সান নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের পরিচালক নাজমা ইসলাম বলেছেন, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের তথ্য অনুযায়ী শুধুমাত্র অক্টোবর মাসেই ৩৭১ জন নারী ও শিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে ৬২ জন শিশুসহ ৯১ জন ধর্ষণের শিকার হয়েছে। তার মধ্যে ১২ জন শিশু ও ১০ জন নারী দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে। আর দুজন শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। এছাড়া পাঁচ শিশুসহ ১০ জনকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে। তাছাড়া নারী ও শিশু পাচারের ঘটনা ঘটেছে ৬৩টি।
আরও পড়ুন: আপাতত হচ্ছে না পদ্মা ও মেঘনা বিভাগ
রোববার (২৭ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় নারী অধিকার সংগঠন জেন্ডার প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়াজ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক নাজমা আক্তার, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিলস) পরিচালক নাজমা ইয়াসমীন, বাংলাদেশ লেবার ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক আশরাফ উদ্দিন মুকুট, বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট সীমা জহুর ও কর্মজীবী নারীর নির্বাহী পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) সানজীদ সুলতানাসহ আরও অনেকে।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) বরাত দিয়ে নাজমা ইসলাম বলেন, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত এই দশমাসে সারা দেশে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৮৩০ জন নারী। ধর্ষণের পর হত্যার শিকার হয়েছেন ৩৯ জন। আর ধর্ষণের কারণে আত্মহত্যা করেছেন ৭ জন। এছাড়া আরও ১৪১ নারীকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে। বিশ্লেষণ অনুযায়ী, ঢাকা জেলায় সর্বাধিক ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এরপর নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, গাজীপুর ও নোয়াখালী জেলায় ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে সবচেয়ে বেশি।
আরও পড়ুন: সমাবেশে সরকার বাধা দেবে না
তিনি আরও বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতা-নারীর মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় অন্যতম বাধা। এটা কোনো একক সমস্যা নয়। এটা বৈশ্বিক সমস্যা। নারীর প্রতি সহিংসতা রোধ করতে হবে। নারীর প্রতি এ সহিংসতা রোধে নতুন আইন প্রণয়ন ও পুরনো আইনগুলোকে সংস্কার করতে হবে এবং সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। নারীদের প্রতি সমাজের নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নারী নির্যাতনের একটি উল্লেখযোগ্য কারণ।
হয়রানি ও নির্যাতন রোধে জেন্ডার প্লাটফর্ম বেশ কয়েকটি দাবি জানিয়েছে। দাবিগুলো হলো- ১. যৌন হয়রানিমুক্ত কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ‘কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ আইন’ প্রণয়ন করতে হবে।
২. কর্মক্ষেত্রে সহিংসতা ও হয়রানি নিরসন বিষয়ক আইএলও কনভেনশন ১৯০ অনুসমর্থন করতে হবে।
৩. যৌন হয়রানি প্রতিরোধে ২০০৯ সালে দেয়া হাইকোর্টের নির্দেশনার যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। কর্মস্থলে যাতায়াতের পথে এবং সমাজে নারী শ্রমিকের যৌন হয়রানি থেকে সুরক্ষা প্রদান নিশ্চিত করতে হবে।
৪. আদালতের নির্দেশনা যাতে সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হয়, সেজন্য সরকারি উদ্যোগে একটি তদারকি কমিটি গঠন করতে হবে।
৫. যৌন হয়রানি প্রতিরোধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নারী ও শিশু নির্যাতনের বিচার নিষ্পত্তি করা ও বৈষম্যমূলক আইন সংশোধন করতে হবে।
৬. বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা ২০১৫ এর সংশোধনীতে মহিলাদের প্রতি আচরণ সংক্রান্ত নতুন বিধি ৩৬১ ক এবং সেই বিধি(২)’এ বর্ণিত অভিযোগ কমিটি গঠন করতে হবে। সেগুলো হতে হবে হাইকোর্টের দেয়া গাইডলাইনের ভিত্তিতে। ৭. নারীর প্রতি সহিংসতামুক্ত সংস্কৃতিচর্চা করতে হবে।
আরও পড়ুন: বিশ্বে মৃত্যু-সংক্রমণে শীর্ষে জাপান
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের প্রথম ১০ মাসে (জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত) দেশে ৮৩০ জন নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। এছাড়া ধর্ষণের পর খুন হয়েছেন ৩৯ জন নারী। এ সময়ে সবচেয়ে বেশি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ঢাকাতে।
সান নিউজ/এনকে
 
                                     
                                 
                                         
                     
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                        
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                     
                             
                             
                     
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
             
                     
                             
                             
                     
                            