নিজস্ব প্রতিবেদক: ভয়ঙ্কর এক সাপ ‘রাসেলস ভাইপার’। এটি আক্রমণে চরম ক্ষিপ্র। এতই ক্ষিপ্র যে, মাত্র ১ সেকেন্ডের ১৬ ভাগের ১ ভাগ সময়ের মধ্যে এটি কাউকে কামড়ে নিজ অবস্থানে ফিরতে সক্ষম। বিশ্বব্যাপী সাপটি কিলিং মেশিন বলে খ্যাত।
রাসেলস ভাইপার দেশে ‘চন্দ্রবোড়া’ নামে পরিচিত। এটি বাংলাদেশে বিলুপ্ত ছিল। বিপদের কথা হলো, সাপটি আবার দেখা দিয়েছে। ভয়ঙ্কর এ সাপ পদ্মাতীরবর্তী কয়েকটি জেলা ও চরাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ছে। গত দুই সপ্তাহে এ সাপের কামড়ে দুজন মারা গেছেন। অসুস্থ হয়েছেন ৯ জন। এতে এসব এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।
সাপের আস্তানা গুঁড়িয়ে দিতে ফরিদপুরে ৭০ বিঘা কাশবন পরিষ্কার করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ভারতের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বন্যার পানিতে গঙ্গা হয়ে আবারও এ সাপ দেশে এসে বংশবিস্তার করছে।
এ সাপের কামড়ে শরীরের আক্রান্ত স্থানের টিস্যু নষ্ট হয়ে সঙ্গে সঙ্গে পচন শুরু হয়। সময়মতো চিকিৎসা না নিলে মৃত্যু অবধারিত। ধানখেতে এ সাপ বেশি থাকায় কৃষকদের মাঠে কাজ করার সময় পায়ে গামবুট পরার পরামর্শ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
এক গবেষণায় দেখা যায়, ২০০১-২০২০ সালে ভারতে সাপের কামড়ে ১২ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে ৫০ ভাগ অর্থাৎ ছয় লাখ ভারতীয়ই মারা গেছেন রাসেলস ভাইপারের কামড়ে।
বাংলাদেশে রাজশাহীর গোদাগাড়ী থেকে বাঘা পর্যন্ত পদ্মাপারে সাপটি এখন বেশি দেখা যাচ্ছে। এ ছাড়া পাবনার রূপপুর, কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা, ফরিদপুরের চরভদ্রাসন, শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জের লৌহজং ও মাদারীপুরের শিবচরে এ সাপ দেখা গেছে।
বোরহান বিশ্বাস রোমন রাজশাহীর পবা উপজেলায় একটি সাপ উদ্ধার ও পরিচর্যা কেন্দ্র গড়ে তুলেছেন। তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভেনম রিসার্চ সেন্টারের প্রশিক্ষক। তিনি বলেন, গত এক দশকে সারাদেশে ২৭২ জন রাসেলস ভাইপারের কামড়ে মারা গেছেন।
এর মধ্যে রাজশাহী অঞ্চলে ১৪৪ জন। গত দুই বছরে মারা গেছেন ৪০ জন। এই গবেষক আরও বলেন, গত ১৫ দিনে ২০৭টির মতো রাসেলস ভাইপার পিটিয়ে মারা হয়েছে। এই সময়ে রাসেলস ভাইপারের কামড়ের শিকার হয়েছেন ১১ জন।
চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক ও ভেনম রিসার্চ সেন্টারের অন্যতম গবেষক ড. আবদুল্লাহ আবু সাঈদ বলেন, রাসেলস ভাইপার অত্যন্ত বিপজ্জনক সাপ। দংশিত ৫০ শতাংশ মানুষই মারা যাচ্ছে।
সাননিউজ/এমআর