অপরাধ

শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার আসামি গ্রেফতার

সান নিউজ ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি মো. আজিজুল হক রানা ওরফে শাহনেওয়াজ ওরফে রুমানকে (৪৪) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার (২ মার্চ) দুপুরে মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সিটিটিসি প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান।

আরও পড়ুন: দুই লাখ কোটি টাকার বাজেট অনুমোদন

এর আগে মঙ্গলবার (১ মার্চ) রাজধানীর খিলক্ষেত বাজার মসজিদের সামনে থেকে তাকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম বিভাগ। গ্রেফতারের সময় আজিজুল হকের কাছ থেকে জিহাদি বই, দুটি মোবাইল ফোনসেট, পেনড্রাইভ ও কম্পিউটারের হার্ডডিক্স উদ্ধার করা হয়। তার বিরুদ্ধে খিলক্ষেত থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে একটি মামলা করা হয়েছে।

মো. আসাদুজ্জামান জানান, আজিজুল হক কয়েকবার দেশ ত্যাগের পরিকল্পনাও করেছিলেন। তবে ব্যর্থ হয়ে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলার ভিন্ন ভিন্ন নামে আত্মগোপনে ছিলেন। নিজেকে লুকিয়ে রাখতে কখনো টেইলারিং, কখনো মুদি দোকানি, বই বিক্রেতা, গাড়িচালক ও সবশেষ প্রিন্টিং ও স্ট্যাম্প প্যাড বানানোর কাজ করতেন। এভাবে আজিজুল হক দীর্ঘ ২১ বছর বিভিন্ন ছদ্মবেশে নানা পেশার আড়ালে নিজেকে আত্মগোপনে রাখেন। একই সাথে তিনি অত্যন্ত গোপনে সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছিলেন।

তিনি আরও বলেন, ২০০০ সালে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তার সফরসঙ্গীদের হত্যার উদ্দেশ্যে মাটির নিচে ৪০ কেজি ওজনের বোমা পুঁতে রাখা হয়। এছাড়াও হেলিপ্যাডের পাশে ৭৬ কেজি ওজনের বোমা পুঁতে রাখেন নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদের সক্রিয় সদস্যরা। গ্রেফতার আজিজুল হক রানা মুফতি হান্নানের সঙ্গে বোমা পুঁতে রাখার দায়িত্বে ছিলেন। ঘটনাটি প্রকাশ পেলে এবং বোমা দুইটি উদ্ধারের পর আজিজুল হক কোটালীপাড়া থেকে পালিয়ে ঢাকায় চলে আসেন।

আরও পড়ুন: জায়েদ খানের পদ বহাল

মো. আসাদুজ্জামান জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতার আজিজুল হক রানা ১৯৮৭ সালে গাজীপুরের শ্রীপুরে জামিয়া আনোয়ারিয়া মাদরাসায় নুরানি বিভাগে ভর্তি হন। এ সময় ওই মাদরাসার ওস্তাদ ও হরকাতুল জিহাদের সক্রিয় সদস্য মুফতি হান্নানের অনুসারী মাওলানা আমিরুল ইসলামের সংর্স্পশে আসেন। মাওলানা আমিরুল ইসলাম তাকে হরকাতুল জিহাদে যোগদানের জন্য উদ্বুদ্ধ করেন। মাদরাসায় মুফতি হান্নান, আব্দুর রউফ, আব্দুস সালামসহ হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশের (হুজি) বিভিন্ন সিনিয়র সদস্যদের যাতায়াত ছিল। হুজি সদস্যরা ওই মাদরাসায় গোপন বৈঠক করতেন।

তিনি আরও বলেন, আজিজুল হক সংগঠনে যোগদানের পর অন্য ছাত্রসহ প্রশিক্ষণ ও তালিম নেওয়ার জন্য হুজি নেতা মুফতি ইজহারের চট্টগ্রামের লালখান মাদরাসায় যান ও তালিম গ্রহণ করেন। তালিম শেষে সেখানে তিনি বোমা তৈরি, আত্মরক্ষাসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। মুফতি হান্নান সংগঠনের অপারেশনাল কার্যক্রমের জন্য সাহসী জিহাদি বিশ্বস্ত কয়েকজন লোক সংগ্রহ করার জন্য মাওলানা আমিরুল ইসলামকে দায়িত্ব দিলে তিনি আজিজুল হককে নির্বাচন করেন। আমিরুল ইসলাম তাকে একটি চিঠি লিখে দিলে সেটা নিয়ে গোপালগঞ্জ বিসিক এলাকায় সোনার বাংলা সাবান ও মোমবাতি তৈরির কারখানায় যান। মুফতি হান্নানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাকে মাওলানা আমিরুল ইসলামের দেওয়া চিঠিটি দেন তিনি। মুফতি হান্নান তাকে সংগঠনের নিয়ম-কানুন সম্পর্কে বুঝিয়ে দেন ও আজিজুল হকের নাম পরিবর্তন করে ছদ্মনাম ‘শাহনেওয়াজ’ প্রদান করেন।

আরও পড়ুন: মাদককাণ্ডে যুক্ত নন আরিয়ান খান

সিসিটিসি প্রধান বলেন, আজিজুল হক নতুন নাম শাহনেওয়াজ পরিচয়ে প্রায় ১৫ দিন মোমবাতি প্যাকিংয়ের কাজ করেন। বিশ্বস্ততা অর্জন করলে কারখানার পেছনে একটি কক্ষে গোপন বৈঠকে উপস্থিত থাকার অনুমতি পান। কারখানায় মোমবাতি ও সাবান তৈরির আড়ালে বোমা তৈরির কাজ চলতো। বোমা তৈরির কাজে আজিজুল হকসহ মো. ইউসুফ ওরফে মোসহাব, মেহেদী হাসান ওরফে আব্দুল ওয়াদুদ, ওয়াসিম আক্তার ওরফে তারেক হোসেন, মো. মহিবুল ওরফে মফিজুর রহমান, শেখ মো. এনামুল হক, আনিসুল ইসলাম ওরফে আনিসসহ আরও অনেকেই জড়িত ছিলেন।

মো. আসাদুজ্জামান জানান, ২০০৭ সালে নিজের পরিচয় গোপন করে বিয়ে করেন তিনি। কয়েকবার দেশ ত্যাগের পরিকল্পনাও করেছিলেন, কিন্ত ব্যর্থ হয়ে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলার ভিন্ন ভিন্ন নামে আত্মগোপনে ছিলেন। তিনি নিজেকে লুকিয়ে রাখতে টেইলারিং, মুদি দোকানি, বই বিক্রেতা, গাড়িচালক ও সবশেষ প্রিন্টিং ও স্ট্যাম্প প্যাড বানানোর কাজ করতেন।

আরও পড়ুন: আইপিএল খেলবেন না জেসন রয়

তিনি আরও বলেন, আজিজুল হক ঘন ঘন জায়গা পরিবর্তন করতেন। ২১ বছর লাগলেও ব্যর্থতা নয় সফলতা এবং কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট সাকসেসফুল হয়েছে। এই সংগঠনের সব শীর্ষ জঙ্গিদের গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলায় আরও চারজন- মো. ইউসুফ, মো. লোকমান, শেখ মো. এনামুল ও মো. মিজানুর রহমান পালিয়ে আছেন। তাদেরকেও আমরা গ্রেফতার করতে পারবো বলে আশা করছি।

সান নিউজ/এমকেএইচ

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

মুন্সীগঞ্জে কালবৈশাখীর আঘাত

মো. নাজির হোসেন, মুন্সীগঞ্জ: এ বছ...

গাঁজাসহ মাদক কারবারি গ্রেফতার

আবু রাসেল সুমন, খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি: খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজ...

ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে ভোলায় কর্মসূচি 

ভোলা প্রতিনিধি: স্বাধীন ফিলিস্তিন...

ওসিসহ ৯ পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা

মো. নাজির হোসেন, মুন্সীগঞ্জ: মুন্...

ইউরোপ সফরে চীনা প্রেসিডেন্ট

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ৫ বছর পর ইউরোপ...

ভূঞাপুর রিপোর্টার্স ইউনিটির সাথে ইউএনও'র মতবিনিময়

খায়রুল খন্দকার টাঙ্গাইল : টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে সাংবাদিকদের সা...

ফের বাড়ল স্বর্ণের দাম

নিজস্ব প্রতিবেদক : আবারও দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম বাড়ানো হয...

ভালুকায় ভারতীয় চিনিসহ গ্রেফতার ২

ভালুকা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি: ময়মনসিংহের ভালুকায় তীর কোম্পানি...

বান্দরবানে কেএনএফ সন্ত্রাসী নিহত

জেলা প্রতিনিধি : বান্দরবানেরে কেওক্রাডং পাহাড়ে যৌথ বাহিনীর অ...

ঢাকায় আসছেন ডোনাল্ড লু

নিজস্ব প্রতিবেদক : ফের বাংলাদেশে আসছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা