নিজস্ব প্রতিবেদক:
ক্যান্সার বিশেষজ্ঞরা বলছেন জীবনযাত্রায় ঝুঁকিপূর্ণ আচরণ অব্যাহত থাকলে আগামী ১০ বছরের মধ্যে দেশে ক্যান্সার রোগীর সংখ্যা দ্বিগুণ হতে পারে । ক্যান্সার প্রতিরোধে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে আসন্ন সংকট মোকাবেলায় সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির ওপর জোর দেন তারা।
৭ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে ‘সায়েন্টিফিক কনফারেন্স অন প্রিভেনটিভ অনকোলজি’ শীর্ষক এ সম্মেলনের আয়োজন করে ক্যান্সার অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব হেলথ সায়েন্সেসের (বিইউএইচএস) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. ফরিদুল আলম। বিশেষ অতিথি ছিলেন ভারতের মুম্বাই টাটা মেমোরিয়াল সেন্টারের ক্যান্সার প্রতিরোধ বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. গোরভী মিশ্রা।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক ডা. এমএ হাই। আরো বক্তব্য রাখেন ইউরো-অনকোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. এমএ সালাম, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) অনকোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সরোয়ার আলম, বিইউএইচএসের অসংক্রামক রোগ বিভাগের প্রধান ডা. মিথিলা ফারুকী, ক্যান্সার অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক ডা. মোহাম্মদ মাসুমুল হক।
সম্মেলনে প্রধান অতিথি বলেন, মূলত জীবনযাত্রার ঝুঁকিপূর্ণ আচরণের ফলে ক্যান্সার হয়ে থাকে। বাংলাদেশে প্রতি বছর আড়াই লাখ লোক বিভিন্ন ধরণের ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছে। মারা যাচ্ছে প্রায় এক লাখের মতো মানুষ। যদিও এর প্রকৃত সংখ্যা আরো বেশি হবে বলে ধারণা করেন তিনি।
অধ্যাপক ডা. ফরিদুল আলম বলেন, আগামী ১০ বছরে ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দ্বিগুণ হবে। এ হারে ক্যান্সার বেড়ে যেতে থাকলে সেটা সামাজিক উদ্বেগ বাড়িয়ে দেবে। তাই এখনই খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাপনে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ক্যান্সার প্রতিরোধে সামজিক সচেতনতা বাড়ানোর উদ্যোগ গ্রহণ করতে সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
বাংলাদেশের ক্যান্সার রোগীদের চিকিৎসার অভিজ্ঞতা তুলে ধরে টাটা মেমোরিয়াল সেন্টারের ক্যান্সার প্রতিরোধ বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. গোরভী মিশ্রা বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের ক্যান্সার রোগীদের ধরন প্রায় একই। প্রতি বছর বাংলাদেশের রোগীদের বড় একটা অংশ আমাদের ওখানে চিকিত্সা নিতে যান। দিন দিন এর আকার বেড়ে চলেছে জানিয়ে ভবিষ্যতে ক্যান্সার প্রতিরোধে বাংলাদেশের সঙ্গে একযোগে কাজ করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ডা. এমএ হাই বলেন, অসংক্রামক রোগের মধ্যে ক্যান্সারই আমাদের বেশি ভোগাচ্ছে। শহর কিংবা গ্রাম, বাংলাদেশের প্রতিটি জায়গায় ক্যান্সারের রোগী পাওয়া যায়। ক্যান্সার হয়েছে শুনলেই সবাই মনে করেন আর বেঁচে থাকা সম্ভব নয়। কিন্তু সঠিক চিকিৎসা দেয়া গেলে এ রোগের এক-তৃতীয়াংশ রোগীকে সুস্থ জীবনে ফেরানো সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।
আন্তর্জাতিক এ সম্মেলনের সহ-আয়োজক ছিল বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব হেলথ সায়েন্সেসের ফ্যাকাল্টি অব পাবলিক হেলথ এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অনকোলজি বিভাগ।
অনুষ্ঠানে বিশেষজ্ঞরা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ক্যান্সার প্রতিরোধের একটি ধারণাপত্রও তুলে ধরেন।
সান নিউজ/সালি