নিজস্ব প্রতিবেদক : কোহিনুর বেগম নামে বরিশালের এক গৃহবধূ হত্যা মামলায় তার স্বামী মোস্তফা সরদারকে মৃত্যুদণ্ড দেন নিম্ন আদালত। রোববার (২৭ জুন) হাইকোর্টে মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের বিষয়ে ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের ওপর শুনানি হয়।
শুনানি শেষে ওই গৃহবধূর আত্মহত্যা প্রমাণিত হওয়ায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত স্বামীকে খালাস দিয়ে রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের বিচারপতি এসএম এমদাদুল হক ও বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ রায় দেন।
আদালতে আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন মোহাম্মদ শিশির মনির ও মোহাম্মদ নোয়াব আলী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হারুনুর রশিদ, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী বশির আহমেদ, জাহিদ আহাম্মদ ও মোহাম্মদ শফিকুজ্জামান।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন আসামি পক্ষের আইনজীবী মাহমুদুল শিশির মনির জানান, সকল বিষয় বিচার-বিশ্লেষণ ও চিকিৎসা সনদপত্র অনুসারে কোহিনুর আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রতীয়মান হয়েছে। তাই তার স্বামী মোস্তফা সরদার খালাস পেয়েছেন।
এর আগে স্ত্রী ‘হত্যার’ দায়ে ২০১৫ সালের ৮ অক্টোবর বরিশালের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়েরা জজ আদালত মোস্তফা সরদারকে মৃত্যুদণ্ড দেন। দণ্ডপ্রাপ্ত মোস্তফা সরদার বরিশালের গৌরনদী উপজেলার কসবা এলাকার মৃত হাতেম আলী সরদারের ছেলে। আইন অনুযায়ী এ মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে আসামিও আপিল করেন।
গৌরনদী উপজেলার কসবা এলাকার বাসিন্দা আসমত আলী সরদারের মেয়ে কোহিনুর বেগমের সঙ্গে একই এলাকার বাসিন্দা হাতেম আলী সরদারের ছেলে মোস্তফা সরদারের বিয়ে হয়। তাদের সংসারে দুই ছেলে ও এক মেয়ে সন্তান রয়েছে। হত্যাকাণ্ডের দুই মাস আগে মোস্তফা সরদার একই এলাকার লাল মিয়ার স্ত্রী বুলু বেগমকে বিয়ে করেন। এ নিয়ে মোস্তফা সরদার ও কোহিনুর বেগমের মধ্যে পারিবারিক কলহ দেখা দেয়। এ বিয়ের পর থেকে কোহিনুরকে প্রায়ই মারধর করতেন মোস্তফা।
২০১০ সালে কোহিনুর বেগমের বাবা আসমত আলী সরদার পার্শ্ববর্তী বাসিন্দা সরোয়ার পাইকের স্ত্রী হাসি বেগমের মাধ্যমে জানতে পারেন তার মেয়েকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এ ঘটনায় তিনি ও স্বজনরা অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাকে কোথাও পাননি। পরে একই বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি মোস্তফা সরদারের চৌচালা ঘরের মাচার আঁড়ার সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় কোহিনুরের মরদেহ উদ্ধার করেন।
বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ হলে তিনি ওইদিনই বাদী হয়ে পরিকল্পিত হত্যার অভিযোগে পাঁচজনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। একই বছরের ৩১ মে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শাহজালাল খলিফা তিনজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
সাতজনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ২০১৫ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বিচারিক (নিম্ন) আদালত অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মোস্তফার দ্বিতীয় স্ত্রী বুলু বেগম ও তার আগের স্বামী লাল মিয়াকে খালাস দেন। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় মোস্তফা সরদারকে মৃত্যুদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং ২০১ ধারায় সাত বছরের কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও দুই মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেন আদালত। ওই রায়ের ডেথ রেফারেন্স মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন ও এর বিরুদ্ধে আপিল আবেদন করেন আসামি।
সাননিউজ/এমএইচ
 
                                     
                                 
                                         
                     
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                        
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                     
                             
                             
                     
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
             
                     
                             
                             
                     
                            