মো. নাজির হোসেন, জেলা প্রতিনিধি: মুন্সীগঞ্জ জেলার টঙ্গীবাড়ি উপজেলার ঐতিহ্যবাহী দিঘীরপাড় বাজারে রয়েছে মরিচের হাট। প্রতিহাটে কয়েক হাজার মণ মরিচ বিক্রি হয়। এখানে সপ্তাহে প্রতি শুক্র ও সোমবার বসে হাট।
আরও পড়ুন: বাঘিনীদের হুংকারে গুটিয়েছে আফ্রিকা
পদ্মা নদীর পারে অবস্থিত এই হাটটিতে মুন্সীগঞ্জ জেলা ছাড়াও পাশের শরিয়তপুর, মাদারীপুর, ফরিদপুর, চাদঁপুর জেলার মরিচ চাষিরা মরিচ নিয়ে আসে বিক্রির জন্য। মরিচ ব্যবসাকে কেন্দ্র করে এ বাজারে গড়ে উঠছে অর্ধশতাধিক আড়ৎ।
ওই আড়ৎগুলো হাটের দিন এলেই মরিচ কেনাবেচায় হাঁক ডাকে মুখরিত হয়ে উঠে। এ ছাড়াও হটে পেঁয়াজ, সরিষা, তিল ও কলই আড়ৎ রয়েছে হাটে।
ঢাকা, নারায়নগঞ্জ জেলাসহ দেশের দূর দূরান্ত হতে পাইকাররা এসে মরিচ কিনে নিয়ে যান এখান থেকে। ঐতিহ্যবাহী হাটটি কয়েকবার পদ্মা নদীতে বিলীনের পরেও পদ্মার পারেই পূনরায় স্থাপন করা হয়েছে বেশ কয়েক বছর আগে। সাবেক বিক্রমপুরে রাজা দিঘীরপাড় হাট বা বাজার।
এ অঞ্চলের পদ্মার চরাঞ্চলগুলোতে ব্যাপক আকারে মরিচ চাষ হয়। মরিচের ফলন এ সমস্ত চরে ভালো হলেও এ বছর কয়েকদফা বৃষ্টিতে উৎপাদন অনেক কম হয়েছে বলে জানালেন মরিচ চাষিরা। অন্যদিকে, মরিচের দাম অন্য বছরের তুলনায় এ সময় অনেকটা কম হওয়ায় মরিচ চাষিদের মধ্যে হতাশা লক্ষ্য করা গেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ক্রেতা বিক্রেতার হাঁক ডাকে মূখরিত হয়ে উঠেছে হাটটি। প্রতি কেজি শুকনা মরিচ ১০০ হতে ১৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে মরিচ বিক্রি করতে আসা কতিপয় মরিচ চাষি বলেন, এ বছর একদিকে মরিচের দাম কম অপরদিকে মরিচ গাছে যখন ফূল ধরতে শুরু করেছিলো তখন ঘুর্ণিঝড়ের প্রভাবে প্রথম গাছে হওয়া ফুলগুলো ঝরে ক্ষতিগ্রস্থ হয়।
এছাড়া পরবর্তীতে কয়েকদফা বৃষ্টিতে মরিচের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় মরিচের উৎপাদন খুব কম হয়েছে। তাই এ বছর লোকসান গুনতে হচ্ছে তাদের।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা সম্পর্ক দৃঢ় হবে : প্রধানমন্ত্রী
মরিচ চাষী ইমাম হোসেন বলেন, মরিচের দাম কম। বৃষ্টিতে মরিচ এবার হইছেও কম। আমাগো এবার মাথায় হাত। গত বছর এ সময় ১৫০/১৮০ টাকা কেজি পাইকারী এ হাটে মরিচ বিক্রি করেছিলাম।কিন্তু এবার ১০০/১২০টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। মরিচ চাষী আবুল কাশেম বলেন, বাজারে মরিচের দাম নাই। বৃষ্টিতে হইছে কম। আমাগো এবার মরণদশা লোকসান হইবো।
আরও পড়ুন: নিষেধাজ্ঞা থেকে আমরা লাভবান!
এ ব্যাপারে মরিচের আড়ৎ মালিক রাজিব হোসেন বলেন, এখন ১০৫ হতে ১৩০ টাকা কেজি দরে মরিচ বিক্রি হয়েছে। দাম মোটামুটি ঠিক আছে আশা করা যাচ্ছে এবার মুনাফা ভালো হবে।
অপর আড়ৎদার নুরুল হক জানান , আমাদের এই হাটে তিন থেকে চার হাজার মণ মরিচ ওঠে। মরিচের দাম মোটামুটি। এখানে ১১৫ থেকে ১৩০ টাকা কেজি করে মরিচ বিক্রি হচ্ছে।
আরও পড়ুন: রাবিতে ছাত্রী হলে শিক্ষার্থীকে গভীররাতে নির্যাতনের অভিযোগ
আড়ৎদার আফজাল মেলকার বলেন, প্রতি হাট এখানে তিন চার হাজার মন মরিচ উঠে। আমার আড়ৎতে এক থেকে দুই শত মন প্রতি হটে বিক্রি হয়।
আরও পড়ুন: রাজাকারের সন্তানরা সরকারি চাকরি পাবে না
আড়ৎদার আনোয়ার হালদার বলেন, আমি এই বাজারে ৪০ বছর যাবত মরিচের ব্যবসা করি। আমার আড়ৎ হতে প্রতি হাটে ১ থেকে ২শত মন মরিচ বেচাকেনা হয়। ঢাকা থেকে শুরু করে বিভিন্ন এলাকার পাইকার এখানে এসে মরিচ কিনে নিয়ে যায়। এ হাটটি এর আগে পদ্মা নদীতে ভেঙ্গে যায় হাটের পাশেই রয়েছে পদ্মার বিস্তীর্ণ চরাঞ্চল। ওই সমস্ত চরে মরিচ ভালো হয়। চরাঞ্চলের কৃষকরা মরিচগুলো এ হাটে নিয়ে এসে বিক্রি করে।
সান নিউজ/ এইচএন