নিজস্ব প্রতিনিধি,উলিপুর(কুড়িগ্রাম): কুড়িগ্রামের উলিপুরে করোনা ভাইরাসের মধ্যে জ্বরের প্রাদুর্ভাব বেড়েই চলছে। সেই সাথে বাজারে ফার্মেসিগুলোতে প্যারাসিটামল গ্রুপের ঔষধের সংকট দেখা দিয়েছে।
শনিবার (১১ জুলাই) সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায় বহিঃ বিভাগে জ্বরের রোগীর দীর্ঘ লাইন। কর্মরত চিকিৎসকগণ রোগীদের ব্যবস্থাপত্র দিতে অনেকটাই হিমশিম খাচ্ছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সুভাষ চন্দ্র সরকার জানালেন, সাম্প্রতিক সময়ে জ্বরের রোগী অনেক বেড়েছে। করোনা ভাইরাস ছাড়াও ঋতু পরিবর্তনের এই সময়ে জ্বরের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। করোনা রোগীর চিকিৎসা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। রোগীদের পৃথক একটি ওয়ার্ড খোলা হয়েছে, অধিক বেশি জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের র্যাপিড এন্টিজেন টেস্টের মাধ্যমে করোনা শনাক্ত হলেই ভর্তি করিয়ে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। গুরুতরদের উন্নত চিকিৎসার জন্য বড় কোন হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে। গত ২৩ জুন থেকে ১০ জুলাই পর্যন্ত ১৪৭ জনের র্যাপিড এন্টিজেন টেস্ট করা হয়েছে যাদের মধ্যে ৪৭ জনই পজিটিভ বাকিগুলো নেগেটিভ। গ্রামাঞ্চলের একটা শ্রেণির মানুষ এখনো করোনা ভাইরাসকে বিশ্বাস করছে না, জ্বর আসলেই বাজারের ঔষধ কিনে খাচ্ছে। অনেকেই সুস্থ হচ্ছে আবার অনেকে হাসপাতালে এসে চিকিৎসা নিচ্ছে।
এদিকে উপজেলার ফার্মেসিগুলোতে হঠাৎ করেই জ্বরের ঔষধের সংকট দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন ফার্মেসিতে গিয়ে জ্বরের ঔষধ জেনারেলের ক্যাফানল, এটিপি, বেক্সিমকোর
নাপা, নাপা সিরাপ, স্কয়ারের এইচ, এইচ প্লাসসহ অন্যান্য কোম্পানির ঔষধ তেমন মিলছেনা। কোন কোন ফার্মেসিতে পাওয়া গেলেও ক্ষুদ্র ক্রেতাদের কাছ থেকে দাম তুলনামূলক বেশি রাখা হচ্ছে। এ বিষয়ে কতিপয় ফার্মেসির মালিক জানান, দাম বেশি নেয়া হচ্ছেনা, ঔষধ সাপ্লাই নাই করোনা ভাইরাস ছাড়াও হঠাৎ জ্বরের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় রোগীরা প্রয়োজনের থেকে বেশি করে ট্যাবলেট ও সিরাপ ক্রয় করছেন এবং অনেকেই করোনা বা জ্বরের ভয়ে সংরক্ষণ করছেন।
উলিপুর ফার্মেসি দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মাসুদুর রহমান মিঠু জানান, যেসব কাঁচামাল দিয়ে ঔষধ তৈরি করা হয় এই কাঁচামালগুলো বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়। দেশের প্রায় সকল কোম্পানিতে এই কাঁচামাল সংকট রয়েছে এজন্য উৎপাদন কিছু ব্যাহত হওয়ায় দাম একটু বেড়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূর-এ-জান্নাত রুমি জানান, ঔষধের দাম বেশি নেয়ার বিষয়টি আমাকে কেউ জানায়নি কোন দোকানি ঔষধের দাম বেশি রাখলে দ্রুতই তার
বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।