নিজস্ব প্রতিনিধি, ভোলা : ভোলার চরাঞ্চলে শীতকালীন সবজি চিচিঙ্গা বা রেখা চাষ করে বিপাকে পড়েছে চাষীরা। ভোলা সদর উপজেলার কাচিয়া ইউনিয়নের মাঝের চর ও দৌলতখান উপজেলার চর মদনপুর ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ চরে প্রতি বছরের মত এবছরও বিভিন্ন ব্যাংক ও এনজিওর থেকে ঋণ নিয়ে বুক ভরা আশা নিয়ে চিচিঙ্গা বা রেখা চাষ করেন চাষীরা।
আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ক্ষেতে তেমন কোন রোগ ও পোকা মাকড়েরর আক্রমন না থাকায় বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রতি বছর এসময় পাইকারী বাজারের চিচিঙ্গা কেজি ৩০/৩৫ টাকা থাকলেও এবছর একই সময় বিক্রি করতে হচ্ছে ১০/১২ টাকা।
এতে লাভ তো দূরের কথা খরচের টাকাও উঠছেন না তাদের। বিভিন্ন এনজিও ও ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে সবজি করে এখন ঋন পরিশোধ নিয়ে দুশ্চিতায় চাষীরা। বাজারে চিচিঙ্গার দাম কম হওয়ায় অনেক চাষী ক্ষেতে সবজি রেখে না তুলে চলে গেছেন।
চিচিঙ্গা বা রেখা চাষি রুবেল মাল বলেন, এ বছর পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি ১০-১২ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। যেখানে গত বছর এ সময় পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি চিচিঙ্গা বিক্রি হয়েছে ৩০-৩৫ টাকা। ফলে এবারে চিচিঙ্গা চাষ করে লাভের পরিবর্তে লোকসানে পড়তে হচ্ছে।
চিচিঙ্গা বা রেখা চাষি মোঃ ফরিদ উদ্দিন বলেন, এ বছর সার-কীটনাশক ও শ্রমিকের মূল্যবৃদ্ধি পেলেও বাজারে চিচিঙ্গার মূল্যবৃদ্ধি না পেয়ে কমে গেছে। বাজারে যে দাম তাতে ক্ষেতের সবজি তুলতে শ্রমিকের মজুরিও হবে না। আমি চরের জমিতে ১০ বছর ধরে চিচিঙ্গা চাষ করছি।
প্রতি বছরেই চিচিঙ্গার চাষ করে বেশ ভালো দাম পাই। কিন্তু এবার রোগের আক্রমণ না থাকায় ফলন বাম্পার হয়েছেন। তবে বাজারে চিচিঙ্গার তেমন দাম পাচ্ছি না। আগামীতে চিচিঙ্গার চাষ করবো কিনা তা নিয়ে চিন্তায় আছি।
এদিকে ভোলা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর এর উপ-পরিচালক আবু মোঃ এনায়েত উল্লাহ জানান, শীতকালীন বিভিন্ন সবজির সমারহ থাকায় বাজারে চিচিঙ্গার দাম কম রয়েছে। তবে এপ্রিল ও মে মাসের দিকে কৃষকরা বাজারে চিচিঙ্গা দাম বেশি পাবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
ভোলা কৃষি বিভাগের তথ্য মতে গত বছর ভোলা জেলায় ৮৫০ হেক্টর জমিতে চিচিঙ্গা বা রেখা চাষ হয়েছে। এবছর তা বেড়ে হয়েছে ১ হাজার হেক্টরেরও বেশি।
সান নিউজ/ইমতিয়াজ/এসএ