নিজস্ব প্রতিবেদক: তিন বছরের বেশি সময় দায়িত্ব পালনের পর রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা না করেই চলে গেলেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার। শুক্রবার (২১ জানুয়ারি) তিনি বিদায় নেন তিনি। ২০১৮ সালের ১৮ নভেম্বর বাংলাদেশে যোগ দেন রাষ্ট্রদূত মিলার। তবে তার স্থালে যোগ দিচ্ছেন পিটার হাস।
এর আগে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী ও পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে বিদায়ী বৈঠক করেছেন মিলার।
জানা গেছে, বিদায়ী কূটনীতিকরা সাধারণত বিদায়ের আগে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ পেলেও করোনা পরিস্থিতির জন্য এখন ঢাকার বিদায়ী কূটনীতিকরা তাদের সাক্ষাৎ পাচ্ছেন না। এক্ষেত্রে আর্ল মিলারও সাক্ষাৎ পাননি।
ফেসবুকে ইউএস অ্যাম্বাসি ঢাকা পেজে আর্ল আর. মিলার লিখেছেন, ‘গত তিন বছরে বাংলাদেশে মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করা আমার জীবনের একটি বড় সম্মান এবং আনন্দ। আমার সবচেয়ে প্রিয় স্মৃতি হয়ে থাকবে বাংলাদেশের জনগণের উষ্ণতা ও সৌজন্য। আমেরিকান কূটনীতিক হিসেবে গত ৩৫ বছরে আমি এমন কোনও দেশে কখনও কাজ করিনি, যেখানকার মানুষেরা এত অতিথিপরায়ণ, চিন্তাশীল ও অমায়িক। যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্ক শক্তিশালী এবং আরও শক্তিশালী হবে।’
গত তিন বছরে বাংলাদেশে নিজের সেরা স্মৃতি প্রসঙ্গে ফেসবুকে ইউএস অ্যাম্বাসি ঢাকা পেজে আরেকটি পোস্টে আর্ল আর মিলার বলেন, ‘রিকশার রঙ আর চালকদের মুখের কথা মনে পড়ে যাবে। পুরনো ঢাকার ছাদ আর ঘুড়ি কিংবা সন্ধ্যার আকাশে পাখির উড়ে যাওয়া মনে পড়বে। আমি দেখেছি, স্কুল ইউনিফর্ম পরা শিশুরা গ্রামের রাস্তায় হেঁটে বাড়ি যাচ্ছে। এছাড়া জাহাজভর্তি চট্টগ্রামের নদী, কক্সবাজারে পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর নৌকা, সিলেটের গাঢ় সবুজ পাহাড়, বরিশালের উদ্দাম সবুজ, বান্দরবানের পাহাড় ও সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভে সকালের কুয়াশা; সবই অনবদ্য।’
এদিকে, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, দেশটির সিনেটে ভোটে ১৭ ডিসেম্বর তার মনোনয়ন চূড়ান্ত হয়। এর আগে গত ৯ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বাংলাদেশে পরবর্তী মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে পেশাদার কূটনীতিক পিটার ডি. হাসকে মনোনয়ন দেন।
পিটার হাস যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র বিভাগে তার কর্মজীবনে ভারতের মুম্বাইয়ে যুক্তরাষ্ট্র কন্স্যুলেট জেনারেলে কনসাল জেনারেল হিসেবে কাজ করেছেন। এ ছাড়াও পররাষ্ট্র দপ্তরে পাঁচটি ভৌগলিক ব্যুরোতে দায়িত্ব পালন করেছেন।
পিটার হাস যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় ওয়েসলিয়ান ইউনিভার্সিটি থেকে ‘ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ অ্যান্ড জার্মান’ বিষয়ে বিএ ডিগ্রি লাভ করেছেন। তিনি মার্শাল স্কলার হিসেবে লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসে পড়াশোনা করেছেন, যেখানে তিনি ‘পলিটিক্স অব ওয়ার্ল্ড ইকোনমি’ ও ‘কম্পারেটিভ গভর্নমেন্ট’ দুটি বিষয়ে এমএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন। ইংরেজির পাশাপাশি তিনি ফরাসি ও জার্মান ভাষায় পারদর্শী।
সান নিউজ/এমকেএইচ