নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়া অনিবন্ধিত রোহিঙ্গারাই এখন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জন্য বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই সংখ্যা কত তার সঠিক হিসাব নেই সরকারের কোন সংস্থার কাছে। নিবন্ধিত সোয়া ১১ লাখ রোহিঙ্গা শত চেষ্টা করেও ভোটার হতে পারবে না। কিন্তু অনিবন্ধিত রোহিঙ্গারা নানা কৌশলে ভোটার হচ্ছেন।
ভোটার হওয়ার ক্ষেত্রে যে ধরনের কঠিন ধাপগুলো অতিক্রম করতে হয়, সেসব ধাপ সহজে অতিক্রম করেই রোহিঙ্গা নাগরিকরা ভোটার হয়ে যাচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে মাধ্যম হিসেবে তারা ব্যবহার করছে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি (নাগরিক পরিচয়পত্র), রাষ্ট্রীয় দালিলিক সনদ (জন্মনিবন্ধন সনদ) ও নির্বাচন কমিশনের কিছু অসাধু ব্যক্তিকে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের (এনআইডি) মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলেন, রোহিঙ্গাদের ভোটার হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। নিবন্ধিত রোহিঙ্গাদের আঙুলের ছাপ আমাদের কাছে রয়েছে। রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকাগুলোকে বিশেষ এলাকা ঘোষণা দিয়ে আমরা ভোটার তালিকা কার্যক্রম পরিচালনা করি। তারা যাতে ভোটার হতে না পারেন, সেজন্য সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তার পরও নিবন্ধিত রোহিঙ্গাদের কেউ কেউ ভোটার হওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে।
কমিশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেছেন, সমাজের কিছু অসাধু লোকের সহযোগীতায় আমাদের চোখকে ফাঁকি দিয়ে রোহিঙ্গারা ডাটাবেজে যুক্ত হচ্ছেন। বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়া ঐসব রোহিঙ্গারা আরও আগেই এদেশে অনুপ্রবেশ করেছে। মিয়ানমারের সেনাদের হাতে নির্যাতনের শিকার হয়ে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে নতুন করে কক্সবাজারের রোহিঙ্গাদের ঢল নামে। তারও আগে থেকেই রোহিঙ্গারা এদেশে এসেছেন বিভিন্ন সময়।
তবে নতুন করে আসা রোহিঙ্গাদের আঙুলের ছাপসহ ৪৬ রকমের তথ্য নিয়ে একটি ডাটাবেজ তৈরি করেছে সরকার। বহিরাগমন বিভাগ ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বিজিবি, আনসার এবং ইউএনএইচসিআরের কর্মীরা রোহিঙ্গাদের নিবন্ধনের কাজ শুরু করে। বর্তমানে সোয়া ১১ লাখ রোহিঙ্গা নিবন্ধিত হয়েছেন।
এই ডাটাবেজ নির্বাচন কমিশনের সার্ভারেও সংযুক্ত রয়েছে । এই অবস্থায় নতুন যে কোনো ব্যক্তি ভোটার হতে নির্বাচন কমিশনে এলে ভোটারের তথ্য ফরম পূরণ করে ১০ আঙুলের ছাপ ও চোখের আইরিশ নেওয়ার পর প্রথমেই মিলিয়ে দেখা হয় ঐ ডাটাবেজ থেকে। সেখানে না মিললে, দেখা হয় এ দেশের নাগরিকদের তথ্যের সঙ্গে। নতুন ভোটার হওয়ার জন্য আসা ব্যক্তির আঙুলের ছাপ রোহিঙ্গা ও এদেশীয় নাগরিকদের সঙ্গে না মিললেই কেবল নিবন্ধিত হতে পারেন।
সান নিউজ/এসএ