পদ্মা সেতুর অর্থনৈতিক সম্ভাবনা
মতামত

পদ্মা সেতুর অর্থনৈতিক সম্ভাবনা

ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ : পদ্মা সেতুর অর্থনৈতিক সম্ভাবনা নিয়ে বলার আগে আমি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের অবতারণা করতে চাই। ২০১২ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়নের ঘোষণা দেন। সেই সময় বাংলাদেশের জনগণের মাথাপিছু গড় জাতীয় আয় ছিল ১ হাজার মার্কিন ডলারের মতো। সেই অবস্হায় নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর মতো এত বড় একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করব-এই কথা বলার মতো সাহস খুব কম মানুষেরই থাকবে বিশ্বে।

আরও পড়ুন: দেশের গৌরবোজ্জ্বল ঐতিহাসিক দিন

বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘৭ কোটি মানুষকে দাবায়ে রাখতে পারব না।’ বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার পিতার সেই প্রত্যয় ও আত্মবিশ্বাস বুকে ধারণ করে নিজস্ব অর্থায়নে ও ব্যবস্হাপনায় পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়নের ঘোষণা দেন। এটা ছিল অত্যন্ত সাহসী ও দূরদর্শী একটি উদ্যোগ। দেশের ভেতরে ও বাইরে অনেকেই তার এই অঙ্গীকারের প্রতি বিশ্বাস স্হাপন করতে পারেননি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই দৃঢ় অঙ্গীকার ঘোষণায় বিশ্বে একটি বার্তা যায় যে, বাংলাদেশ এখন স্বাবলম্বী হতে চলেছে। বাংলাদেশকে এখন আর কোনোভাবেই হেলাফেলা করা যাবে না।

আসলে পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন করা কোনো সহজ কাজ ছিল না। বিশেষ করে কারিগরি দিক থেকে এই সেতু বাস্তবায়ন করা ছিল অত্যন্ত কঠিন ও জটিল। প্রাথমিকভাবে পদ্মা সেতু নিয়ে যে পরিকল্পনা এবং নকশা প্রণয়ন করা হয়, তাতে সময়ে সময়ে পরিবর্তন ও পরিমার্জন করতে হয়। তাই পদ্মা সেতুর কাজ মাঝেমধ্যেই থমকে যেত। সেই অবস্হায় অনেকেই বলতেন, পদ্মা সেতুর কাজ এগোচ্ছে না। কিন্তু যেসব জটিল কারিগরি সমস্যা দেখা দেয় পদ্মা সেতু বাস্তবায়নে, সবগুলো অতিক্রম করেই শেষ পর্যন্ত অত্যন্ত সফলভাবে সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে।

নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর সফল বাস্তবায়ন বিশ্বদরবারে বাংলাদেশকে উচ্চমর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেছে। পদ্মা সেতুর বাস্তবায়ন নিয়ে এখন আর কারো সংশয় প্রকাশ করার অবকাশ নেই। পদ্মা সেতু এখন দিবালোকের মতো সত্যি। বিশ্বে এটা প্রতিষ্ঠিত সত্য পরিণত হয়েছে যে, বাংলাদেশের যে কোনো বৃহত্ প্রকল্প বাস্তবায়ন করার সক্ষমতা আছে। পদ্মা সেতু বাস্তবায়নের পুরোটাই সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী ও গতিশীল নেতৃত্বের কারণে।

বাংলাদেশের মর্যাদা বাড়ার আরও একটি কারণ হচ্ছে, বিশ্বব্যাংকের মতো প্রতিষ্ঠান পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে যে দুর্নীতির অভিযোগ উত্থাপন করেছিল, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন বিশ্বব্যাংক কতৃ‌র্ক উত্থাপিত দুর্নীতির অভিযোগের কোনো সত্যতা খুঁজে পায়নি এবং পরে কানাডার একটি আদালতেও পদ্মা সেতুর প্রকল্প বাস্তবায়নে বিশ্বব্যাংকের কল্পিত দুর্নীতির অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের পক্ষ থেকে পদ্মা সেতুর কাজে সম্পৃক্তদের মধ্যে যাদের দুর্নীতিবাজ হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়েছিল, তারা যে কোনো ধরনের দুর্নীতিতে যুক্ত ছিলেন না, তা প্রমাণিত হয়েছে। ফলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে।

আরও পড়ুন: সর্বত্র উৎসবের আমেজ

পদ্মা সেতু বাস্তবায়নে কোনো রকম দুর্নীতি হয়নি এটা প্রমাণিত হওয়া বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গৌরবেরও বিষয়। এ দেশের কিছু লোকও এই প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ উত্থাপনে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন। এখন তারা কী বলবেন? পদ্মা সেতু প্রকল্পে দেশি-বিদেশি এক্সপার্টরা একসঙ্গে কাজ করেছেন। ফলে স্হানীয়দের মধ্যে এ ধরনের কাজের দক্ষতা বেড়েছে, যা ভবিষ্যতে দেশে বৃহত্ প্রকল্প বাস্তবায়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।

পদ্মা সেতু প্রকল্প অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একটি দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অগ্রযাত্রায় উন্নত যোগাযোগব্যবস্হার গুরুত্ব অপরিসীম। উন্নত যোগাযোগব্যবস্হা ছাড়া কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নতি অর্জন করা যায় না। অর্থাত্, সুষ্ঠু ও সহজ পরিবহনব্যবস্হা নিশ্চিত করা না গেলে দেশের দ্রুত উন্নয়ন অর্জন করা সম্ভব নয়।

একজন কৃষক বা অন্য কোনো পণ্য উত্পাদক তার উত্পাদিত পণ্য ও সেবা যদি সঠিক সময়ে ভোক্তার কাছে পৌঁছাতে না পারেন, তাহলে উভয়কেই ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয়। কৃষিজাত ও পচনশীল দ্রব্য দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছাতে না পারলে তা পচে যেতে পারে। উপকরণ সময়মতো লক্ষ্যভুক্ত উদ্যোক্তার কাছে না পৌঁছালে তার উত্পাদন ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

পদ্মা নদী দেশকে মূলত দুই ভাগে বিভক্ত করে রেখেছিল। পদ্মা সেতু নির্মিত হওয়ার ফলে সারা দেশ সহজ যোগাযোগের আওতায় এলো। এখন দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ২১টি জেলার সঙ্গে রাজধানীসহ উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের সহজ ও দ্রুত যোগাযোগসুবিধা নিশ্চিত হলো। মোংলা বন্দরের ব্যবহার বৃদ্ধি পাবে। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলাগুলো থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য পরিবহন আগের চেয়ে সহজ ও দ্রুত হবে।

পদ্মার উত্তর-পূর্বাঞ্চল থেকে বেনাপোল স্হলবন্দর ব্যবহার করাও আগের চেয়ে অনেক সহজ হবে। ফলে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম পরিচালনার সময় ও ব্যয় উভয় দিক থেকে সহজতর হবে। অর্থাত্ পদ্মা সেতু শুধু দেশের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগব্যবস্হায় উন্নয়ন ঘটাবে তা-ই নয়, দেশের বাইরের সঙ্গে যোগাযোগব্যবস্হাও আগের তুলনায় অনেক সহজ এবং উন্নত হবে।

আরও পড়ুন: ভাগ্য উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক বিপ্লব ঘটবে

কয়েক দিন আগে এক ট্রাকচালকের সঙ্গে আমাদের আলাপ হয়। তিনি যে হিসাব দেন, তা এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে-পদ্মা নদী পার হয়ে এক দিক থেকে অন্য দিকে যাওয়ার জন্য ফেরি ভাড়া ১ হাজার ৮০০ টাকা। ফেরিতে ওঠানামার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য ১৫০ টাকা থেকে ২০০ টাকা দিতে হয়। অবশ্য যদি ঘাটে পৌঁছেই সরাসরি ফেরি পাওয়া যায়, তাহলে এভাবে ২ হাজার টাকা খরচ হতো। অনেক সময় ফেরির সিরিয়ালের জন্য দুই-তিন দিন লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে হতো।

ট্রাকচালক ও হেলপারের খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপার আছে। যদি দুই দিনও অপেক্ষা করতে হয়, তাহলে প্রায় ১ হাজার ৫০০ টাকার মতো প্রয়োজন হয়। তারপর লেইনের একটা ব্যাপার আছে: বাম দিকের লেইন থেকে কেউ যদি ডান দিকের লেইনে গিয়ে কিছুটা সহজে ফেরিতে উঠতে চায়, তাহলে ১ হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত দিতে হতো। অর্থাত্, সব মিলিয়ে একটি ট্রাকের ফেরি পারাপার হতে ৫ হাজার থেকে ৬ হাজার টাকা পর্যন্ত ব্যয় হতো। মূল ভাড়া ১ হাজার ৮০০ টাকা হলেও একটি ট্রাক পারাপারের এই অতিরিক্ত ৩-৪ হাজার টাকা ব্যয় করতে হতো।

আর ট্রাকে যখন পচনশীল দ্রব্য পরিবহন করা হয়, দীর্ঘ সময় ট্রাকে থাকায় তা পচে গেলে ক্ষতির পরিমাণ আরো অনেক বৃদ্ধি পেত। এতে উত্পাদক-বিক্রেতাদের ক্ষতির পাশাপাশি বাজারে স্বল্প সরবরাহের কারণে মূল্যবৃদ্ধির ফলে ভোক্তাদেরও বেশি অর্থ ব্যয়ে পণ্য ক্রয় করতে হতো। এছাড়া যখন একজন ট্রাকচালককে একটি ট্রিপের জন্য তিন-চার দিন নষ্ট করতে হতো, তখন তার ক্ষতি আরো বেড়ে যেত। কেননা, যে সময় একটি ট্রিপ সম্পন্ন করা হতো, সেই সময় আরো একাধিক ট্রিপ চালানো সম্ভব হতো, যদি ঐভাবে সময় নষ্ট না হতো। এভাবে বেশি ট্রিপ দিতে পারলে বেশি আয় হতে পারত।

এখন সেতুটি নির্মিত হওয়ার ফলে ট্রাকচালকেরা আগের মতো সময় নষ্ট না করে নির্দিষ্ট সময়ে একটির পরিবর্তে দুটি বা তিনটি ট্রিপ দিতে পারবেন। কাজেই তাদের আয় অনেক বাড়বে। পদ্মা সেতু পারাপারের জন্য ট্রাকপ্রতি ২ হাজার ৮০০ টাকা টোল নির্ধারণ করা হয়েছে, এটা আগের বাস্তবে ব্যয়ের তুলনায় অনেক কম। ট্রাক বা অন্যান্য যান এখন তুলনামূলকভাবে কম ব্যয়ে, কম সময়ে হয়রানিমুক্তভাবে নির্ধারিত গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবে।

ট্রাকচালক যে হিসাব দিয়েছেন, তা আমার জানা ছিল না। তার সঙ্গে আমাদের আলাপের পরই এটা জানা গেল। তারা বাস্তব অবস্হা মোকাবিলা করেন। এ রকম কোনো বিষয়ে সঠিক তথ্য জানতে হলে যেসব মানুষ ঐ বাস্তবতায় বসবাস বা চলাফেরা করেন, তাদের সঙ্গে আলাপ করাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তারাই সঠিক চিত্র আমাদের সামনে তুলে ধরতে পারেন। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার ফলে একজন ট্রাকচালকের আয় বৃদ্ধির সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। ট্রাকচালক তো অসংখ্য আছেন। তাদের সবারই আয় বৃদ্ধির উপলক্ষ্য হবে এই পদ্মা সেতু। তাদের বর্ধিত আয় জাতীয় আয়ে যুক্ত হবে, ফলে জাতীয় আয়ও বাড়বে।

আরও পড়ুন: বিএনপি খুশি না

পদ্মা সেতুকে কেন্দ্র করে সেতুটির উভয় দিকে ইতিমধ্যে নানা ধরনের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু হয়ে গেছে। ভবিষ্যতে এরকম কর্মকাণ্ড আরো বৃদ্ধি পাবে। পদ্মা সেতুকে কেন্দ্র করে পর্যটনশিল্পের বিকাশ ঘটবে। হোটেল-রেস্টুরেন্ট স্হাপিত হবে। ছোট ছোট উত্পাদন ইউনিট গড়ে উঠবে। অর্থাৎ, এসব এলাকায় কর্মচাঞ্চল্য সৃষ্টি হবে। ইতিমধ্যে তার লক্ষণ আমরা প্রত্যক্ষ করতে শুরু করেছি।

পদ্মা সেতুকে কেন্দ্র করে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলাগুলোতে কুটির, অতিক্ষুদ্র ও ক্ষুদ্রশিল্পের বিকাশ ঘটবে। এগুলো যেন পরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠে, সেদিকে নজর দিতে হবে। এসব ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় বিভিন্ন সেবা যেমন-বিদু্যত্,গ্যাস, পানি ইত্যাদির প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে হবে। সরকার এদিকে দৃষ্টি রাখছে এবং আশা করি যথাসময়ে এসব সেবার নিরবচ্ছিন্ন প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা হবে।

বাংলাদেশ অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ একটি দেশ। কাজেই পদ্মা সেতু দিয়ে প্রতিদিন অনেক মানুষ যাতায়াত করবে, অনেক যানবাহন চলাচল করবে। পদ্মা সেতুর এই বহুল ব্যবহারের ফলে সেতুটি নির্মাণে যে অর্থ ব্যয় হয়েছে, তা নির্ধারিত সময়ে উঠে আসবে বলে আশা করা যায়।

বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। করোনা মহামারির সময়ও বিশ্বে মুষ্টিমেয় যে কয়েকটি দেশ ভালো করেছে, সেগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ একটি। ইতিমধ্যে মাথাপিছু আয়ের ভিত্তিতে বাংলাদেশ নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। ২০৩১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। বিদ্যমান আর্থসামাজিক বাস্তবতার আলোকে বাংলাদেশ আর স্বল্পোন্নত দেশ নয়, যদিও সেই তালিকায় থাকবে ২০২৬ সাল পর্যন্ত। আরো একটি লক্ষ্য হচ্ছে ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত দেশের মর্যাদায় অধিষ্ঠিত হওয়া।

করোনা মহামারি আমাদের উন্নয়নের গতি কিছুটা মম্হর করে দিয়েছে। রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ অর্থনীতিতে নতুন করে সমস্যার সৃষ্টি করেছে। তা সত্ত্বেও এটা বলা নিশ্চয়ই অযৌক্তিক হবে না যে, পদ্মা সেতু আমাদের উন্নয়নের পথে একটি বড় সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করবে। পদ্মা সেতু দেশের সব অঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য সহায়ক হবে।

আরও পড়ুন: শিরিনকে হত্যা করেছে ইসরায়েলিরা

বিশেষ করে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কৃষি উত্পাদন বৃদ্ধি ও বাজারজাতকরণের ক্ষেত্রে অত্যন্ত তাত্পর্যপূর্ণ অবদান রাখবে। এই অঞ্চলে উত্পাদিত কৃষিপণ্য রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বাজারজাতকরণ সহজতর ও দ্রুততর হবে। পদ্মা সেতু দেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনার দ্বার আরো খুলে দিয়েছে।

এক প্রাক্কলনে বলা হয়েছে, পদ্মা সেতু বাস্তবায়িত হলে দেশের জিডিপি ১ দশমিক ৩ শতাংশ পর্যন্ত বাড়বে। এখন কেউ কেউ বলছেন, জিডিপির পরিমাণ ২ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। পদ্মা সেতু সৃষ্ট উন্নয়ন সম্ভাবনাগুলো যদি সঠিকভাবে কাজে লাগানো যায়, তাহলে জিডিপিতে পদ্মা সেতু আরো বেশি অবদান রাখতে পারে। তবে প্রথম বছরে নয়, কয়েক বছরের মধ্যে সে রকম অগ্রগতি ঘটবে বলে আমি মনে করি।

যমুনা নদীর ওপর নির্মিত বঙ্গবন্ধু সেতু দেশের উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোর অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যাপক অবদান রাখছে। দেশের উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলো এখন উত্পাদনের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। রংপুর জেলার কোনো কোনো এলাকায় বছরের একটি নির্দিষ্ট সময়ে মঙ্গা (প্রায় দুর্ভিক্ষ) হতো। এখন মঙ্গা শব্দটি দেশের মানুষ প্রায় ভুলেই গেছে। দেশে আর্থসামাজিক উন্নয়নে পদ্মা সেতু বঙ্গবন্ধু সেতুর চেয়েও অনেক বেশি অবদান রাখবে-এ কথা জোর দিয়ে বলা যায়।

সবশেষে একটি কথা বলতে চাই, পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকা অভিমুখে প্রচুরসংখ্যক যানবাহন আসবে। ফলে রাজধানীতে প্রবেশ-বেরোনোর পথে এবং অভ্যন্তরে যানজটের মাত্রা অনেক বেড়ে গিয়ে বেসামাল অবস্হার সৃষ্টি হতে পারে। তাই পরিস্হিতি নিয়ন্ত্রণে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্হা নিতে হবে।

লেখক: বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ, মুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

রাজনৈতিক দলের সমর্থন না পেলে সব কাজ বিফলে যাবে: সিইসি

প্রবাসী ভোটিং পদ্ধতি বাছাইয়ে রাজনৈতিক দলসহ সব অংশী...

২৯ এপ্রিল: বিপ্লবী রবি নিয়োগীর জন্মদিন

রবি নিয়োগী ১৯০৯ সালের ২৯ এপ্রিল শেরপুরে এক বিখ্যা...

টিভিতে আজকের খেলা

প্রতিদিনের মতো আজ মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) বেশ কিছু খেলা প্রচারিত হবে টেলিভিশনের...

অবৈধ আদেশ পালন করে জনরোষের শিকার পুলিশ: প্রধান উপদেষ্টা

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, গত ১৫ বছর পুলিশকে দলীয় বাহিনীতে পরি...

উত্তরায় প্রাইভেটকারে অপহরণ; ভিডিও ভাইরালের পর গ্রেপ্তার ২

রাজধানীর উত্তরা এলাকায় চাঞ্চল্যকর অপহরণের ঘটনায় অপহরণে ব্যবহৃত একটি প্রাইভে...

আমাকে চেয়েছিলো যুদ্ধাপরাধী মামলার আসামী বানাতে: ডা. শফিকুর রহমান

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, গত সরকারের সময় তিনবার...

ভালুকায় সৌন্দর্য বাড়াতে ইউএনও’র ‘নিজ খরচে’ সবুজ বিপ্লব

ভালুকা উপজেলার পরিবেশ সংরক্ষণ ও নগর সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নি...

কালীগঞ্জে ফিল্মিস্টাইলে যুবককে পিটিয়ে হত্যা

গাজীপুরের কালীগঞ্জে জমি সংক্রান্ত পূর্ব বিরোধের জে...

সড়কহীন ৩৪ কোটি টাকার সেতু

সেতু আছে কিন্তু সংযোগ সড়ক করা হয়নি এমন সেতু ফেনীতে...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা