নাজির হোসেন, মুন্সীগঞ্জ: আসছে বৈশাখ মাস। কাল বৈশাখীকে সামনে রেখে উত্তাল হয়ে উঠেছে মুন্সীগঞ্জে মেঘনা নদী। এই উত্তাল নদীতে গজারিয়া উপজেলাসহ পারি দিচ্ছে হাজার হাজার মানুষ।
আরও পড়ুন : ইউক্রেন বন্দরে তুর্কি জাহাজে আগুন
জানা যায়, মুন্সীগঞ্জ জেলা শহর থেকে মাত্র ৭ কিলোমিটার দুরত্বে গজারিয়া উপজেলা। কিন্তু ওই উপজেলার সাথে সরাসড়ি যোগাযোগের নেই কোন রাস্তা। গজারিয়া উপজেলাবাসীকে মেঘনা নদী পার হয়ে আসতে হয় জেলা সদরে। অন্যথায় সামান্য দূরত্বে জেলা সদরে সড়ক পথে আসতে হয় ১০ গুণ রাস্তা প্রায় ৭০ কিলোমিটার রাস্তা পাড়ি দিয়ে ঢাকা, নারায়ণঞ্জ ঘুরে। সাধারণ মানুষের যোগাযোগের একমাত্র ভরসা ইঞ্জিন চালিত নৌকা। এখানে গজারিয়া চরকিশোরগঞ্জ ২০ থেকে ২৫ ট্রলার। একটি ট্রলারে নেই বয়া বা লাইফ জ্যাকেট।
যাতায়াতকারীরা বলেন, মেঘনায় এখোন অনেক ঢেউ। এতে ট্রলারে অনেক কম্পন সৃষ্টি হয়। ঢেউয়ের তোড়ে ট্রলারে পানি উঠে আসে। শরীর ভিজে যায়। অনেকে সময় নারী ও শিশুরা ঢেউয়ের তোড়ে ঝাকুনি খেয়ে কান্না শুরু করে। সামনে কাল বৈশাখী ঝড় উঠলে যে কোন মুহুর্তে ঘটতে পারে দূর্ঘটনা। তাই জীবন হাতে নিয়ে পারপার হতে হয় আমাদের। জেলা সদরের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ না থাকায় জেলার অপর চারটি উপজেলায় ও গজারিয়া বাসীকে যোগাযোগে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। জেলার ৫ টি উপজেলার সাথে জেলা শহরের পূর্বাঞ্চলের গজারিয়াকে মেঘনা নদী বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে। এতে করে জেলার ৫ টি উপজেলার সঙ্গে গজারিয়ার যোগাযোগ ব্যবস্থা নেই বললেই চলে।
আরও পড়ুন : ১২ প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে একনেক
অনেকেই আবার- নদীপথ ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় অনেকেই দীর্ঘ পথ অতিক্রম ও অতিরিক্ত অর্থ খরচ করে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ হয়ে সড়ক পথে মুন্সীগঞ্জে আসা যাওয়া করে থাকেন। ফলে গজারিয়া উপজেলা সদর, থানা ও হাইওয়ে সড়কে যেতে ট্রলার দিয়ে পার হতে হয় গজারিয়ার জনগোষ্ঠীকে। এসব কারণে অবহেলিত জনপদ গজারিয়া।
গজারিয়ার ইমামপুর ইউনিয়নে বাসিন্দা আলী আহম্মদ প্রধান (৭৪) বলেন, এখন বর্ষা আসতেছে। এখানে ট্রলারে চলাচল অনেক রিক্স। আদালতে কাজ ছিল। কষ্ট করে, ভয় নিয়ে মেঘনা নদী পাড় হয়েছি। এখানে আবার আগের মতো ফেরি সার্ভিস চালু করলে ভালো হয়।
আরও পড়ুন : আমি ব্যবসায়ী এটাই আমার অপরাধ
বাউশিয়া ইউনিয়নের মরিয়ম বেগম (৪০) বলেন, আদালতে আমাদের মামলা আছে। কি করবো বাড়িতে পুরুষ নেই। তাই আমারই আসতে হয়েছে। ট্রলারে চোখ বন্ধ করে দোয়া দুরুদ পরে আসছি। আবার বিকেলে ফেড়ার সময় ঢেউ কেমন হয়। দেশের অনেক স্থানে বড় বড় ব্রিজ হয়। এখানে একটি ব্রিজ হলে, জেলা সদরের সাথে যোগাযোগ ভালো হতো।
গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জিয়াউল ইসলাম চৌধুরী বলেন, এ নৌরুটে বয়া ও লাইফ জ্যাকেট দেয়া হয়েছিল। যদি ব্যবহার না করে থাকে। তাহলে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সান নিউজ/এনকে