নিজস্ব প্রতিবেদক
আজ বিকেল ৩ টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধনের মধ্যে দিয়ে শুরু হবে বাঙালির অন্যতম প্রাণের আয়োজন অমর একুশে বইমেলা-২০২০'। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরষ্কার প্রদান করা হবে।
২ ফেব্রুয়ারি রোববার বিকাল তিনটায় মেলার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে এবারের মেলা উৎসর্গ করা হয়েছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।
মেলার আয়োজক প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, সারাজাতি যখন বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করছে, তখন বাংলা একাডেমিও বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ রেখে বেশকিছু আয়োজন রেখেছে। এবারের মেলায় নতুন বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হতে চলেছে উল্লেখ করে প্রতিষ্ঠানটি জানায়, শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে মেলা উপলক্ষ্যে যে আয়োজন প্রতিবছর করা হয়, সেটির পরিসর কেবল বাড়ছে তাই নয়, সেটি আরও খ্যাতিসম্পন্ন হয়ে উঠছে।
এরইমধ্যে বইমেলার সব আয়োজন শেষ। বর্ণিল সাজে সেজেছে মেলা চত্বর। মেলা ঘিরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি থেকে শুরু করে দোয়েল চত্বর পর্যন্ত বিরাজ করছে উৎসবের আবহ। বছর ঘুড়ে আবার সাহিত্যপ্রেমীদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠবে রাজধানীর বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান প্রাঙ্গণ।
আনুষ্ঠানিকভাবে ১৯৭২ সালে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে মেলা শুরু হয়েছিল, তবে বাংলা একাডেমি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিবছর বইমেলার আয়োজন করার জন্য ১৯৭৮ সালে দায়িত্ব গ্রহণ করে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পরপরই সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেয়া হবে মেলার প্রবেশপথ। এবারে বইমেলা অনুষ্ঠিত হবে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ও একাডেমি সংলগ্ন ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রায় ৮ লাখ বর্গফুট জায়গা জুড়ে। সৃজনশীল প্রকাশনা সংস্থাগুলো থাকবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে। এখানে মোট ৪৩৪টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে ৬৯৮টি ইউনিট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
মাসব্যাপী এ মেলায় প্রতিদিন সন্ধ্যায় থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, এই অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রতিদিনই রয়েছে কবিকণ্ঠে কবিতাপাঠ এবং আবৃত্তি। অমর একুশে গ্রন্থমেলা উপলক্ষে বাংলা একাডেমি শিশু-কিশোর চিত্রাঙ্কন, সাধারণ জ্ঞান ও উপস্থিত বক্তৃতা এবং সংগীত প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে।
একাডেমির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০২০এর প্রচার কার্যক্রমের জন্য তথ্যকেন্দ্র থাকবে বর্ধমান ভবনের পশ্চিম বেদিতে এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা থাকবে।
সাংবাদিকদের অবাধ তথ্য আদান-প্রদানের সুবিধার্থে গ্রন্থমেলায় মিডিয়া সেন্টার থাকবে তথ্যকেন্দ্রের উত্তর ও পশ্চিম পাশে।মেলায় ওয়াই-ফাই সুবিধা থাকবে।
এবার মেলায় বাংলা একাডেমী চত্বরে তিনটি, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশ ও বের হওয়ার মোট ছয়টি পথ থাকবে। বিশেষ দিনগুলোতে লেখক, সাংবাদিক, প্রকাশক, বাংলা একাডেমির ফেলো এবং রাষ্ট্রীয় সম্মাননাপ্রাপ্ত নাগরিকদের জন্য প্রবেশের বিশেষ ব্যবস্থা করা হবে। গ্রন্থমেলার প্রবেশ ও বের হওয়ার পথে পর্যাপ্ত সংখ্যক আর্চওয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
মেলার সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে বাংলাদেশ পুলিশ, র্যাব, আনসার, বিজিবি ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর নিরাপত্তা কর্মীরা। নিরাপত্তার জন্য মেলার এলাকাজুড়ে তিন শতাধিক ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
এবার বাংলা একাডেমি অংশে ১২৬টি প্রতিষ্ঠানকে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ১৭৯টি ইউনিট। পাশাপাশি বাংলা একাডেমিসহ ৩৩টি প্রকাশনা সংস্থাকে দেয়া হয়েছে ৩৪টি প্যাভিলিয়ন। সব মিলিয়ে এবারের মেলায় মোট ৫৬০টি প্রতিষ্ঠানকে ৮৭৩টি ইউনিট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
লিপ ইয়ার হওয়ায় এবারের মেলা চলবে ২৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে বইমেলা। অন্যদিকে ছুটির দিন মেলা চলবে বেলা ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। এছাড়া ২১ ফেব্রুয়ারি সকাল ৮টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত মেলা প্রাঙ্গণ খোলা থাকবে।
সান নিউজ/সালি