ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:
ঘরে বাইরে মূর্তিমান এক আতঙ্কের নাম করোনাভাইরাস। ওলট পালট করে দিচ্ছে রাষ্ট্রীয় জীবন থেকে শুরু করে ব্যক্তি জীবনের অনেক কিছু। অর্থ-ব্যাবসা-বাণিজ্য-জীবনের নিরাপত্তা সব কিছুই যেন এখন করোনাকেন্দ্রিক। মূর্তিমান এই আতঙ্ক কাউকে কাউকে আত্মহত্যার পথ বেছে নিতেও উৎসাহিত করছে। তেমন এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন ভারতের এক পিতা। তবে নিজেকে নিয়ে আতঙ্কিত হয়ে নয়, পরিবারের অন্যান্যদের কথা ভেবেই নিজেকে হত্যার মাধ্যমে আত্মত্যাগ করলেন তিনি!
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ভেবে ভারতে আত্মহত্যা করেছেন এক ব্যক্তি। হৃদরোগের জন্য চিকিৎসক মাস্ক পরতে পরামর্শ দিলে তিনি নিজেকে করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী মনে করেন বলে জানায় তার পরিবার।
ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশে এই আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে। জানা যায়, তিনি ভয় পাচ্ছিলেন যে, এই প্রাণঘাতী ভাইরাস হয়তো তার মাধ্যমে পরিবার এবং এলাকার লোকজনের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়বে। সে কারণেই কাউকে কিছু না জানিয়েই আত্মহত্যার পথ বেছে নেন তিনি।
ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি জানায়, তিরুপতি রুইয়া হাসপাতালের চিকিৎসকরা ঠাণ্ডা লাগার উপসর্গ দেখে তাকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিলে বালাকৃষ্ণান নিজেকে নিয়ে সন্দিহান হয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে পরিবারের সদস্যদের ঘরের ভেতর আটকে তিনি আত্মহত্যা করেন বলে
জানায় তার ছেলে বালামুরালি।
“হৃদরোগের চেকআপের জন্য তিনি হাসপাতালে গিয়েছিলেন। চিকিৎসকরা তাকে মাস্ক ব্যবহার করতে বললে তিনি ভুল বোঝেন, ধারণা করেন তিনি বোধহয় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। (বাড়ি আসার পর) তিনি কাউকে তার কাছে ঘেঁষতে দিচ্ছিলেন না। আমি বলেছি, আপনি সংক্রমিত হননি, তবুও তিনি শোনেননি।
“ইন্টারনেটে রোগের লক্ষণ সংক্রান্ত অসংখ্য ভিডিও দেখে তিনি সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে, ভাইরাসটির সব লক্ষণই তার আছে। সোমবার তিনি আমাদের ঘরের ভেতর আটকে রেখে তালা বন্ধ করে দেন; এরপর যতক্ষণে আমরা তার কাছে পৌঁছেছি, ততক্ষণে তিনি গাছে ফাঁস নিয়েছেন,” বলেছেন বালামুরালি।
তিনি বলেন, আমি তাকে বার বার বলেছি যে, আপনি এই ভাইরাসে আক্রান্ত হননি। কিন্তু তিনি কারও কথাই শোনেননি। তাকে যদি সঠিকভাবে পরামর্শ দেওয়া যেত তাহলে হয়তো তিনি এমন কাজ করতেন না।
গত কয়েক সপ্তাহে ভারতের কেরালায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত তিন ব্যক্তির সন্ধান মিললেও, অন্ধ্র প্রদেশের কারও দেহে সংক্রমণের খবর মেলেনি। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বৈশ্বিক স্বাস্থ্য সতর্কতা জারি করায় সেখানে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ভারতে এখন পর্যন্ত কেরালায় তিনজনের করোনাভাইরাসে আক্রান্তের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। এরা তিনজনই শিক্ষার্থী যারা সম্প্রতি চীনের উহান শহর থেকে দেশে ফিরেছেন।