আন্তর্জাতিক ডেস্ক: শুক্রবার সকালে অন্যান্য দিনের মতো এদিনও জেগে উঠেছে কাবুল। কর্মচঞ্চল হতে শুরু করেছে সড়ক-অলিগলি। কিন্তু শুক্রবার যেন অন্যান্য দিনের তুলনায় অনেক বেশি ভয়, আতঙ্ক আর অনিশ্চয়তায় ভরপুর একটি সকাল দেখছে কাবুলবাসী। কারণ আগের দিন সন্ধ্যায় কাবুল বিমানবন্দরে হওয়া জোড়া বোমা হামলার ক্ষত এখনও স্পষ্ট।
শুক্রবার (২৭ আগস্ট) সকালে এক প্রতিবেদনে বিবিসি জানিয়েছে, বৃহস্পতিবারের ভয়াবহ এই হামলার পর অনেক বেশি ভয় আর আতঙ্ক নিয়ে শুক্রবার সকালে জেগে উঠছেন কাবুলের মানুষ। সবখানেই চাপা আতঙ্ক। এদিকে নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে প্রত্যাহার প্রক্রিয়া সম্পন্নের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষণার পর এই ভয় আর অনিশ্চয়তা আরও বেড়েছে।
বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টার দিকে কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ভয়াবহ আত্মঘাতী হামলায় ১৩ মার্কিন সেনাসহ ৭৩ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ৬০ জনই সাধারণ আফগান নাগরিক। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও প্রায় ১৪০ জন।
সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে কাবুল বিমানবন্দরে পরপর দু’টি বিস্ফোরণ ঘটে। প্রথম বিস্ফোরণটি হয় অ্যাবেই গেটের কাছে। যেখানে মার্কিন ও ব্রিটিশ বাহিনী বিমানবন্দরের দায়িত্বে ছিল। হামলার পর গোলাগুলির ঘটনাও ঘটে। এর কিছুক্ষণ পরেই দ্বিতীয় বিস্ফোরণ ঘটে ব্যারন হোটেলের পাশে। যেখানে ব্রিটিশ কর্মকর্তারা যুক্তরাজ্যে ভ্রমণ প্রত্যাশী আফগানদের প্রয়োজনীয় সহায়তা দিচ্ছিল।
আফগান সাংবাদিক বিলাল সারওয়ারি এক টুইটে বলেছেন, বিমানবন্দরের অ্যাবেই গেটের বাইরে কাগজপত্র যাচাই-বাছাইয়ের জন্য একটি পয়ঃনিষ্কাশন খালের পাশে নারী শিশুসহ অনেক আফগান অপেক্ষা করছিলেন। সেখানেই ভিড়ের মধ্যে আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এক হামলাকারী নিজেকে উড়িয়ে দেয়। বিস্ফোরণের পর আরেক হামলাকারী গুলিবর্ষণ শুরু করে।
এদিকে বর্বর এই হামলার ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। হামলার পেছনে দায়ীদের খুঁজে বের করে শাস্তি নিশ্চিত করার কথাও জানিয়েছেন তিনি। জো বাইডেন বলেছেন, ‘আমরা ক্ষমা করবো না। আমরা এই হামলার কথা ভুলেও যাবো না। আমরা হামলাকারীদের অবশ্যই খুঁজে বের করবো এবং জড়িতদেরকে এর মূল্য দিতে হবে।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ইঙ্গিত দেন যে, কাবুল দখলের পর তালেবান কারাগারগুলো উন্মুক্ত করে দেওয়ায় হয়তো সেখান থেকেই হামলাকারীরা বেরিয়ে এসেছে। তিনি এই হামলার জন্য আইএস-কে গ্রুপকে অভিযুক্ত করেন। যদিও বাইডেনের আগেই কাবুলের এই জোড়া হামলার জন্য দায় স্বীকার করে নিয়েছে জঙ্গি গোষ্ঠীটি।
প্রেসিডেন্ট বাইডেন জোর দিয়ে বলেন, সন্ত্রাসীদের ভয়ে যুক্তরাষ্ট্র কখনোই চুপ করে বসে থাকবে না। তার ভাষায়, ‘আমরা এই মিশন বন্ধ করবো না। আমরা (কাবুল থেকে) আমাদের এই প্রত্যাহার প্রক্রিয়া চালিয়ে যাবো।’একইসঙ্গে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার অঙ্গীকারও করেন তিনি।
সান নিউজ/এমএম