নিজস্ব প্রতিনিধি, লালমনিরহাট: ত্রাণের স্লিপ চাওয়ায় শতবর্ষীকে গলাধাক্কা দিয়ে দাঁত ভেঙে ফেলায় লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার পলাশী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শওকত আলী ও তার স্ত্রীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বুধবার (২৮ জুলাই) সকালে আদিতমারী এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে আদিতমারী থানা পুলিশ।
এর আগে চেয়ারম্যানের নির্দেশে তার স্ত্রী আনোয়ারা বেগম ও মেয়ে সুহিন আক্তার বৃদ্ধার গলা ধরে ধাক্কা দিলে মেঝেতে পড়ে গিয়ে তার দাঁত ভেঙে যায়। হাত, পা ও বুকে প্রচণ্ড আঘাত পেয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন তিনি।
সোমবার রাতে বৃদ্ধা আলেমা বেওয়ার ছেলে নুরুজ্জামান চেয়ারম্যান শওকত আলী ও তার স্ত্রী আনোয়ারা বেগম এবং মেয়ে সুহিন আক্তারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
আলেমা বেওয়া উপজেলার পলাশী ইউনিয়নের নামুড়ি মদনপুর গ্রামের মৃত ছপির উদ্দিনের স্ত্রী ও রিকশাচালক নুরুজ্জামানের মা।
জানা যায়, সম্প্রতি লকডাউনে রিকশাচালক ছেলের আয় রোজগার কমে যাওয়ায় নিদারুণ অর্থ কষ্টে পড়ে পরিবারটি। ঈদের কিছুদিন আগে পলাশী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শওকত আলী ত্রাণ দেওয়ার কথা বলে বৃদ্ধা আলেমার কাছ থেকে জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি নেন। সেই ত্রাণ নিতে সোমবার সকালে ইউনিয়ন পরিষদে ডাকেন চেয়ারম্যান। সকালে পান্তা ভাত খেয়ে ইউনিয়ন পরিষদের চলে যান বৃদ্ধা আলেমা।
তখন চেয়ারম্যান তার বাড়িতে রাখা স্লিপ নিয়ে আসতে বললে বৃদ্ধা পরিষদের পাশে চেয়ারম্যানের বাড়িতে যান। সেখানে দুপুর পর্যন্ত স্লিপের জন্য অপেক্ষা করেন ক্ষুধার্ত বৃদ্ধা। এরই মধ্যে ত্রাণ বিতরণ শেষ করে চেয়ারম্যান বাড়িতে চলে আসলে স্লিপ দাবি করেন আলেমা। এ সময় চেয়ারম্যানের নির্দেশে তার স্ত্রী আনোয়ারা বেগম ও মেয়ে সুহিন আক্তার তার গলায় ধাক্কা দেন। এতে মেঝেতে পড়ে যান বৃদ্ধা। এ সময় তার দাঁত ভেঙে রক্ত ঝরতে থাকে এবং হাত, পা ও বুকে প্রচণ্ড আঘাত পেয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।
বিপদ দেখে দ্রুত পল্লী চিকিৎসক নিয়ে নিজ বাড়িতে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বৃদ্ধাকে বাড়ি থেকে বের করে দেন চেয়ারম্যান। মায়ের অসুস্থতার খবরে রিকশাচালক ছেলে নুরুজ্জামান স্থানীয়দের সহায়তায় তাকে আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
আদিতমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ মামলায় চেয়ারম্যান ও তার স্ত্রীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সান নিউজ/এফএআর