সারাদেশ

বাঁধ মেরামতেই দিন কাটছে কয়রার বাসিন্দাদের

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ

ঘূর্ণিঝড় আম্পান চলে গেলেও যে ক্ষতি সে করে গেছে তা অপূরণীয়। তাই যেন প্রতীয়মান হচ্ছে খুলনার কয়রা উপজেলার মানুষদের দেখে। ঝড়ের কবল থেকে এ যাত্রায় বেঁচে তো গিয়েছে কিন্তু এখনো ঘরে ফেরা হয়নি সেখানকার বাসিন্দাদের। মানুষের দিন কাটছে এখন বাঁধ মেরামতের কাজে। পেটে দু’বেলা খাবার না পরলেও, কষ্ট করে ভাঙা বাঁধ নির্মাণ করছে তারা। কারণ বাঁধ মেরামত না করলেই যে কোন সময় জোয়ারে তলিয়ে যাবে বসত ভিটা। রাত কাটাচ্ছেন রাস্তার ধারে তৈরি করা মাচার উপর আর সকাল হলেই ঝুড়ি কোদাল নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ছেন বাঁধ নির্মাণে।

উপজেলার ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় সব এলাকার বাঁধ আটকানো সম্ভব হলেও ৪টি স্থানে বাঁধ আটকানোর কাজ এখনও চলছে। এগুলো হচ্ছে উত্তর বেদকাশির হাজতখালী, গাববুনিয়া ও গাজীপাড়া এবং কয়রা সদর ইউনিয়নের ঘাটাখালী।

এদিকে পুরো উপজেলায় দেখা দিয়েছে নিত্য পণ্যের সংকট। এক দিকে করোনা আতঙ্ক তার মধ্যে আবার ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি। কয়রার মানুষজন এখন দিশেহারা।

কয়রা উপজেলার সদর ইউনিয়নের ২ নম্বর কয়রা গ্রামের বাসিন্দারা বলছেন, দিনে দুই বার করে পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে সব। জোয়ারে ডুবে যায় ঘর, ভাটায় জেগে ওঠে। এ অবস্থায় নতুন করে বাঁধ নির্মাণের আর কোন বিকল্প দেখছেন না এলাকাবাসী।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কয়রা এলাকার হাজারো মানুষ এখনও গৃহহীন। চারিদিকেই শুধু থৈ থৈ পানি। ঘরে খাবার নেই। মাথা গোজার ঠাঁই নেই। খোলা আকাশের নিচে রাত যাপন করছেন অনেক মানুষ। আবার কেউ রাস্তা বা বাঁধের ওপর অস্থায়ী ঘর তুলে বেঁচে থাকার চেষ্টা করছেন।

সদর ইউনিয়নের বাসিন্দারা বলছেন, 'এখন পর্যন্ত অধিকাংশ মানুষ খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছে। কেউ কোনও ধরনের সহযাগিতা করেনি। পুরুষরা সকাল হলেই যাচ্ছে বাঁধ বাঁধতে। নারীরা ধার দেনা করে চাল ফুটিয়ে রাখছে। তাই লবণ পানি দিয়ে খাচ্ছে মানুষ।

ইউনিয়নে ৫২শ’ পরিবার রয়েছে। সরকারি সাহায্য এসেছে ২৫০ পরিবারের জন্য। আমার ওয়ার্ডে ৫১৭টি পরিবার রয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ২০টি পরিবারকে সরকারি ত্রাণ দেওয়া সম্ভব হয়েছে।'

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, কয়রায় পাউবোর ১৩ ও ১৪-১ নম্বর পোল্ডারের অন্তত ৪০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ উপজেলার প্রায় আড়াই লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আম্পানের আঘাতে কয়রার পাঁচটি ইউনিয়ন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রায় পাঁচ হাজার হেক্টর জমির ফসল লবণ পানিতে প্লাবিত হয়েছে। বাঁধ ভেঙে জোয়ারের পানিতে ছোট বড় পাঁচ হাজার মাছের ঘের ভেসে গেছে।’

পানি উন্নয়ন বোর্ড কয়রার এসও মশিউল আবেদিন বলেন, 'কয়রার মানুষ স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমেই বাঁধগুলো আটকানোর কাজ করছেন। পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে তাদের প্রয়োজনীয় বস্তা, সুতলি সরবরাহ করা হচ্ছে। এ কাজে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও ব্যক্তিভাবে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করছেন।'

সান নিউজ/ বি.এম.

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

তরুণ প্রজন্ম কোন নির্বাচনী ভাগ বাটোয়ারায় বিশ্বাস করে না

জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, "আমরা কোন দলের...

২১ বছর ধরে শিশুশিক্ষায় তালপাতার পাঠশালা

শিশুশিক্ষার হাতে খড়ির প্রচলন হিসেবে একটা সময় ছিলো তালপাতার প্রচলন। আর লেখনী হ...

সুন্দরবনের উপকূলে বিলুপ্তির পথে মাটির মটকি

গভীর বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিশ্ব ঐতিহ...

সুন্দরবনের উপকূলে ইলিশের সুবাস

দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল মৎস্য ভান্ডার...

নিখোঁজের দুইদিন পর খালে মিলল প্রতিবন্ধী শিশুর মরদেহ

সোমবার (১৪ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে উপজেলার বদলকোট ইউনিয়নের মেঘা খাল থেকে ওই শি...

হেলমেট-মাক্স ঢেকে নিষিদ্ধ আওয়ামিলীগের ঝটিকা মিছিল

মানিকগঞ্জে হেলমেট-মাস্কে মুখ ঢেকে আবারো প্রকাশ্যে ঝটিকা মিছিল করেছে কার্যক্রম...

গুপ্ত সংগঠন কর্তৃক পরিবেশ বিনষ্ঠের প্রতিবাদে বিক্ষোভ

গোপন তৎপরতায় দীর্ঘদিন ধরে অভ্যস্ত গুপ্ত সংগঠন কর্তৃক মব সৃষ্টির অপচেষ্টা, শিক...

বাঁশ ও বেত শিল্পে ধ্বস

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল মৎস্যভান্ডার নামে খ্...

তপু ও ধলা পাহাড়ের হৃদয়স্পর্শী সম্পর্ক

বাগেরহাটের ঐতিহাসিক খানজাহান আলী (র:) মাজারের দিঘিতে থাকা কুমিরের সম্পর্কে। ম...

লক্ষ্মীপুরে আরএসডি'র কর্মকর্তাদের জাগ্রত করতে প্রতীকী জানাযা

লক্ষ্মীপুরে খানাখন্দভরা সড়কগুলো মেরামতের উদ্যােগ না নেওয়া এবং সড়ক ও জনপদের ঘু...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা