অপরাধ

রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যানসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক:

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহভাজনদের নমুনা নিয়ে তা পরীক্ষা না করাসহ বিভিন্ন অপরাধের দায়ে রাজধানীর রিজেন্ট হাসপাতালের বিরুদ্ধে মামলা করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। এতে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মো. শাহেদসহ ১৭ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৭ জুলাই) রাতে রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলাটি করা হয়। মামলা নম্বর-৫। উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তপন চন্দ্র সাহা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, 'করোনা টেস্ট না করে রোগীদের জাল রিপোর্ট দেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগে রিজেন্ট হাসপাতালের বিরুদ্ধে র‍্যাব মামলা করেছে। প্রতারণা ও অর্থ-আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।'

মামলার আসামিরা হলেন—হাসপাতালের অ্যাডমিন আহসান হাবীব (৪৫), এক্সরে টেকনিশিয়ান হাসান (৪৯), মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট হাকিম আলী (২৫), রিসিপশনিস্ট কামরুল ইসলাম (৩৫), রিজেন্ট গ্রুপের প্রজেক্ট অ্যাডমিন রাকিবুল ইসলাম (৩৯), রিজেন্ট গ্রুপের এইচআর অ্যাডমিন অমিত অনিক (৩৩), গাড়িচালক আব্দুস সালাম (২৫), এক্সিকিউটিভ অফিসার আব্দুর রশীদ খান জুয়েল (২৮), প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মো. শাহেদ (৪৩), ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাসুদ পারভেজ (৪০), হাসপাতাল কর্মচারী তরিকুল ইসলাম (৩৩), স্টাফ আব্দুর রশিদ খান (২৯), স্টাফ শিমুল পারভেজ (২৫), কর্মচারী দীপায়ন বসু (৩২) এবং মাহবুব (৩৮)। অপর দু'জনের নাম জানা যায়নি।

১৭ জন আসামির মধ্যে এমডি মাসুদ পারভেজসহ আট জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে রিজেন্ট চেয়ারম্যান শাহেদসহ ৯ জন পলাতক রয়েছেন। তাদের গ্রেফতারে র‌্যাবের অভিযান চলছে।

উল্লেখ্য, করোনা টেস্টের নামে ভূঁয়া ফলাফল দেয়া, লাইসেন্সের মেয়াদ না থাকাসহ অন্তহীন অনিয়মের অভিযোগে মঙ্গলবার রাজধানীর রিজেন্ট হাসপাতাল বন্ধের নির্দেশ দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ফলে হাসপাতালটির উত্তরা ও মিরপুরের দুটি শাখার সকল কার্যক্রমই বন্ধ করা হয়।

মঙ্গলবার (৭ জুলাই) সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিকসমূহ) ডা. আমিনুল হাসান স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রিজেন্ট হাসপাতাল লিমিটেড, উত্তরা এবং রিজেন্ট হাসপাতাল লিমিটেড, মিরপুর ঢাকা (উভয় বেসরকারি হাসপাতাল), মার্চ-২০২০ থেকে কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিয়ে আসছিল। কিন্তু গত ৬ জুলাই র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) অভিযানে (মোবাইল কোর্ট পরিচালনাকালে) রিজেন্ট হাসপাতাল লি., উত্তরা শাখায় (মূল শাখা) বিভিন্ন অনিয়ম ধরা পড়ে, যা বিভিন্ন ইলেকট্রিক মিডিয়া এবং দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে।

ওই হাসপাতাল দুটি রোগীদের কাছ থেকে অন্যায়ভাবে বিরাট অংকের টাকা আদায় করছে। অনুমোদন না থাকা সত্ত্বেও RT-PCR পরীক্ষার নামে ভূয়া রিপোর্ট দিয়ে টাকা হাতিয়ে নেওয়া, তাগিদ দেওয়া সত্ত্বেও লাইসেন্স নবায়ন না করাসহ আরও অনিয়ম করেছে বলে প্রমাণিত হয়। এসব অনিয়মের কারণে এবং “The Medical Pactice & Private Clinic & Laboratories Regalation Ordinance-1982’’ অনুযায়ী হাসপাতালের কার্যক্রম অবিলম্বে বন্ধের নির্দেশ দেয়া হলো।

এর আগে বেশ কয়েকটি অভিযোগে মঙ্গলবার রিজেন্ট হাসপাতাল ও রিজেন্ট গ্রুপের প্রধান কার্যালয় সিলগালা করে র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। সোমবার সকাল থেকে চলা অভিযানে বাহিনীটি একাধিক অভিযোগ পায় প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম সাংবাদিকদের বলেন, 'রিজেন্ট গ্রুপের প্রধান কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে সেখানেও অনুমোদনহীন টেস্ট কিট ও বেশ কিছু ভুয়া রিপোর্ট পাওয়া গেছে। এজন্য রিজেন্ট হাসপাতাল ও রিজেন্ট গ্রুপের প্রধান কার্যালয় সিলগালা করা হয়েছে। এ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। এসব অপরাধ ও টাকার নিয়ন্ত্রণ চেয়ারম্যান সাহেব (রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহেদ) নিজে করতেন অফিসে বসে। এই অপকর্মগুলো রিজেন্টের প্রধান কার্যালয় থেকেই হতো বিধায়, এটি সিলগালা করা হয়েছে। পাশাপাশি রোগীদের স্থানান্তর করে হাসপাতাল দুটিও সিলগালা করা হয়েছে।'

এর আগে সোমবার অভিযান শেষে র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম বলেন, ‘রিজেন্ট হাসপাতাল ও প্রধান কার্যালয় সিলগালা করে দিয়েছি। হেড অফিসে বসেই মিথ্যা রিপোর্ট তারা তৈরি করতো। হেড অফিসে ৫/৭ দিনের স্যাম্পল এক সাথে করে ফেলে দিতো। ভুয়া রিপোর্টও পেয়েছি। অনুমোদনহীন র‌্যাপিড কিট আমরা পেয়েছি।’

সেদিন বিকালে রিজেন্ট হাসপাতালে অভিযানের পর র‌্যাবের ম্যাজিস্ট্রেট বলেছিলেন, ‘এসব অনিয়মের সাথে হাসপাতালটির চেয়ারম্যানই জড়িত এবং তিনি নিজেই এসব ডিল করেছেন।’

হাসপাতালটির মালিক মো. শাহেদ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের একজন নেতা। সোমবার হাসপাতালটির আটজন কর্মকর্তাকে র‌্যাব আটক করলেও মালিককে খুঁজে পাচ্ছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

দেশে করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা নিয়ে এটি দ্বিতীয় কোনো প্রতিষ্ঠান যার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হলো। এর আগে জেকেজি নামক একটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ ওঠার পর আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তার প্রমাণ পেয়ে সেটি বন্ধ করে দিয়েছিল। আটকও করা হয়েছিল কয়েকজনকে।

গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের পর যখন কোনো হাসপাতাল করোনা রোগীদের চিকিৎসা দিতে রাজি হচ্ছিল না তেমন পরিপ্রেক্ষিতে রিজেন্টসহ তিনটি হাসপাতালের সাথে চুক্তি করে স্বাস্থ্য বিভাগ। চুক্তির আওতায় সরকার সেখানে ডাক্তার, নার্সসহ কিছু জনবলও নিয়োগ দেয়। হাসপাতালটির করোনা রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দেয়ার কথা ও পরে সরকারের সেই টাকা পরিশোধ করার কথা ছিল।

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

জায়েদের ফোন পানিতে ছুড়ে ফেললেন সাকিব

বিনোদন ডেস্ক: বাংলাদেশ ক্রিকেটের...

রাজধানীতে তাপমাত্রা বাড়ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: চলতি তাপপ্রবা...

টিভিতে আজকের খেলা

স্পোর্টস ডেস্ক: প্রতিদিনের মতো আজ বুধবার (১লা মে) বেশ কিছু খ...

চীনে সড়ক ধসে নিহত ১৯ 

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: চীনের দক্ষিণাঞ...

কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিযানে ব্যাপক গ্রেফতার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে প্রবে...

কাঁচা আমের উপকারিতা

লাইফস্টাইল ডেস্ক: গ্রীষ্মকালের সু...

মেহনতি মানুষের ভাগ্যোন্নয়নই আ’লীগের লক্ষ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন...

১০ জেলেকে মুক্তি দিল আরকান আর্মি

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের অভ্যন্তরে...

বজ্রপাতে একদিনেই প্রাণ গেল ১০ জনের

নিজস্ব প্রতিবেদক: বৃষ্টিহীন বৈশাখ...

হাসপাতাল থেকে বাসা ফিরলেন খালেদা জিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বে...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা