প্রচলিত প্লাস্টিকগুলির থেকে এই ধরনের প্লাস্টিকগুলি বেশি পরিবেশবান্ধব। কোনও সমস্যা ছাড়াই নাকি এগুলি প্রাকৃতিক ভাবে বিনষ্ট হয়ে যায়। যদিও, বাস্তবটা ততটাও সহজ নয়।


পরিবেশের প্রতি দায়বদ্ধতার কারণেই হঠকারিতার বশে মানুষ এই ধরনের প্লাস্টিক ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে অনেকেই জানেন না, এটি আসলে কী? কী রহস্য লুকিয়ে রয়েছে এর নেপথ্যে।

বায়োডিগ্রেডেবল বা জীবানুবিয়োজ্য প্লাস্টিক আসলে কী?

বায়োডিগ্রেডেবল বা জীবানুবিয়োজ্য প্লাস্টিক হল এমন ধরনের প্লাস্টিক যেটিকে জৈবিক ক্রিয়াকলাপের দ্বারা সহজেই ভেঙে ফেলা সম্ভব। কিছু ধরনের বায়োডিগ্রেডেবল প্লাস্টিক কম্পোজটেবল (সব নয়) অর্থাৎ এই ধরনের প্লাস্টিকগুলি কিছু নিয়ন্ত্রিত পরিস্থিতিতে বিলীন হয়ে যায়।

বায়োডিগ্রেডেবল বা জীবানুবিয়োজ্য ‘পেট’ জলের বোতল

বায়োডিগ্রেডেবল বা জীবানুবিয়োজ্য ‘পেট’ জলের বোতল তৈরি করতে, প্রস্তুতকারীদের কিছু উদ্ভিদভিত্তিক অ্যাডিটিভ যৌগ ব্যবহার করেন যা পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন অণুজীব এবং ব্যকটিরিয়ার দ্বারা প্রকৃতিতে বিলীন হয়ে যায়। কিন্তু প্যাকেজড বা সংরক্ষিত পানীয় জল এবং খাদ্যকে ঠিক রাখতে ১-২ শতাংশ অ্যাডিটিভ ব্যবহার করা হয়। অন্য দিকে ‘পেট’-এর পলিমারে রেজিনের পরিমাণ ৯৯-৯৮ শতাংশই রাখা হয়। এই অ্যাডিটিভগুলি কিছু বিশেষ পরিস্থিতিতে মাটিতে মিশে যেতে পারে এবং মাত্র ২০-৩০ শতাংশ ভাঙ্গতে সময় লাগে প্রায় ৬ মাস।

বায়োডিগ্রেডেবল প্লাস্টিক সম্পর্কে কিছু আকর্ষণীয় তথ্য:
• সাধারণ মানুষের ভাষায়, বায়োডিগ্রেডেবল প্লাস্টিকই আসলে কম্পোস্টেবল প্লাস্টিক।
• সারা বিশ্বে যে পরিমাণ জৈব প্লাস্টিক তৈরি হয়, তার বেশির ভাগটাই ফসলের উপজাত অংশ দিয়ে তৈরি।
• যে কোনও ধরনের জৈব প্লাস্টিক কম্পোস্টিং বা বিলীন করার জন্য ৭৭ ডিগ্রি থেকে ১৪০ ডিগ্রি পর্যন্ত তাপমাত্রার প্রয়োজন।
• সামগ্রিক ভাবে বিলীন বা কম্পোস্টিং-এর জন্য এখনও পৃথকীকরণ, কাটা, মিশ্রণ এবং নির্দিষ্ট একটি তাপমাত্রার প্রয়োজন (সাধারণ মানুষের পক্ষে এটি সম্ভব নয়)।
• কোনও ভাবেই ঘরোয়া পরিস্থিতিতে জৈব প্লাস্টিককে ভেঙে ফেলা বা বিলীন করা সম্ভব নয়।
• ইন্ডাস্ট্রিয়াল কম্পোস্টিং পদ্ধতির সুবিধা না থাকলে এই প্লাস্টিককে ভাঙা সম্ভবপর হয় না। ভারতের বেশির ভাগ শহরেই এই সুবিধা বা ব্যবস্থা নেই। ফলত জৈব প্লাস্টিকের শেষ ঠাঁই হয় শহরের রাস্তায়। যা অন্য প্রচলিত প্লাস্টিকের মতোই পরিবেশের ক্ষতিকারক হয়ে দাঁড়ায়।
• অনেক সময়েই গ্রাহকের কাছে প্রচলিত প্লাস্টিক বিক্রি করা হয় বায়োডিগ্রেডেবল প্লাস্টিকের লেবেল মেরে।

এই বিষয়গুলি ছাড়াও প্লাস্টিক দূষণ রোধে বেশ কিছু জিনিস আমাদের মাথায় রাখতে হবে। যেমন, বায়ো-প্লাস্টিকের যথেচ্ছ ব্যবহার এবং পরিবেশে যেখানে-সেখানে ফেলে রাখার স্বাধীনতা আমাদের কারওরই নেই। এই ধরনের প্লাস্টিকগুলি সাধারণ প্রচলিত প্লাস্টিকের তুলনায় এমনিতেই বেশ দামি। পাশাপাশি, জৈব প্লাস্টিককে পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে তোলার পদ্ধতিও বেশ খরচসাপেক্ষ। এই ধরনের প্লাস্টিক ব্যবহার করুন। কিন্তু সেই সঙ্গে এটি পরিষ্কার করা, ধোয়া, পৃথকীকরণ এবং সর্বোপরি পুনর্ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

প্লাস্টিকের পুনর্ব্যবহার করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এই বিষয়টিকে যথেষ্ঠ গুরুত্ব দেওয়া উচিৎ। প্লাস্টিকগুলি প্রচুর পরিমাণে কঠিন বর্জ্য তৈরি করে যা হয় জলে কিংবা স্থলে গিয়ে বছরের পর বছর ধরে পড়ে থাকে এবং পরিবেশের ক্ষতি করে।

অন্য দিকে, যদি প্লাস্টিককে ঠিক মতো পুনর্ব্যবহার করা যায় তা হলে এটি বেশ মূল্যবান হয়ে উঠতে পারে। যেমন পেট-এর পুনর্ব্যবহার করে সুতো বা ফাইবার তৈরি করা যায়, যা থেকে কাপড়, গদি, কার্পেট ইত্যাদি তৈরি করা যায়। অন্য ধরনের প্লাস্টিকের পুনর্ব্যবহার করে বিভিন্ন আসবাব, স্টোরেজ ট্যাঙ্ক ইত্যাদি তৈরি করা যায়। প্লাস্টিক বর্জ্য থেকে জ্বালানি তৈরি হয়, যা কেরোসিনের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। সড়ক নির্মানের সময় কিংবা পাওয়ার প্ল্যান্টগুলিতে অ্যডিটিভ হিসেবেও প্লাস্টিক ব্যবহার করা যায়।

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনে স্বতন্ত্রসহ চারজনের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ

মুন্সীগঞ্জে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থীসহ চারজন প্রা...

মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের ১১০ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন

মফস্বল ও প্রান্তিক পর্যায়ে কর্মরত সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, হামলা, হ...

নাসার চাঁদে অভিযানের দায়িত্বে স্পেসএক্স না ব্লু অরিজিন?

পরবর্তী চাঁদ অভিযান কর্মসূচিতে কোন প্রতিষ্ঠানকে যুক্ত করা হবে নাসার নতুন প্রশ...

নোয়াখালীতে বিএনপির কার্যালয়ে আ. লীগের হামলা, আহত ৪

নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়াতে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির কার্যাল...

বাজারে কৃত্রিম সার সংকট সৃষ্টির অপরাধে ব্যবসায়ীকে জরিমানা

বাজারে কৃত্রিম সার সংকট সৃষ্টির অপরাধে কুষ্টিয়ার মিরপুরে এক ব্যবসায়ীকে জরিমান...

খালাস চেয়ে রাজসাক্ষী সাবেক আইজিপি মামুনের আপিল

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন জুলাই গণ-অভ্যুত্...

এবার এনসিপি নেতাকে প্রকাশ্যে গুলি, অবস্থা আশঙ্কাজনক

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) খুলনা বিভাগীয় প্রধান এবং শ্রমিক শক্তির কেন্দ্রী...

কুষ্টিয়া-২ খেলাফত মজলিসের প্রার্থীর মনোনয়নপত্র সংগ্রহ

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভেড়...

দুষ্কৃতিকারীরা সারা বাংলাদেশে রক্তপাত করছে, ধরা পড়ছে না কেন?

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী পুলিশকে উদ্দেশ করে বলেছেন, &lsq...

আলফাডাঙ্গা কলেজে পরীক্ষা চলাকালে অস্ত্র হাতে মহড়া, গ্রেপ্তার যুবক

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা আদর্শ কলেজে স্নাতক সম্মান (ডিগ্রি) পরীক্ষা চলাকালে দেশীয়...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা